হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে সবচেয়ে পবিত্র হল গঙ্গাজল। প্রচলিত মতানুসারে, গঙ্গা জল দিয়ে সব রকমের অশুচি ও অপবিত্রতাকে দূর করা সম্ভব। সৃষ্টিকাল ধরে এই মত চলে এসেছে। তবে আদৌ কি গঙ্গাজল সত্যি প্রবিত্র? সত্যিই কি তার মধ্যে ক্ষমতা রয়েছে সমস্ত অপবিত্রতাকে ধুয়ে পরিষ্কার করে দেওয়ার? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
ভূগোলের পাতা উল্টালে জানা যাবে গঙ্গার সৃষ্টি হয়েছিল গঙ্গোত্রী গোমুখ গুহা থেকে। এই জল একসময় ছিল অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল জীবানুনাশক উপাদানে সমৃদ্ধ। তাই কোন নোংরা জিনিসের ওপর গঙ্গাজল দিলে সমস্ত জীবানু নাশ করতে পারতো এই জল। আর এই কারনেই হিন্দু বাড়ির গুলিতে সন্ধ্যেবেলায় দুয়ারে দুয়ারে গঙ্গাজল ছেটানোর রীতি চালু হয়। তাই প্রতিটি হিন্দু পরিবারে র ঠাকুর দালানে
রাখা হয় গঙ্গাজল। পূজার্চনার জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় সমগ্র হলো গঙ্গাজল। বেশিরভাগ বাড়িতেই গঙ্গাজল প্লাস্টিকের বোতলে রাখা হয়। কিন্তু অনেকেই জানেন না, প্লাস্টিকের বোতলে গঙ্গাজল রাখা একেবারেই উচিত নয়। এতে গঙ্গা জলের জীবানুনাশক ক্ষমতা হ্রাস পায়।
সাধারণত নন-বায়োডিগ্রেডেবল পলিমার যেমন- পলিপ্রপলিন, পলিকার্বোনেট, অর্গানিক পেন্ট, পিভিসির মতো উপাদান দিয়ে প্লাস্টিকের বোতল তৈরি হয়। যার ফলে বছর খানেকের মধ্যে প্লাস্টিক বোতলের প্লাস্টিক প্যালেট, ফিলার্স, ফোটো স্টেবিলাইজার, অক্সিডাইজিং কেমিক্যালস গুলো গলতে শুরু করে এবং তা গঙ্গাজলের সঙ্গে মিশে গিয়ে সেটাকে বিষাক্ত বানিয়ে দেয় ।
পূজার্চনার অনেকেই গঙ্গাজল মুখে দিয়ে থাকেন। যার ফলে এই জল মানবদেহে প্রবেশ করে দেহের মেটাবলিজমের ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়। এছাড়াও ত্বকের সমস্যা বা স্মৃতিভ্রষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পাশাপাশি প্লাস্টিকের উপাদান গুলো আসলে কার্সিনোজেনিক অর্থাৎ এর থেকে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা থাকে। তাই বাড়িতে গঙ্গাজল রাখতেই হলে তামা, মাটি, কাঁচ অথবা স্টিলের পাত্রে রাখা উচিত।
Comments are closed.