করোনা পরিস্থিতি নিয়ে মমতা, সোনিয়া সহ ১২টি বিরোধীদলের একযোগে চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে
১২টি দলের একত্রে লেখা ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন মমতা ব্যানার্জি, সোনিয়া গান্ধী, এইচ ডি দেবে গৌরা, সরোদ পাওয়ার, স্টালিন, উদ্ধব ঠাকরে, হেমন্ত সোরেন, ফারুখ আব্দুল্লাহ, অখিলেশ যাদব, তিজস্বী যাদব, ডি. রাজা এবং সীতারাম ইয়েচুরি
বেড়ে চলা করোনা সংক্রমণের জের, বুধবার দেশের সবকটি বিরোধী দলের শীর্ষ নেতৃত্ব একত্রে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লেখেন। বিরোধীরা ওই চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছেন, দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে রক্ষা করতে কেন্দ্রীয় সরকার যেন অবিলম্বে সমস্ত রকম প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়।
বিরোধীরা চিঠিতে মোদী সরকারকে তীব্র কটাক্ষ করে জানিয়েছেন, যদিও কেন্দ্রীয় সরকারের অভ্যাস নেই বিরোধীদের চিঠির উত্তর দেওয়া বা দেশের মানুষের স্বার্থে তাঁদের কোনরকম পরামর্শ নেওয়া।
১২টি দলের একত্রে লেখা ওই চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন মমতা ব্যানার্জি, সোনিয়া গান্ধী, এইচ ডি দেবে গৌরা, সরোদ পাওয়ার, স্টালিন, উদ্ধব ঠাকরে, হেমন্ত সোরেন, ফারুখ আব্দুল্লাহ, অখিলেশ যাদব, তিজস্বী যাদব, ডি. রাজা এবং সীতারাম ইয়েচুরি।
বিরোধীদের পরামর্শ, ভ্যাকসিনের যোগান সুনিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার যেন কয়েকটি কোম্পানির উপর নির্ভর না করে বৃহত্তর ক্ষেত্রে থেকে ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে, পাশাপাশি দেশব্যাপী বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
কেন্দ্রের সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের টাকায় ভ্যাকসিন এবং অক্সিজেন ক্রয়ের দাবিও জানিয়েছেন বিরোধীরা। সেই সঙ্গে ওই চিঠিতে তাঁরা বলেন, সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের জন্য তৈরী তহবিলের টাকা থেকে যেন করোনার জেরে কর্মহীনদের সাহায্য করে কেন্দ্র।
পাশাপাশি কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনের সংশোধনের আর্জিও জানানো হয়েছে চিঠিতে। করোনা পরিস্থিতিতে কৃষকরা এমনিতেই দুর্ভোগের শিকার, এই পরিস্থিতিতে নতুন কৃষি আইন তাঁদের আরও সমস্যার মুখে ঠেলে দিচ্ছে, মত বিরোধীদের।
প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, এর আগে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং মোদীকে চিঠি লিখলেও সেই চিঠির কোনও রকম প্রাপ্তিস্বীকার বা উত্তর প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে আসেনি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রীকে লেখা একাধিক চিঠির উত্তর তিনি পাননি।
চিঠির উত্তরের দাবি জানিয়ে বিরোধীরা লিখেছেন, তাঁদের এই চিঠি নিয়েও যদি কেন্দ্রীয় সরকার মৌন থাকে, তাহলে বুঝতে হবে দেশের এই সঙ্কটের মুহূর্তেও সরকার বিরোধীদের কোনরকম পরমার্শ নিতে তারা ইচ্ছুক নয়।
করোনার জেরে দেশবাসী চরম দুর্ভোগের শিকার। এই ভয়বহ পরিস্থিতিতে আমরা পূর্বেই সরকারকে একাধিকবার জানিয়েছি যাতে বিরোধীদের নিয়ে অথবা সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এই সংকট মোকাবিলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সরকার এধরনের কোন পদক্ষেপই নেয়নি যার জেরে আজকে এই পরিস্থিতি, আক্রমণ বিরোধীদের।
ওই চিঠিতে বিরোধীরা আরেকবার কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানান, পিএম কেয়ার্স ফান্ডের টাকায় যাতে আরও বেশি পরিমান ভ্যাকসিন এবং অক্সিজেন কেনে সরকার। পাশাপাশি পিএম কেয়ার্স ফান্ডের টাকায় করোনার জেরে কর্মহীন মানুষদের প্রতিমাসে কমপক্ষে ৬ হাজার টাকা করে দেওয়ার দাবিও রেখেছে বিরোধীরা।
সবমিলিয়ে এই সঙ্কটের মুহূর্তে বিরোধীদের একগুচ্ছ দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে এই চিঠি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক কারবারিরা।
Comments are closed.