খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় দোষ স্বীকার করা চার জেএমবি জঙ্গিকে সাত বছর সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দিল আদালত।
মঙ্গলবার কলকাতার নগর দায়রা এনআইএ বিশেষ আদালতের বিচারক প্রসেনজিৎ বিশ্বাস এই রায়ের সঙ্গে সঙ্গে দোষীদের পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও পাঁচ মাস হাজতবাসের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালতের রায়, সমস্ত সাজা একসঙ্গে চলবে।
২০১৪ সালে বর্ধমানের খাগড়াগড়ে একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়। দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন এই বিস্ফোরণের ঘটনায় স্বভাবতই তীব্র শোরগোল হয়েছিল সারা রাজ্যেই। সেই বিস্ফোরণে সাকিল আহমেদ এবং শোভন মণ্ডল নামে দুজনের মৃত্যু হয়। বর্ধমান জেলা পুলিশ এই মামলার তদন্তে নামলে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। এরপর ক্রমে এই মামলার তদন্তভার যায় সিআইডি থেকে এনআইএয়ের হাতে। মামলায় উঠে আসে জেএমবি জঙ্গি গোষ্ঠীর জড়িত থাকার খবর। গ্রেফতার হয় ৩১ জন।
জেল হেফাজতে থাকা যে চার জঙ্গি নিজেদের দোষ কবুল করেছে তাদের নাম মহম্মদ ইউনিস, মতিউর রহমান, জিয়াউল হক ও জাহিরুল শেখ। মঙ্গলবার কড়া নিরাপত্তায় জেল থেকে জামাত উল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) ওই চার জঙ্গিকে কলকাতার বিচার ভবনে আনা হয়। আদালত সূত্রের খবর, রুদ্ধদ্বার কক্ষে বিচারক দোষ কবুল করা ওই চার জঙ্গির মুখে তাদের বক্তব্য জানতে চান। তারা সবাই এই ঘটনার দায় স্বীকার করে। পাশাপাশি সাজা যাতে কম হয়, তার জন্যেও আদালতে আবেদন করে তারা।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ওই চার জঙ্গি আদালতে তাদের আইনজীবী মারফত পিটিশন দাখিল করে দোষ কবুলের কথা জানিয়েছিল। এরপর এনআইএ ও অভিযুক্তদের তরফের আইনজীবীরা আদালতে এ নিয়ে সওয়াল করেন। তারপর মঙ্গলবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য হয়। ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সির (এনআইএ) বিশেষ সরকারি আইনজীবী শ্যামল ঘোষ জানান, ২০১৯ সালে এই মামলায় দুই মহিলাসহ ২৬ জন আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়। বাকি আট অভিযুক্তের বিচার প্রক্রিয়া বাকি ছিল। তার মধ্যে একজন ‘ফেরার’ রয়েছে। তার নাম সালাউদ্দিন সালেহান। উল্লেখ্য, এই সালাউদ্দিন সালেহানই জেএমবি’র আন্তর্জাতিক প্রধান। বাংলাদেশের আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সালেহান ঢাকার হোলি আর্টিজান কাফের বিস্ফোরণের ঘটনার মূল অভিযুক্ত।
তাছাড়া খাগড়াগড় বিস্ফোরণ মামলায় বাকি সাত অভিযুক্তের মধ্যে এদিন চারজনের সাজা ঘোষণা হল। অর্থাৎ, আর বাকি রইল তিন অভিযুক্তের বিচার প্রক্রিয়া। তা শীঘ্রই শুরু হবে বলে আদালত সূত্রের খবর।
Comments are closed.