মহুয়া মৈত্র মানহানি মামলায় জি নিউজ ও দিল্লি পুলিশের জবাব তলব দিল্লি হাইকোর্টের

তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের আবেদনের প্রেক্ষিতে দিল্লি পুলিশ ও জি নিউজের জবাব তলব করল দিল্লি হাইকোর্ট। নিম্ন আদালতে দায়ের হওয়া মানহানির মামলায় সমন এবং তৃণমূল সাংসদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়াকে চ্যালেঞ্জ করে দিল্লি হাইকোর্টে গিয়েছেন মহুয়া মৈত্র। সেই মামলাতেই বুধবার দিল্লি পুলিশ ও জি নিউজের কাছে আদালতের জবাব তলব।
গত বছর ২৫ সেপ্টেম্বর এবং এ বছরের ১০ জানুয়ারি নিম্ন আদালত দুটি রায় দেয়। যেখানে মহুয়া মৈত্রকে অভিযুক্ত হিসেবে সমন করা হয় এবং তাঁর বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়। দিল্লি হাইকোর্টে মহুয়া মৈত্রের আইনজীবী বিকাশ পাহওয়া নিম্ন আদালতের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছেন।
বুধবার ভার্চুয়াল শুনানিতে জি নিউজের আইনজীবী বিজয় আগরওয়াল জানান, অতিমারির কারণে নিম্ন আদালত তথ্য প্রমাণ নথিভুক্তির কাজ শেষ করতে পারেনি। তাই নির্ধারিত দিনে শুনানি না হওয়াই স্বাভাবিক।
এ বছর ১০ জানুয়ারি নিম্ন আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে বুধবার দিল্লি হাইকোর্টে তৃণমূল সাংসদের আইনজীবীরা দাবি করেন, ট্রায়াল কোর্ট মহুয়া মৈত্রকে সওয়াল করার কোনও সময় দেয়নি।
তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র আগেও দাবি করেছিলেন, জি নিউজ ও তার সম্পাদক সুধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে তিনি মানহানির মামলা দায়ের করেছিলেন। সেই মামলাকে লঘু করতেই সংশ্লিষ্ট সংবাদমাধ্যমের এডিটর পাল্টা মানহানির মামলা দায়ের করেন বলে মনে করছে মহুয়া শিবির
ঘটনার সূত্রপাত মহুয়ার প্রথম লোকসভা বক্তৃতার পর। ফ্যাসিবাদের লক্ষণ এবং সমকালীন ভারতীয় রাজনীতির তুখোড় বিশ্লেষণের মধ্যে দিয়ে মোদী সরকারকে নিশানা করেছিলেন মহুয়া মৈত্র। তাঁর সেই বক্তৃতায় সাড়া পড়ে যায় সব মহলে। সেদিনই জি নিউজ চ্যানেলে তার সম্পাদক সুধীর চৌধুরী একটি অনুষ্ঠানে দাবি করেন, মহুয়ার যে বক্তৃতা নিয়ে এত তোলপাড় তা আসলে বিদেশি রচনা থেকে হুবহু টোকা। সেই অনুষ্ঠানে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে লেখা মার্টিন লংম্যানের একটি লেখার পাণ্ডুলিপিও তুলে দেখান সুধীর চৌধুরী এবং দাবি করেন মহুয়া এই লেখা থেকেই নিজের বক্তৃতা টুকেছেন। যা সংসদের গরিমাকে খর্ব করেছে বলেও দাবি করেন সুধীর চৌধুরী। যদিও মার্টিন লংম্যান নিজে দাবি করেন, মহুয়া তাঁর লেখা চুরি করেননি। বরং যে হলোকাস্ট মেমোরিয়ালের পোস্টার থেকে তিনি উদ্বুদ্ধ হয়ে ওই লেখা লিখেছেন, মহুয়াও সেই পোস্টারের কথা সংসদের ভাষণে উল্লেখ করেছেন। ফলে লেখা চুরির অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা।
এরপরই জি নিউজ চ্যানেলে সম্প্রচারিত এই অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে মানহানির মামলা করেন মহুয়া মৈত্র। মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধেও নিম্ন আদালতে মানহানির পাল্টা করে জি নিউজ। সেই মামলাতেই মহুয়া মৈত্রকে আত্মপক্ষ সমর্থনের বিন্দুমাত্র সুযোগ না দিয়ে চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরুর অভিযোগ নিয়ে মহুয়া মৈত্রের আইনজীবী দিল্লি হাইকোর্টে যান। এবার জি নিউজ ও দিল্লি পুলিশের জবাব তলব করল হাইকোর্ট।

Comments are closed.