কথায় আছে জলে কুমির, ডাঙ্গায় বাঘ নিয়ে ঘর করতে হয় সুন্দরবনের বাসিন্দাদের। এই প্রবাদবাক্যই যেন আরেকবার সত্যি হল গত বৃহস্পতিবার।
যশ ও ভরা কোটালে প্লাবিত গ্রামের পর গ্রাম। চাষের জমি থেকে পুকুরের মাছ সবই নদীর নোনা জলে ভেসে গিয়েছে।
ঝড়ের পরের দিন সকালে নিজের পুকুরে গিয়েছিলেন অজয়। তবে পুকুরের জলে যা দেখলেন তাতে কেঁপে উঠলেন! পুকুরের জলে ভেসে বেড়াচ্ছে একটি কুমির! বাঁধ ভেঙে নদীর জল ঢুকেছে পুকুরে, সঙ্গে নিয়ে এসেছে একটি প্রমান সাইজের কুমির।
ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগণার পাথরপ্রতিমার গোবিন্দপুর গ্রামের। যশের তোড়ে ভেসে নদীর জলের সঙ্গে পুকুরে ঢুকে পড়েছে কুমিরটি। পুকুরে কুমির পাওয়ার খবর জানাজানি হতেই এলাকায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। গ্রামবাসীরা কুমির দেখতে ভিড় করেন পুকুর পাড়ে। খবর যায় বন দফতরে। ততক্ষনে পুকুরটিকে জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। অবশেষে একদিন পরে ২৮ তারিখ বন বিভাগের কর্মীরা এসে কুমিরটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যান।
যশের তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগণার একাধিক অঞ্চল। সুন্দরবনের বিস্তৃর্ণ অঞ্চল কার্যত জলের তলায়। সুন্দরবনের কোর এরিয়ায় যেগুলোতে মূলত জাল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। বিধংসী ঝড়ের দাপটে সেই বাঁশ আর নেট দিয়ে তৈরি ‘বাঁধা’ ভেঙে যাওয়ায় জঙ্গলের জীব জন্তুরা বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে বলে খবর।
ঝড়ের হাত থেকে বাঁচতে হরিণ, বুনো শুয়োর প্রভৃতি প্রাণী ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। দুর্যোগের শেষে বেশ কয়েক জায়গায় গ্রামবাসীদের বাড়িতে হরিণ উদ্ধার হয়েছে। লোকালয়ে বাঘ ঢুকে পড়ার খবরও ছড়ায়। পাশাপাশি বন বিভাগের কর্মীদের আশঙ্কা ছিল নদীর জলের তোড়ে বাঁধ টপকে গ্রামে কুমিরও ঢুকে পড়তে পারে। গোবিন্দপুর গ্রামের ঘটনা বন দফতরের কর্মীদের সেই আশঙ্কাই সত্যি করল।
Comments are closed.