করোনাভাইরাস রুখতে দেশে দীর্ঘ লকডাউনের জেরে দমবন্ধ অবস্থা তৈরি হয়েছে অর্থনীতিতে। সেই থমকে যাওয়া অর্থনীতিকে ঘুরে দাঁড় করানোর দাওয়াই হিসেবে শুরু হয়েছে ছাঁটাই কিংবা বেতনে কোপ। সংবাদমাধ্যমও যার ব্যতিক্রম নয়।
এই প্রেক্ষাপটে ঐতিহ্যশালী সংবাদমাধ্যম হিসেবে পরিচিত দ্য হিন্দু এবং আনন্দবাজার পত্রিকা থেকে ফের সাংবাদিক ছাঁটাই হল। এই দুই সংস্থাতেই লকডাউন পর্বে কয়েক দফায় ছাঁটাই এবং বেতন কমানোর প্রক্রিয়া চলেছে। দ্য হিন্দু অনেক সাংবাদিককে ছাঁটাই যেমন করছে পাশাপাশি কর্মীদের বেতনও কমিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দ্য হিন্দুর মুম্বই ব্যুরো থেকে এক ধাক্কায় ২০ জন সাংবাদিক এবং অসাংবাদিক কর্মীকে ছেঁটে দিল তারা। ছাঁটাই হওয়া কর্মীদের, যার মধ্যে রয়েছেন বেশ কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক, কয়েকদিনের মধ্যেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিতে বলা হয়েছে।
নিউজ পোর্টাল Newslaundry তে প্রকাশিত প্রতিবেদন বলছে, চেন্নাইয়ে দ্য হিন্দুর সদর দফতর থেকে ছাঁটাইয়ের তালিকা তৈরি করে তা মুম্বই পাঠানো হয়। তালিকায় রয়েছেন দ্য হিন্দুর মুম্বই ব্যুরোর বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ রিপোর্টার, ফটোগ্রাফার, ডিজাইনার এবং একজন ডেস্ক এডিটর সহ অন্তত ২০ জন। এঁদের প্রত্যেককেই ফোন করে চাকরি যাওয়ার কথা জানানো হয়। এ বিষয়ে এখনও কোনও অফিসিয়াল নথি তাঁরা পাননি।
দ্য হিন্দুর মুম্বই ব্যুরোতে এখন থাকলেন ৪ জন রিপোর্টার এবং ৪ জন ডেস্ক এডিটর। সেই সঙ্গে চাকরি বজায় রয়েছে রেসিডেন্ট এডিটরেরও। তবে এক ধাক্কায় এরকম বিপুল ছাঁটাইয়ের প্রেক্ষিতে মুম্বইয়ের দ্য হিন্দু ব্যুরোতে সংশয় তৈরি হয়েছে। ২০১৫ সালে মুম্বই ব্যুরো প্রতিষ্ঠা করে দ্য হিন্দু। পাশাপাশি দ্য হিন্দুর কর্ণাটক ব্যুরো থেকেও ৯ জনের চাকরি গিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
বাংলা ভাষায় দেশে সর্বাধিক বিক্রিত সংবাদপত্র আনন্দবাজার পত্রিকা থেকেও কর্মীদের চাকরি যাওয়া অব্যাহত। এবার ফের সেই সম্পাদকীয় বিভাগেই চাকরি হারালেন ৪ কর্মী। এর আগে আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দেন অনির্বাণ চ্যাটার্জি। এই খবর দেওয়ার সময় TheBengalStory জানিয়েছিল, কর্তৃপক্ষের ছাঁটাইয়ের বিরোধিতা করেও সিদ্ধান্ত না বদলাতে পারায়, পদত্যাগ করেছিলেন অনির্বাণ চ্যাটার্জি। তারপর ক’দিনের মধ্যেই আনন্দবাজার পত্রিকায় ছাঁটাই হন ২৭ জন সংবাদকর্মী। এবার কাজ হারালেন আরও ৪ জন। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ৪ জুন পর্যন্ত আনন্দবাজার পত্রিকায় চাকরি গিয়েছে কমপক্ষে ৩৫০ জনের।
কিছুদিন আগে সংস্থার কর্মীদের একটি অংশের বেতন কমানো হয়েছিল। হয়নি বাৎসরিক পদোন্নতি বা বেতন বৃদ্ধিও। এই পরিস্থিতিতে ফের ৪ কর্মী কাজ হারালেন। আনন্দবাজার গোষ্ঠীরই ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফেও ছাঁটাই হয়েছে। কমেছে বেতনও। পাশাপাশি তুলে দেওয়া হয়েছে একাধিক সংস্করণ।
Comments are closed.