এনআরসি-তে আপত্তি কোথায়? মেঙ্গালুরুর জনসভা থেকে বিরোধী দলগুলির কাছে প্রশ্ন করলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ।
এনআরসি, এনপিআর ও নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের আবহে গত ২২ ডিসেম্বর দিল্লির এক সভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন, ২০১৪ সালে তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর নাগরিকপঞ্জি নিয়ে কোনও আলোচনাই হয়নি। মোদীর মন্তব্য ধরে দেশজুড়ে একাধিকবার এনআরসি-র পক্ষে সওয়াল করা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও জানান, প্রধানমন্ত্রী একেবারে ঠিক কথা বলেছেন। বিরোধীরাই নাগরিকপঞ্জি ইস্যু নিয়ে আমজনতার মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করছে। কিন্তু কয়েক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই মোদী সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর গলাতেই ফের উঠে এল এনআরসি প্রসঙ্গ।
সোমবার ওই সভায় রাজনাথ সিংহ প্রশ্ন তুললেন, কেন এনআরসি-র বিরোধিতা করা হচ্ছে? তাঁর কথায়, ঠিক কতজন সত্যিকারের নাগরিক ও কতজন বিদেশি সীমানার মধ্যে বাস করছেন, তা প্রত্যেক দেশের সরকারেরই জানার অধিকার আছে।
জনসভায় রাজনাথ বলেন, এনআরসি নিয়ে আপনাদের কাছে আমার প্রশ্ন, প্রত্যেক দেশেরই কি জানা উচিত নয়, দেশের মাটিতে কতজন নাগরিক আছেন আর কত বিদেশি ঘাঁটি গেড়ে আছে? জনসভা থেকে উত্তর উঠে আসে, ‘হ্যা’। কর্মী- সমর্থকদের প্রতিক্রিয়া পেয়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, তাহলে এনআরসি হচ্ছে, এতে আপত্তি কোথায়?
তবে রাজনাথ পরিষ্কার জানান, এনআরসির পরিকল্পনা ও প্রক্রিয়া মোদী সরকার শুরু করেনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পূর্বতন কংগ্রেস সরকার নাগরিকপঞ্জি করেছিল। এরপরেই কংগ্রেস সহ বিরোধীদের আক্রমণ শানিয়ে তিনি বলেন, এখন এনআরসি-র জন্যও আমাদের মিথ্যে দোষারোপ করা হচ্ছে।
এনআরসির সঙ্গে কেন্দ্রের নয়া নাগরিকত্ব আইনের কথাও উঠে আসে রাজনাথের ভাষণে। তিনি বলেন, এনআরসি বা সিএএ কোনওটাই দেশের মুসলিম সম্প্রদায়কে আঘাত করার জন্য নয়। কারণ ভারতের ধর্ম হিন্দুত্ব নয়, এ দেশ ধর্মনিরপেক্ষ। তাই পাকিস্তানে ধর্মীয় কারণে আক্রান্ত অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁরা। তবে মুসলিমরাও সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নাগরিকত্ব পেতে পারেন।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে যে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলি বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করছে, তার কড়া নিন্দা করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন ‘সাংবিধানিক ভুল’ করছে তারা। বিরোধীরা নিজেদের ‘রাষ্ট্র ধর্ম’ ভুলে যাচ্ছে।
Comments are closed.