উহানে সেরে ওঠা ৯০% সংক্রমিতের ফুসফুসে মারাত্মক ক্ষতি, ৫% মানুষের মধ্যে ফের কোভিড উপসর্গ! চাঞ্চল্যকর তথ্য চিনা গবেষণায়

চিনের উহানে প্রথম দেখা মিলেছিল করোনাভাইরাস সংক্রমণ। তারপর তা গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। সংক্রমণকে হারিয়ে ইদানীং স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে উহান। এবার একটি গবেষণায় উঠে এল চোখ কপালে তোলার মতো তথ্য। জানা যাচ্ছে, সেরে ওঠা ৯০ শতাংশ রোগীর ফুসফুসে মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ৫ শতাংশ মানুষ, চাঞ্চল্যকর তথ্য চিনা গবেষণায়।

কিছুদিন আগেই JAMA Cardiology-তে প্রকাশিত জার্মান গবেষকদের একটি সমীক্ষা রিপোর্ট জানিয়েছিল করোনাভাইরাস মৃদু উপসর্গযুক্ত রোগীর হৃদযন্ত্রকেও দুর্বল করছে। গবেষকরা দাবি করেছিলেন করোনার কোপে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হয় ফুসফুসের। এবার প্রায় একই তথ্য উঠে এল চিনেও।

করোনা বিধ্বস্ত চিনের উহান শহরের ঝোংনান হাসপাতাল থেকে সেরে ওঠা ৯০ শতাংশ কোভিড রোগীকে নতুন করে পরীক্ষা করে জানা গিয়েছে তাঁদের ফুসফুসের মারাত্মক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। এঁদের ৫ শতাংশ রোগীর ফের করোনা পজিটিভ হওয়ায় তাঁদের কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে।

চিনের উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝোংনান হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের ডিরেক্টর পেং ঝিয়োংয়ের নেতৃত্বে এপ্রিলের শুরু থেকে করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হওয়া ১০০ জন মানুষের উপর সমীক্ষা চালানো হয়। প্রথম পর্যায়ের সমীক্ষা শেষ হয়েছে জুলাই মাসে। যাঁদের উপর পরীক্ষা হয়েছিল, তাঁদের গড় বয়স ৫৯ বছর।

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৯০ শতাংশ রোগীর ফুসফুসের অবস্থা খারাপ। গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদন বলছে, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর লাং ভেন্টিলেশন এবং গ্যাস এক্সচেঞ্জের কার্যকারিতা অন্যান্য সুস্থ ব্যক্তির চেয়ে কম হয়।

উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষক দলটি করোনা থেকে সেরে ওঠাদের জন্য ৬ মিনিট দ্রুত হাঁটার একটা পরীক্ষা করেছিল। তাতে দেখা গিয়েছে করোনা থেকে সুস্থ হওয়া ব্যক্তিরা ওই সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪০০ মিটার হাঁটতে পারছেন। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে সমবয়সী সুস্থ ব্যক্তিরা ৫০০ মিটারের বেশি পথ অতিক্রম করে ফেলেছেন।

পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে করোনা থেকে সেরে ওঠার তিন মাস কেটে গেলেও কয়েকজনকে এখনও অক্সিজেন মেশিনের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে।

সমীক্ষায় করোনা থেকে সুস্থ হওয়া ৬৫ বছর বয়সীদের স্বাস্থ্যের উপরও নজরদারি চালানো হয়। সেখানে ১০ শতাংশ মানুষের শরীরে করোনার অ্যান্টিবডির সন্ধান মেলেনি। এঁদের ৫ শতাংশের শরীরে আবার করোনার লক্ষণ ফুটে ওঠায় তাঁদের তড়িঘড়ি কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হয়েছে। সমীক্ষায় আরও জানানো হয়েছে যে, করোনা থেকে সেরে ওঠার পর ৫০ শতাংশ মানুষ আবার স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারছেন, বাকিরা এখনও সুস্থ নন। অর্থাৎ, করোনার ধাক্কায় ফুসফুসের যে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে তারই প্রমাণ এই সমীক্ষা, জানাচ্ছেন পেং ঝিয়োং।

Comments are closed.