শতাব্দী: আসুন সবাই মমতাদির নেতৃত্বে তৃতীয়বার সরকার গড়ি
কোন জাদুতে হারা ম্যাচ জিতিয়ে ফিরলেন অভিষেক?
স্লগ ওভারে খেলা ঘুরিয়ে দিলেন অভিষেক ব্যানার্জি। যে শতাব্দী রায় দল ছাড়ার ব্যাপারে সন্ধে পর্যন্ত কার্যত বদ্ধপরিকর ছিলেন, সেই তিনিই রাতে সাংবাদিকদের হাসিমুখে জানালেন, সব ঠিক আছে। সন্তুষ্টি ঝরে পরা মুখে আরও জানান, অভিষেককে সমস্যার কথা জানিয়েছি। এই লড়াই আমাদের সবার। মমতাদির সঙ্গেই আছি। কাল দিল্লি যাচ্ছি না।
কিন্তু খেলা স্লগ ওভার পর্যন্ত গড়াল কেন? এই প্রশ্নের উত্তর মিলবে পিছন ফিরে তাকালে।
বৃহস্পতিবার শতাব্দী রায়ের একটি ফ্যান পেজ থেকে পোস্ট করা হয়, তিনি দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ। আর শতাব্দী নিজমুখে জানান, তিনি দিল্লি যাচ্ছেন। কোনও সিদ্ধান্ত নিলে তা শনিবার দুপুর ২ টোয় ফেসবুক লাইভে এসে জানাবেন। অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা হতে পারে।
ইদানীং তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার যে ঢল নেমেছে, সেই প্রেক্ষিতে বীরভূমের সাংসদের এই পোস্টে প্রমাদ গোনে তৃণমূল। টালিগঞ্জের একদা জনপ্রিয় অভিনেতার মান ভঞ্জনে নামেন কুণাল ঘোষ। ফোনে কথা বলেন সুদীপ ব্যানার্জি, সৌগত রায়ের মত ভেটারেনরা। কিন্তু চিঁড়ে ভেজেনি। শেষ পর্যন্ত আসরে নামেন যুব তৃণমূল সভাপতি। কুণাল ঘোষ শতাব্দী রায়কে নিয়ে ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক ব্যানার্জির অফিসে পৌঁছন। মুখোমুখি কথা বলেন অভিষেক-শতাব্দী। নিজের ক্ষোভ-অসন্তোষের কথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে জানান। তা নিয়ে কথা হয় দু’জনের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত মান ভাঙ্গে শতাব্দীর। হাসি মুখে অভিষেকের অফিস থেকে বেরিয়ে তৃণমূলের রক্তচাপ কমান সন্তুষ্ট শতাব্দী। বলেন মমতার সঙ্গেই আছি। শনিবার দিল্লি যাচ্ছি না। ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়ে রাজ্যের শাসক দলের।
কিন্তু শতাব্দী যে বলেছিলেন সিদ্ধান্তের কথা লাইভে জানাবেন, তার কী হবে? শনিবার সকাল ১১ টা নাগাদ সেই ফ্যান পেজে আবার একটি পোস্ট দেন শতাব্দী। তাতে লেখেন তৃণমূলের নেতা বা কর্মীদের আমার মতোই ক্ষোভ বা বক্তব্য থাকতে পারে। আমরা সেগুলো দলের মধ্যেই মেটাব। এখন সবাই হাতে হাত মিলিয়ে লড়াইয়ের সময়। তা থেকে পিছিয়ে যাবো না।
এখানেই শেষ নয়, শতাব্দী তাঁর ট্যুইটে ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ইদানীং ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিযোগে বিদ্ধ অভিষেক ব্যানার্জির। অভিষেককে ধন্যবাদ দিয়ে শতাব্দীর ফ্যান পেজে লেখা হয়, তরুণ নেতাটি এখন যথেষ্ট দায়িত্বশীল ও পরিণত। শেষে লিখেছেন নতুন প্রজন্মের এমন নেতার নেতৃত্ব দলকে শক্তিশালী করবে। তৃণমূল আবার জিততে চলেছে।
বীরভূমের তৃণমূল সাংসদ পোস্টে জানিয়েছেন, দলের সৈনিক হিসেবে আমার কর্তব্য পালন করে যাবো। সেই সঙ্গেই আরও বেশি করে নিবিড়ভাবে থাকব আমার বীরভূমের মানুষের পাশে।
কিন্তু কোন জাদুতে হারা ম্যাচ জিতিয়ে ফিরলেন অভিষেক? সূত্রের খবর, বৈঠকে শতাব্দীর সমস্ত অভিযোগ মন দিয়ে শোনেন অভিষেক ব্যানার্জি। তারপর চলে শতাব্দীর ক্ষতে প্রলেপ লাগানোর কাজ। তাতেই স্লগ ওভারে খেলা ঘোরাতে সক্ষম হলেন যুব তৃণমূল সভাপতি।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে আপাতত অ্যাডভান্টেজ তৃণমূল। তবে কতদিন? উত্তর আগামীর গর্ভে।
Comments are closed.