বয়কট চায়নার পাল্টা কৌশল, Xiaomi শো-রুম ঢাকা পড়ছে মেড ইন ইন্ডিয়া ব্যানারে, ৫০ সেকেন্ডে বিক্রি চিনা ফোনের নয়া মডেল
দেশজুড়ে চলা বয়কট চায়না বিক্ষোভের মধ্যেই ব্যবসা চালিয়ে যেতে এবার নয়া কৌশল চিনের মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থার। ভারতের বিভিন্ন জায়গায় Xiaomi সংস্থা তাদের শো রুমের সাইনবোর্ড ঢেকে দিচ্ছে মেড ইন ইন্ডিয়া ব্যানারে।
গালওয়ান সংঘর্ষের পর দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বয়কট চায়না বিক্ষোভ। চিনে তৈরি পণ্য রাস্তায় ফেলে আগুন লাগানো হচ্ছে। ফ্ল্যাটবাড়ির ব্যালকনি থেকে নীচে ফেলা হচ্ছে চিনা কোম্পানির এলইডি টিভি। চিনা সংস্থার মোবাইল বিক্রেতার দোকানে ভাঙচুর করে আগুন লাগানো হচ্ছে। চিনা সংস্থার শো রুমে কালি লেপা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে পাল্টা কৌশল নিল চিনের মোবাইল প্রস্তুতকারী সংস্থা Xiaomi। তাদের মোবাইল সংস্থার দোকান, শো-রুমে নামের সাইনবোর্ডের উপর টাঙিয়ে দেওয়া হচ্ছে মেড ইন ইন্ডিয়া ব্যানার। শোরুমের কর্মীদের বলা হয়েছে আপাতত সংস্থার দেওয়া ইউনিফর্ম না পরতে।
সূত্রের খবর, বিক্ষোভ, ভাঙচুরের আশঙ্কায় Xiaomi ইতিমধ্যেই দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, পুণে, আগ্রা, পাটনায় সমস্ত সাইনবোর্ড মেড ইন ইন্ডিয়া ব্যানার দিয়ে ঢেকে ফেলেছে। এরপর যেখানে যেখানে বিক্ষোভের সম্ভাবনা আছে, সেখানেও একই পদ্ধতি নেওয়া হবে।
অল ইন্ডিয়া মোবাইল রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন বা AIMRA কয়েকদিন আগেই চিনের সমস্ত মোবাইল সংস্থাকে চিঠি লিখে জানিয়েছে, গালওয়ান পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে দোকানে হামলা হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে চিনা ব্র্যান্ডের সমস্ত নাম ঢেকে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।
AIMRA এই চিঠিতে Xiaomi, ওপ্পো, ভিভো, রিয়ালমি, ওয়ানপ্লাস, লেনোভো-মোটোরোলা এবং হুয়েই সংস্থার কাছে আবেদন জানিয়েছে, আপাতত যেন ভারতে তাদের সংস্থার সমস্ত লোগো এবং সাইনবোর্ড ঢেকে দেওয়া হয় কিংবা সাময়িক ভিত্তিতে তা সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
মোবাইল শিল্পের সঙ্গে যুক্তরা বলছেন, Xiaomi দ্রুতগতিতে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে শুরু করলেও, বাকি চাইনিজ স্মার্টফোন কোম্পানি এখনও সেই পদক্ষেপ নেয়নি। পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে তারা। যদিও স্মার্টফোন বিক্রেতারা বলছেন, চারদিকে এত বিক্ষোভ-হামলার আবহের মধ্যে চাইনিজ স্মার্টফোন বিক্রিতে তার সামান্য প্রভাবও পড়েনি। মাস খানেক আগে যেমন পরিস্থিতি ছিল, চিন-ভারত লাদাখ এপিসোডের পরও তার বিন্দুমাত্র বদল হয়নি। বিভিন্ন জায়গায় নয়া ফোনের অপেক্ষায় লাইনও আগের মতোই। এই প্রসঙ্গেই Xiaomi এর ভারতের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মনুকুমার জৈন বুধবার ট্যুইট করেছেন, তাদের একটি মডেল অনলাইনে লঞ্চ করার ৫০ সেকেন্ডের মধ্যে সম্পূর্ণ বিক্রি হয়ে গিয়েছে।
কাউন্টার পয়েন্টের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতের স্মার্টফোন বাজারের ৮১% একাই দখল করে রেখেছে চিনের Xiaomi। এই অবস্থায় ভারতে স্বতঃস্ফূর্ত চিনা সামগ্রী বয়কটের পরিস্থিতি তৈরি হলে, স্বভাবতই তাদের সমস্যা সবচেয়ে বেশি। এই পরিস্থিতিতে একদিকে চলছে দেদারে চাইনিজ ফোন বিক্রি, অন্যদিকেই চলছে দোকান ভাঙচুরের মতো অপ্রীতিকর ঘটনাও। নয়া কৌশলে বিক্ষোভ চাপা দিতে পারবে কি Xiaomi, এখন সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।
Comments are closed.