সংস্থা সম্পর্কে কর্মীদের আস্থা রক্ষার বিষয়ে রীতিমতো লড়তে হচ্ছে গুগলকে, ফাঁস হওয়া ভিডিওতে মন্তব্য গুগল সিইও সুন্দর পিচাইয়ের। পাশাপাশি, আমেরিকার এক প্রাক্তন সরকারি আধিকারিক যিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মুসলিমদের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নীতির সমর্থনে সোচ্চার হয়েছিলেন, তাঁকে নিয়োগের ব্যাপারেও সমালোচনার সুর শোনা গিয়েছে গুগলের আর এক শীর্ষ আধিকারিকের গলায়।
গত শুক্রবার মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্ট’-এ এই ফাঁস হওয়া ভিডিও নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার গুগলের টিজিআইএফ শীর্ষক সাপ্তাহিক বৈঠকের এই ভিডিয়ো ক্লিপে, সংস্থা ও কর্মীদের সম্পর্কের বিষয়ে সুন্দর পিচাইয়ের উদ্বেগ প্রকাশ পেয়েছে। তাঁকে বলতে শোনা যায়, গুগলের একাধিক পদক্ষেপের জেরে সংস্থার প্রতি কর্মীদের আস্থা ভঙ্গ হয়েছে। ক্যালিফোর্নিয়ার মাউন্টেন ভিউয়ের গুগলের সদর দফতরে ওই বৈঠকে পিচাই বলেন, ‘আমরা প্রকৃত অর্থেই কিছু বিষয় নিয়ে লড়াই করছি- বিশেষত স্বচ্ছ্বতার বিষয়ে।’ ফাঁস হওয়া ভিডিয়োয় গুগল কর্মীদের উদ্দেশ্যে সিইওকে বলতে শোনা যায়, সংস্থার প্রতি আপনাদের আস্থা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠছে, আমি মনে করি সেই আস্থাই গুগলের মূল ভিত্তি।
গত বছর নভেম্বরে কর্মস্থলে যৌন হেনস্থার অভিযোগে গুগলের প্রায় ২০ হাজার স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মী রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এছাড়া, কয়েক মাস ধরে একাধিক বিষয়ে সংস্থার সঙ্গে কর্মীদের মতভেদের জেরে ছাঁটাইয়েরও খবর উঠে এসেছে। সপ্তাহ খানেক আগেই গুগলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে কর্মীদের অধিকার ও প্রতিবাদ সংগঠিত করার প্রেক্ষিতে তাঁদের উপর নজরদারি শুরু হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে গুগল সিইও পিচাইয়ের এই স্বীকারোক্তি তাৎপর্যপূর্ণ। ফাঁস হওয়া ভিডিয়োতে পিচাই বলেন, কর্মস্থলকে কীভাবে আরও ভালো করা যায়, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনার অবকাশ রয়েছে। অফিসের মধ্যে সুস্থ পরিবেশ রক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অন্যদিকে, গুগল ভাইস প্রেসিডেন্ট ফর গর্ভমেন্ট অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড পাবলিক পলিসি করণ ভাটিয়া এক প্রাক্তন মার্কিন আধিকারিকের সংস্থায় যোগদানের প্রেক্ষিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নীতির প্রশংসা করা প্রাক্তন ডিএইচএস অফিসার মাইলস টেলরকে গুগলে যুক্ত করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করতে শোনা যায় করণ ভাটিয়াকে।
এদিকে প্রশ্ন উঠছে, ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে কি সংস্থারই কোনও কর্মী? গুগলের প্রাথমিক অনুমান তেমনই। আর এই ঘটনা থেকেই স্পষ্ট, সংস্থা-কর্মী সম্পর্কে চিড় ধরেছে এবং তা মেরামতির চেষ্টায় সুন্দর পিচাইরা।
Comments are closed.