কুড়ি বছরে গাড়ি শিল্পের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ২০১৯ সালে, এ বছরও মন্দা কাটবে কি না, সংশয়

গত দু’দশকের মধ্যে ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি মন্দার কবলে পড়েছে অটোমোবাইল সেক্টর। একেবারে তলানিতে ঠেকেছে গাড়ি ব্যবসা। প্রায় প্রতিটি সংস্থার গাড়ি বিক্রি কমেছে। চাহিদার অভাবে পর্যায়ক্রমে উৎপাদন বন্ধ রেখেছে মারুতি, টাটা, মাহিন্দ্রার মতো প্রথম সারির গাড়ি সংস্থা। একের পর এক সংস্থার গাড়ির শো-রুম বন্ধ হয়েছে, সেই সঙ্গে গাড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত প্রচুর মানুষ কর্মহীন হয়েছেন। ২০১৯ সালে গাড়ি শিল্পে এই ছবি গত দু’দশকের মধ্যে প্রথম।
অটোমোবাইল ইন্ডাস্ট্রির তথ্য বলছে, যাত্রীবাহী গাড়ি, ভ্যান, এসইউভি গাড়ির বিক্রি অস্বাভাবিকভাবে পড়ে গিয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মারুতি, হন্ডাই, মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা, টাটা মোটরস, হন্ডা এবং টয়োটার মতো ব্র্যান্ড।
অটোমোবাইল সেক্টরে এই মন্দার ছবি শুরু হয়েছে ২০১৮ সালের মধ্যভাগ থেকে। কিন্তু ২০১৯ সাল যত এগিয়েছে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। তারপর রাজনৈতিক অস্থিরতা, লোকসভা ভোটের সময় থেকে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির শ্লথতার প্রভাবে অটোমোবাইল সেক্টরের অবস্থা আরও করুণ হয়। এছাড়া এনবিএফসি ইস্যু, বেকারত্ব ইত্যাদির কারণে গাড়ি বাজারে চাহিদা তলানিতে ঠেকে।
ইংরেজি দৈনিক দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মারুতি সুজুকির মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস ডিরেক্টর শশাঙ্ক শ্রীবাস্তবের মন্তব্য, ২০১৯ সাল আমাদের কাছে ছিল এক কঠিন সময়। আশা করছি, ২০২০ সালে আর এই অবস্থার মুখোমুখি হতে হবে না। যদিও সংস্থার চেয়ারম্যান বি এস ভার্গব জানিয়েছিলেন, এই মন্দার পরিবেশে তাঁদের ঠিক কী করণীয় তার কোনও নকশা এখনও তৈরি করতে পারা যায়নি। এদিকে হন্ডা কারস-এর মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস ডিরেক্টর রাজেশ গোয়েল জানান, এখনও কঠিন সময়ই চলছে। গাড়ি বাজার একেবারেই নিম্নমুখী। এই চাপ কাটিয়ে উঠতে আরও কয়েকটি ত্রৈমাসিক বা চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যদিও বাজার তৈরির সবরকম চেষ্টা তাঁরা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান হন্ডা কারসের ওই শীর্ষ কর্তা। আবার, গাড়ি বাজার বিশেষজ্ঞের একাংশের মত, নেতিবাচক বাজার পরিস্থিতি তো ছিলই, তার উপর ওলা, উবরের মতো অ্যাপ কার গাড়ি বাজারের পরিস্থিতিকে আরও প্রতিকূল করে দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অটোমোবাইল সংস্থাগুলি নতুন বছরে আশা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেও, অটোমোবাইল সেক্টরের ভবিষ্যৎ নিয়ে সবাই দ্বিধায়।

Comments are closed.