করোনা কালে মহিলাদের রোজগার বৃদ্ধিতে জোর মমতার, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলোকে সহজ শর্তে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ
করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের অর্থনীতিকে তুলে ধরতে মহিলাদের রোজগার বৃদ্ধির উপর বিশেষ জোর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার থেকে সহজ শর্তে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবে পুর-শহরাঞ্চলের ৬০ হাজার মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী। বিভিন্ন উৎপাদনমুখী কাজের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি গোষ্ঠীই আর্থিক সহায়তা পাওয়ার যোগ্য বলে জানিয়েছে নবান্ন।
রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই ঋণ প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট আরবান লাইভলিহুড মিশনের (ডব্লুবিএসইউএলএম) অধীনে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির জন্য আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বৃদ্ধি করেছে রাজ্য সরকার।
সরকার সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে, মহিলারা আয়ের একটা বড় অংশই খরচ করেন শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে। পরের পর্যায়ে তাঁদের নজর থাকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দিকে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা উৎপাদনমুখী কাজ করলে তাঁদের আয় বৃদ্ধি পাবে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে ক্রয় ক্ষমতাও। এই প্রেক্ষিতেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে সহজ শর্তে আরও বেশি ঋণ দিতে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলা সরকার।
শুধু পুর-শহরাঞ্চলই নয়, গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতির জন্য মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছে রাজ্য। পঞ্চায়েত এলাকায় ‘আনন্দধারা’ প্রকল্পের মাধ্যমে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির পাশে দাঁড়াচ্ছে রাজ্য। সেই প্রকল্পেও আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধির উপর নজর দেওয়া হয়েছে। গোষ্ঠীগুলির উৎপাদিত পণ্য বিপণনে সরাসরি সাহায্য করে মমতা ব্যানার্জির সরকার।
রাজ্যে মোট ১২৫ টি পুরসভা ও ছ’টি পুর কর্পোরেশন আছে। পুর-শহরাঞ্চলে ‘ডব্লুবিএসইউএলএম’ প্রকল্পে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে আর্থিক সহায়তা করে রাজ্য সরকার। তথ্য বলছে, সব মিলিয়ে পুরসভা এলাকায় ৬০ হাজারের মতো স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। যারা হাঁস-মুরগি, ছাগল পালন, হস্তশিল্প ও ক্ষুদ্রশিল্পে উৎপাদনমুখী কাজ করে। কেভিড পরিস্থিতিতে মাস্ক, স্যানিটাইজার ও পিপিই কিটও বানাচ্ছে কোনও কোনও স্বনির্ভর গোষ্ঠী। বহু ক্ষেত্রে গোষ্ঠীগুলির উৎপাদিত পণ্য ক্রয় করে রাজ্য। পাশাপাশি খোলা বাজারেও বিক্রি হয়। এবার ‘ডব্লুবিএসইউএলএম’ প্রকল্পে গতি আনতে উঠেপড়ে লেগেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। জানা গিয়েছে, এই ৬০ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠীকেই সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। বার্ষিক সুদের হার মাত্র ৭ শতাংশ। প্রথম কিস্তিতে দেড় লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। সেই টাকা পরিশোধ করার পর দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মিলবে। এভাবে ধাপে ধাপে এক একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবে।
Comments are closed.