এতদিন সোনা কিনতে শোনা যেত রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে। এবার সোনা বিক্রির পথেও গেল ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সাপ্তাহিক তথ্য অনুযায়ী, জুলাইয়ের শুরু থেকে তারা ৫.১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সোনা কিনেছে এবং বিক্রি করেছে ১.১৫ বিলিয়ন ডলার মূল্যের সোনা।
আরবিআইয়ের উদ্বৃত্ত লভ্যাংশের একটি অংশ সরকারি কোষাগারে স্থানান্তর করার পথ প্রশস্ত করতে সম্প্রতি বিমল জালান কমিটি তৈরি হয়। সেই কমিটি রিপোর্ট দিয়েছিল, বিভিন্ন ঝুঁকি পরিমাপের পর উদ্বৃত্ত অর্থের একটি অংশ সরকারি কোষাগারে দেওয়া যেতে পারে। এরপরই নজিরবিহীনভাবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বাড়তি ভাঁড়ার থেকে ১.৭৬ লক্ষ কোটি টাকা যায় সরকারি কোষাগারে। যা নিয়ে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। শোনা যায় এনিয়ে মতবিরোধের জেরেই গভর্নর পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন উর্জিত প্যাটেল। পরবর্তীতে মুখ খুলেছিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং সরকারের ব্যর্থতা নিয়ে। উর্জিতের জায়গায় আসেন শক্তিকান্ত দাস। ভাঁড়ারের বাড়তি অংশ সেই শক্তিকান্ত দাসের উপস্থিতিতেই হস্তান্তর হয়ে যায় কেন্দ্রীয় কোষাগারে।
এবার জালান কমিটির সুপারিশ মেনে বাড়তি সোনা বিক্রির দামের একটি অংশ সরকারের বাজেট ঘাটতি মেটাতে কাজে লাগানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। যা নিয়েও আশঙ্কার কথা জানাচ্ছেন অর্থনীতিবিদরা।
বিমল জালান কমিটির রিপোর্ট গ্রহণের পর থেকেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে সোনার ক্রয়-বিক্রয় বহুগুণ বাড়িয়ে দেওয়া হয় বলে সূত্রের খবর। মূলত বিদেশি মুদ্রার সঙ্গে ভারতীয় মুদ্রার সামঞ্জস্য বজায় রাখার দিকে নজর রেখে সোনা সঞ্চয় করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তবে অতীতে এমন উদাহরণও আছে, যখন বিদেশি কোনও রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে প্রয়োজনে সোনা ঋণ হিসেবে দিয়েছে আরবিআই। কিন্তু গত ৩ দশকে এত বড় আকারে সোনা বিক্রির উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে হস্তান্তরের কথা শোনা যায়নি বলে জানাচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা।
সূত্রের খবর, গত ১১ ই অক্টোবরের বাজার দর অনুযায়ী ২৬.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের সোনা বর্তমানে আরবিআইয়ে গচ্ছিত রয়েছে। শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এবছর অগাস্ট মাসের শেষে রিজার্ভ ব্যাঙ্কে মোট ১৯.৮৭ মিলিয়ন ট্রয় আউন্স সোনা মজুত রয়েছে। প্রসঙ্গত, অগাস্ট মাসেই আরবিআই জালান কমিটির রিপোর্ট গ্রহণ করে। সূত্রের খবর, তার পর থেকেই সোনার ক্রয়-বিক্রয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়ে দেয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।
Comments are closed.