করোনা ও লকডাউনের জেরে চারদিকে অন্ধকার পরিস্থিতির মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক অবস্থান নিল সাহারা গোষ্ঠী।
করোনা পরিস্থিতিতে তাদের কোনও কর্মীর চাকরি যায়নি এবং কোনও কর্মীর এক টাকা বেতনও কাটা হয়নি, জানাল সাহারা গোষ্ঠী। বরং অতিমারি পরিস্থিতির মধ্যেও অন্যান্য বছরের মতোই কর্মীদের পদোন্নতি ও বেতন বৃদ্ধির প্রক্রিয়া আটকাচ্ছে না।
সোমবার সাহারা গোষ্ঠীর তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, উত্তরপ্রদেশের যে পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন, তাঁদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারে পরিকল্পনা তৈরি হচ্ছে। সাহারা জানিয়েছে, নিজেদের অঞ্চলে যোগ্যতা অনুযায়ী ওই পরিযায়ী শ্রমিকদের কাজ দেওয়া হবে।
তবে করোনাভাইরাস এবং দীর্ঘ লকডাউনের জেরে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড এবং অর্থনীতিতে তাদেরও বিশাল আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে বিবৃতিতে স্বীকার করেছে সুব্রত রায়ের সংস্থা। জানানো হয়েছে, এই নেতিবাচক পরিস্থিতির মধ্যে সংস্থার কোনও কর্মীকে ছাঁটাই না করার মতো দৃঢ় সিদ্ধান্ত নেওয়া খুব কঠিন হলেও তা করে দেখিয়েছে সাহারা। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, যাঁরা সাহারা গ্রুপে কাজ করছেন, তাঁরা কাজ চালিয়ে যান, সংস্থা তাঁদের পাশেই আছে।
সংস্থার ৪ লক্ষ ৫ হাজার ৮৭৪ জন ফিল্ড ওয়ার্কার শীঘ্রই প্রোমোশন পাবেন বলেও ঘোষণা করেছে সাহারা। এর সঙ্গে ৪ হাজার ৮০৮ জন অফিসার পদের কর্মীরও বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গেই পদোন্নতি হচ্ছে।
বর্তমানে সাহারা গ্রুপে কর্মী সংখ্যা প্রায় ১৪ লক্ষ। কোম্পানির বিভিন্ন শাখার কাজে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন তাঁরা। করোনা পরিস্থিতিতে এঁদের প্রত্যেকের চাকরি বাঁচানোই সংস্থার অন্যতম লক্ষ্য বলে জানানো হয়েছে বিবৃতিতে। শুধু নিজেদেরই নয়, ছোট ও বড় সব সংস্থাকেই কর্মীদের পাশে দাঁড়ানোর আবেদন জানিয়েছে সুব্রত রায়ের সংস্থা। তাদের আহ্বান, প্রত্যেকের রুজিরোজগার যাতে বাঁচে সেদিকে খেয়াল রাখুক সংস্থাগুলি।
বিবৃতিতে বলা হয়, এই কঠিন সময়ে আমরা প্রত্যেকটি সংস্থা যদি নিজেদের কর্মীদের পাশে দাঁড়াই, সেটা সংস্থার সঙ্গে সমাজেরও স্বার্থ রক্ষা করবে।
এপ্রিল মাসের শুরুতে সাহারা কর্ণধার সুব্রত রায়ও ভরসা দিয়েছিলেন, এই অতিমারির সময়ে প্রত্যেক বিনিয়োগকারী, কর্মী এবং গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষাই হবে তাঁদের প্রধান কর্তব্য।
করোনা পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সংস্থায় যখন নাগাড়ে কর্মী ছাঁটাই, বেতন কেটে ছুটিতে পাঠানোর মত পদক্ষেপও করা হয়েছে, সেদিক থেকে সাহারা গোষ্ঠীর এই মনোভাব ও সিদ্ধান্তের প্রশংসা হচ্ছে বিভিন্ন মহলে।
Comments are closed.