বছর শেষ হতে চললো। ২০২০ সাল যেন একটি বিয়োগান্তক বছর। ভারতে করোনা ও কোমর্বিডিটিতে প্রাণ গিয়েছে ১ লক্ষ ২৯ হাজার মানুষের। যার মধ্যে রয়েছেন বহু বিখ্যাত মানুষও।
পি কে ব্যানার্জি:
প্রদীপকুমার ব্যানার্জিকে বলা হয় ভারতের ফুটবলের সর্বকালের অন্যতম সেরা। যেমন ফুটবলার হিসেবে দাপিয়েছেন ময়দান, তেমনই কোচ হিসেবে বিদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে কুড়িয়েছেন সম্মান। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর গত ২০ মার্চ ৮৩ বছর বয়সে পি কে ব্যানার্জির মৃত্যু হয়।
ইরফান খান:
বলিউডের অন্যতম সেরা অভিনেতা ইরফান খান কেবল ভারতেই নয়, তাঁর গভীর অভিনয়ের ছাপ ও প্রভাব রেখে গিয়েছেন সুদূর হলিউডেও। ‘পান সিং তোমর’ থেকে ‘লাঞ্চবক্স’ ‘লাইফ অফ পাই’-র মতো একটার পর একটা অসাধারণ কাজ দিয়ে দর্শককে বুঁদ করে রাখা এবং সম্ভাব্য বহু ভালো কাজ অসমাপ্ত রেখে অকালেই চলে যান ইরফান খান। ২৯ এপ্রিল চিরনিদ্রায় ঢলে পড়েন অভিনেতা।
ঋষি কাপুর:
মাত্র একদিনের ব্যবধান, বলিউডের আবার ইন্দ্রপতন। ক্যান্সার আক্রান্ত বলিউডের ‘রোমান্টিক হিরো’ ঋষি কাপুরের মৃত্যু হয় গত ৩০ এপ্রিল। ‘মেরা নাম জোকার’ সিনেমার শিশু শিল্পী থেকে ‘১০২ নট আউট’ সিনেমার অমিতা বচ্চনের বৃদ্ধ পুত্রের চরিত্রে অভিনয় করা ঋষি কাপুরের অভিনয় জীবনের দ্বিতীয় ইনিংসই ছিল বেশি নজরকাড়া।
চুনী গোস্বামী:
ভারতীয় ফুটবলের আকাশে ফের এক নক্ষত্র পতন। কিংবদন্তী ফুটবলার ও কোচ পিকের মৃত্যুর এক মাস পরই মারা যান আরও এক কিংবদন্তী ফুটবলার চুনী গোস্বামী। দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন ৮২ বছরের ভারতীয় ফুটবল নক্ষত্র। গত ৩০ এপ্রিল মৃত্য হয় তাঁর।
বাসু চ্যাটার্জি :
‘সারা আকাশ’, ‘পিয়া কে ঘর’, ‘খাট্টা মিঠা’, ‘চক্রব্যুহ’, ‘বাতো বাতো মে’, ‘জিনা ইহা’,’আপনে পেয়ারে’র মতো সিনেমার মাধ্যমে বলিউডের বাণিজ্যিক ছবির জমানায় অন্য ধারার ছবি দিয়ে দর্শককে বুঁদ করে দিয়েছিলেন বসু চ্যাটার্জি। দূরদর্শনে প্রচারিত জনপ্রিয় টিভি সিরিজ ‘ব্যোমকেশ বক্সী’ এবং ‘রজনি’ -ও তাঁরই পরিচালনা। সেই বাঙালি চিত্রপরিচালক বসু চ্যাটার্জি গত ৪ জুন গত হন। বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।
পণ্ডিত জশরাজ:
চলতি বছরে প্রয়াণ ঘটে মার্গসঙ্গীতের প্রবীণ শিল্পী পণ্ডিত জসরাজের। আমেরিকার নিউ জার্সির বাসভবনে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ১৭ অগাস্ট প্রয়াত হন মেবাতী ঘরানার শিল্পী। বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।
প্রণব মুখার্জি:
তিন সপ্তাহের লড়াই শেষে গত অগাস্টে মৃত্যু হয় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জির। একদিকে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ এবং অস্ত্রোপচার, তার উপর করোনা সংক্রমণ, জোড়া ধাক্কা সামলাতে পারেননি প্রণববাবু। দিল্লির আর্মি হসপিটাল রিসার্চ অ্যান্ড রেফারালে ৮৫ বছর বয়সে প্রয়াত হন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি।
এস পি বালসুব্রহ্মণ্যম:
দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালে লড়াই করছিলেন। কিন্তু করোনা শেষ পর্যন্ত প্রাণ কেড়ে নেয় বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী এস পি বালাসুব্রহ্মণ্যমের। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ৭৪ বছর বয়সে মৃত্যু হয় এই স্বনামধন্য গায়কের।
করোনা আবহে রবিবারই আমরা হারিয়েছি কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চ্যাটার্জিকে। সবমিলিয়ে ভারতের ইতিহাসে ২০২০ সাল হয়ে রইল এক বিয়োগান্তক বছর হিসেবে।
Comments are closed.