জানেন, কে লিখলেন অযোধ্যা মামলার ঐতিহাসিক ১০৪৫ পাতার রায়?

শনিবারই ঐতিহাসিক অযোধ্যা রাম জন্মভূমি মামলার রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ। সর্বসম্মতভাবে বেঞ্চ জানিয়েছে, বিতর্কিত ওই জমিতেই রাম মন্দির তৈরি হবে। ওই জমির মালিকানা রাম জন্মভূমি ন্যাসকে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি, কেন্দ্রকে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, একটি ট্রাস্ট গঠনের মাধ্যমে মন্দির তৈরির পরিকল্পনা তৈরি করার। অযোধ্যাতে মসজিদ করার জন্য মুসলিম পক্ষ সুন্নি ওয়াকফ বোর্ডকেও পাঁচ একর জমি দেওয়ার নির্দেশ সরকারকে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
কিন্তু শনিবার ১০৪৫ পাতার যে ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্ট দিয়েছে তাতে সেই রায়কে লিপিবদ্ধ করেছেন, সেই বিচারপতির নামই দেওয়া নেই। বিষয়টি মোটেই সাধারণ নয় বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। আইনজীবীদের মতে, এটা প্রথাবিরুদ্ধ। কোনও মামলায় কোন বিচারপতি রায় লিখছেন, তাঁর নাম রায়ের কপিতে নথিভুক্ত করাই দস্তুর বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু এবার তার অন্যথা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ নেতৃত্বাধীন এই পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের অন্যান্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি এস এ বোবদে, বিচারপতি ডি ওয়াইচন্দ্রচূড়, বিচারপতি অশোক ভূষণ এবং বিচারপতি আব্দুল নাজির। রায়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলির প্রধান বিচারপতি সকলের সামনে পড়ে শোনান আদালতে।
অযোধ্যা জমি মামলার রায়ের কপিতে আরও একটি বিষয় নজর কাড়ার মতো। তা হল রায়ের ১১৬ টি পাতা খরচ করা হয়েছে অযোধ্যার ওই বিতর্কিত জমি কেন হিন্দু বিশ্বাস মতে রামের জন্মভূমি তা বোঝাতে। কারও নাম উল্লেখ করা নেই রায়ের এই বিশেষ অংশটিতেও।
এছাড়াও রায়ের কপির ৯২৯ পাতায় শেষ প্যারাগ্রাফে এ বিষয়ে কিছু ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। সেখানে এক জায়গায় পুরনো কিছু পুথি এবং লেখার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ১৫২৮ খ্রিষ্টাব্দের অনেক আগের প্রচুর ধর্মীয় তথ্য আছে, যা থেকে হিন্দুদের এটা বিশ্বাস যে ওই স্থানই রাম জন্মভূমি, অযোধ্যার ওই অংশেই রামের জন্মস্থান।
রায়ের একেবারে শেষ অংশে বলা হয়েছে, এই ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে এই রায় শেষ করা যায় যে মসজিদ নির্মাণের বহু আগে থেকেই হিন্দুদের বিশ্বাস ছিল যে ওই স্থান রামের জন্মভূমি এবং বিভিন্ন তথ্যও এই স্বীকৃতি দেয় যে সেখানে বাবরি মসজিদ তৈরি হয়েছিল সেটিই রাম জন্মভূমি।
অনেকে এদিনের রায়ের কপি দেখে অবাক হচ্ছেন। তাঁদের মতে, যে রায়ের অন্যতম ভিত্তি বিশ্বাস সেখানে সর্বসম্মত একটি রায় এবং সেখানে সব বিচারপতিরই গোটা বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা ও যুক্তিও এক! রায় কোন বিচারপতি লিপিবদ্ধ করেছেন তা না লেখার মতোই এমনটাও কার্যত নজিরবিহীন বলেই বলে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

Comments are closed.