বন্ধ হয়ে গেল জি মিডিয়ার সংবাদপত্র ডিএনএ, চালু থাকবে শুধু অনলাইনে

বন্ধ হয়ে গেল দেশের অন্যতম বিশ্লেষণধর্মী সংবাদপত্র ডিএনএ-র প্রিন্ট এডিশন (ছাপানো সংবাদপত্র)। এবার থেকে ডিএনএ মিলবে কেবলমাত্র অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। গত বুধবারই মুম্বইয়ে বেরোয় শেষ প্রিন্ট এডিশন। সেখানে একটি বিজ্ঞপ্তির আকারে দেওয়া হয়েছিল এই সংবাদ। বুধবারই ডিএনএ-র সাধারণ কর্মীদেরও এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। কর্মীদের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে বলে সূত্রের খবর।
২০০৫ সালে জি মিডিয়া শুরু করে দ্য ডেইলি নিউজ অ্যান্ড অ্যানালিসিস, সংক্ষেপে ডিএনএ নামে একটি খবরের কাগজ। মুম্বই, আহমেদাবাদ, পুণে, জয়পুর, বেঙ্গালুরু, ইন্দোর এবং দিল্লি থেকে একই সঙ্গে প্রকাশিত হোত ডিএনএ। সূত্রের খবর, ২০১৪ সাল থেকেই বন্ধ পুণে এবং বেঙ্গালুরু সংস্করণ। তারপর একে একে বন্ধ হয়েছে জয়পুর, ইন্দোরের সংস্করণ। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে বন্ধ করে দেওয়া হয় দিল্লি সংস্করণও। ফলে একমাত্র মুম্বই এবং আহমেদাবাদ থেকেই প্রকাশিত হচ্ছিল ডিএনএ। গত বুধবার তাও বন্ধ হয়ে গেল। এখন থেকে শুধুমাত্র অনলাইনেই পড়তে পাওয়া যাবে ডিএনএ। বুধবার, শেষ যে হার্ডকপি খবরের কাগজ প্রকাশিত হয়, তাতে গ্রাহকদের কাছ থেকে নেওয়া সাবস্ক্রিপশনের টাকা ফেরতের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছে।
জি মিডিয়া গোষ্ঠীর আচমকা এমন সিদ্ধান্তে হতবাক ডিএনএ-র কর্মীরা। সূত্রের খবর, আনুষ্ঠানিকভাবে সংস্থার সিদ্ধান্ত জানাতে বুধবার সকাল ১১ টায় টাউন হলে ডেকে পাঠানো হয় ডিএনএ-র প্রিন্ট এডিশনের (সংবাদপত্র) সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের। সাংবাদিক যতীন গান্ধী এ বিষয়ে ট্যুইট করে অভিযোগ করেছেন, সেই বৈঠকে চাকরি হারানোর সংবাদ পেয়েছেন অন্তত ১০০ জন সংবাদকর্মী। তাঁদের মাত্র দু’মাসের বেসিক বেতন দিয়ে দায়িত্ব সেরেছে ডিএনএ ম্যানেজমেন্ট, ট্যুইটে দাবি যতীন গান্ধীর। তবে এই খবরের সত্যতা যাচাই করেনি thebengalstory.com।
বুধবার ডিএনএ-র শেষ ছাপানো সংস্করণে যে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে, তাতে লেখা রয়েছে, বর্তমান তরুণ প্রজন্ম, যাঁরা ডিএনএ-র মূল গ্রাহক, তাঁদের কথা মাথায় রেখে আমরা পুরোপুরি অনলাইন সংস্করণের পথে যাচ্ছি। আমাদের মূল উদ্দেশ্য ক্রম পরিবর্তনশীল গ্রাহক মননের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগ বজায় করা। তাই ছাপানো সংস্করণ বন্ধ করে আমরা অনলাইনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা হবে বহুলাংশে ভিডিও নির্ভর। যাতে যখন খুশি আপনি ডিএনএ-র নাগাল পেতে পারেন।
সূত্রের খবর, ডিএনএ-র মূল সংস্থা জি মিডিয়ার অবস্থা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন উঠছে। গত ৭ ই অক্টোবর বিজনেস ট্যুডেতে প্রকাশিত প্রতিবেদন জানাচ্ছে, শেয়ার বাজারে বিরাট পতন হয়েছে সুভাষ চন্দ্রের জি এন্টারটেইনমেন্ট এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড (জিইইএল) এর শেয়ারের। সংস্থার ঋণের পরিমাণও পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বলেও প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে।
ডিএনএ-র ছাপানো সংস্করণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কার্যত কর্মহীন হলেন সংস্থার ছাপাখানার কর্মীরা। তাঁদের যথাযথ ক্ষতিপূরণের দাবি উঠেছে। তবে আগামী দিনের দিকে তাকিয়ে ডিএনএ-র পুরোপুরি অনলাইনে চলে যাওয়াকে বিচ্ছিন্ন কোনও ঘটনা হিসেবে দেখতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, যুগের দাবি মেনেই গোটা বিশ্বে একছত্র আধিপত্যের পথে যাচ্ছে মোবাইল টেকনোলজি। খবরের কাগজও তার বাইরে নয়।

Comments are closed.