মিডিয়ায় ছাঁটাই অমানবিক ও বেআইনি, সু্প্রিম কোর্টে মামলা সাংবাদিকদের, অস্তিত্বের সঙ্কটে ব্যবসা, পাল্টা হলফনামা মালিকদের সংগঠনের
করোনাভাইরাস এবং লকডাউনের দোহাই দিয়ে মিডিয়া হাউসগুলোয় বেনজির ছাঁটাই এবং বেতন কমানোর মতো পদক্ষেপকে সরাসরি অমানবিক এবং বেআইনি দাবি করে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। গত ১৬ এপ্রিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স অফ জার্নালিস্টস, দিল্লি ইউনয়ন অফ জার্নালিস্টস এবং ব্রিহনমুম্বই ইউনিয়ন অফ জার্নালিস্টস, নামে তিনটি মূলত সাংবাদিকদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করে। সেই মামলাতেই ১৪ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার, ইন্ডিয়ান নিউজ পেপার সোসাইটি (INS) এবং নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (NBA) এর জবাব তলব করে সুপ্রিম কোর্ট।
গত ১১ মে নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশন জবাব দাখিল করে। দু’দিন পর জবাব দেয় ইন্ডিয়ান নিউজ পেপার সোসাইটি। কেন্দ্রের জবাব এখনও আসেনি।
ব্যবসা কমেছে তাই খরচ না কমালে সংস্থা উঠে যাবে। নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বা NBA হলফনামায় মূলত এই দাবি করে। পাশাপাশি এই মামলা আদৌ জনস্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বলে মনে করে তারা। হলফনামায় লেখা হয়েছে, এটা পুরোপুরি সংস্থার সঙ্গে তার কর্মীদের ব্যাপার। যা একান্তই ব্যক্তিস্বার্থের মামলা। একইসঙ্গে তারা এও দাবি করে যে, পিটিশনে যে ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস অ্যাক্টের কথা বলা হয়েছে, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তার আওতায় পড়ে না। জানানো হয়েছে, কেন্দ্র কেবল অ্যাডভাইজরি জারি করেছিল, তা আদেশমূলক নয়।
একইভাবে আইএনএস জানায়, বর্তমানে সংবাদমাধ্যমগুলো অস্তিত্বের সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। করোনা আবহে চাকরি নিয়ে কেন্দ্রের অ্যাডভাইজরি ছিল ‘অস্পষ্ট, বিধিবহির্ভূত, অবৈধ, অসাংবিধানিক এবং সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। তারা দাবি করে, পিটিশনকারীদের আদালতে এই আবেদনের ফলে আরও ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে নিউজ পেপার আউটলেটগুলিকে, যেগুলি ইতিমধ্যেই বিজ্ঞাপনের অভাবে ভয়াবহ আর্থিক দুর্দশায় ভুগছে।
লকডাউন চলাকালীন কোনও সংস্থা কর্মী ছাঁটাই করতে পারবে না। কমানো যাবে না কর্মীর বেতনও, সম্প্রতি জানিয়েছিল কেন্দ্র। কিন্তু কেন্দ্রের এই অ্যাডভাইজারি নিয়েই এবার সুপ্রিম কোর্টে প্রশ্ন তুলল সংবাদমাধ্যম মালিকদের সংগঠন। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র হলফনামায় কী অবস্থান নেয়, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নিউজ ব্রডকাস্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের মতো ইন্ডিয়ান নিউজ পেপার সোসাইটিরও দাবি, শুধু কর্মীরা নন, মালিকপক্ষও এই করোনার আবহে বড় সমস্যার মধ্যে পড়েছেন। বলা হয়েছে, বিজ্ঞাপনের উপর নিউজ পেপারের রাজস্ব নির্ভরশীল। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি বিজ্ঞাপন কমে গিয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ। অন্যান্য বিজ্ঞাপন কমেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে আগের মতো কর্মীদের বেতন দিতে গেলে কোম্পানি বন্ধ করে দিতে হয়, প্রতিক্রিয়া ইন্ডিয়ান নিউজ পেপার সোসাইটির।
Comments are closed.