বাঁকুড়ার দাঁ পরিবারের দুশো বছরের বন্দুকের দোকান থেকে শতরঞ্জ কি খিলাড়ির জন্য তলোয়ার নিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়
বন্দুকের শখ আছে? পুজোর ক্যাপ পিস্তল, যেগুলো প্রায় সবাই ছোটবেলায় একবার না একবার কিনেছেনই, না সেই বন্দুকের কথা হচ্ছে না।
বন্দুক, মানে আসল বন্দুক। যা থেকে নিমেষে ছোটা গুলি মানুষের প্রাণ নিয়ে নিতে পারে, অথবা শিকার করার বন্দুক, বলছি তার কথা।
আচ্ছে বন্দুকের ইতিহাস কী বলে? ইতিহাস বলছে, মোটামুটিভাবে দশম শতক নাগাদ চিনে বন্দুক আবিষ্কার হয়, আর সেটা নাকি ছিল বাঁশের তৈরি। হ্যাঁ, বাঁশের। কিন্তু সেটা আদৌ বন্দুক ছিল কিনা, তা নিয়ে অবশ্য প্রশ্ন আছে। আর এই বন্দুক তৈরির টেকনোলজি নাকি দ্বাদশ শতকে চিন থেকেই সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল। প্রথমদিকে অবশ্য কামানের প্রবণতাই বেশি ছিল। অনেকেই মনে করেন, বন্দুকের মতো বারুদও সর্বপ্রথম চিনেই আবিষ্কার হয়। সম্ভবত আরবদের হাত ঘুরে এই প্রযুক্তি ইউরোপে পৌঁছেছিল। রর্বাট ব্যারেট তাঁর বিখ্যাত বই ‘The Theory and Practice of Modern Wars (1598)’ এ দেখিয়েছেন, কীভাবে সেই সময় সমগ্র ইউরোপে বন্দুকের ব্যবহার দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে থাকল। সেই সঙ্গে আধুনিক যুদ্ধে যে বন্দুক গুরুত্বপূর্ণ স্থান করে নিচ্ছিল, সেটাও তিনি দেখানোর চেষ্টা করেছেন। আসল কথা হল, প্রয়োজনের তাগিদে বারুদের ব্যবহার বেড়েছিল, অনেকে আবার এই ব্যাপারটিকে ইউরোপের প্রেক্ষাপটে ‘Military Revolution’ বলেও আখ্যা দিয়েছেন।
আর ভারতবর্ষ? মোটামুটিভাবে আমাদের দেশে ত্রয়োদশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে চর্তুদশ শতকের শুরুতে বারুদের ব্যবহার শুরু হয়। চিন থেকে মোঙ্গলদের হাত হয়ে এই সব কামান, বারুদ ভারতবর্ষে আসতে শুরু করল, তখন অবশ্য বন্দুক ততটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। ‘তারিখ-ই-ফিরিস্থা’ নামক গ্রন্থে উল্লেখ করা হয়েছে, ১২৫৮ সাল নাগাদ ভারতে প্রথমবারের মতো বারুদ ব্যবহার করা হয়।
১৩৬৬ সাল নাগাদ বিজয়নগর সাম্রাজ্যে ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রকে বলা হোত ‘তোপ-ও-তুফক’। তাছাড়াও সেই সময় বাহমনী সাম্রাজ্যেও এই সব আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার যথেষ্ট ছিল। কিন্তু ভারতে আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার দেখা যায় মোঘল আমল থেকে। বলা হয়ে থাকে, মোঘল সম্রাট বাবর নাকি প্রথম পানিপথের যুদ্ধে প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেছিলেন। ওটাই শুরু, তারপর থেকে ভারতে অহরহ বন্দুক, কামান ব্যবহৃত হতে থাকল।
এরপর ইংরেজরা ভারতে এল। পলাশীর প্রান্তরে লর্ড ক্লাইভের, নবাব সিরাজের বাহিনীকে হারানোর পশ্চাতে ছিল ইংরেজদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার। অনেকে মনে করেন, ইংরেজদের তুলনায় সিরাজের বাহিনী শক্তিশালী হওয়া সত্ত্বেও নবাবের পরাজয়ের নেপথ্যে ছিল ক্লাইভের কামান ব্যবহার। বক্সারের যুদ্ধের (১৭৬৪ সাল) আগে মীরকাশিম নিজের রাজধানী মুর্শিদাবাদ থেকে মুঙ্গেরে স্থানান্তরিত করলেন। আর এই মুঙ্গেরেই তিনি গড়ে তুললেন একের পর এক অস্ত্র কারখানা। মুঙ্গের অবশ্য এই রীতি এখনও ধরে রেখেছে। ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিদ্রোহের কথা মনে পড়ে? সেই সময় ইংরেজ সরকার ভারতে এনেছিল এনফিল্ড রাইফেল, আর এই রাইফেলের কার্তুজটি দাঁতে কেটে বন্দুকে পুরতে হোত। আর ওখানেই যত সমস্যা। এই রাইফেলের কার্তুজে নাকি গরু আর শুকরের চর্বি মেশানো হয়েছিল। এই কথা ছড়িয়ে গেলে বিদ্রোহ শুরু হয়, যা ইংরেজ সরকারের ভিত অনেকটাই নাড়িয়ে দিয়েছিল।
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে আলোচনা হবে, আর টিপু সুলতানের কথা বলা হবে না, এ তো হতে পারে না। হ্যাঁ, মহীশূরের বিখ্যাত টিপু সুলতান, যিনি একের পর এক যুদ্ধ করে গেছেন ইংরেজদের বিরুদ্ধে। তাঁর বিশালাকৃতি মাইসোর প্যালেসে এখনও অজস্র কামান, অসংখ্য বন্দুক সব কিছুই সজ্জিত আছে। কথায় আছে, তিনি নাকি ফ্রান্স থেকে এই সব আগ্নেয়াস্ত্র আনিয়েছিলেন। ইতিহাস বলছে, তিনি আবার ফ্রান্সের জ্যাকোবিন ক্লাবের সদস্যও ছিলেন এক কালে। সম্প্রতি কর্ণাটকের সিমোগা নামক এক জায়গায় একটি কুয়ো থেকে প্রচুর পরিমাণে কামানের গোলা পাওয়া গেছে, যেগুলি ছিল টিপুর সময়কার। আর এটা মনে করা অযৌক্তিক হবে না, এই সমস্ত গোলা ব্যবহার করা হোত ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে। আর সেই যুদ্ধই ইতিহাসে অ্যাংলো-মাইসোর ওয়ার নামে খ্যাত।
রণজিৎ সিংহের সাথে শান্তি চুক্তির পর ১৮৩৮ সালে তাঁকে ইংরেজদের পক্ষ থেকে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছিল মস্ত এক কামান। আবার ব্রিটিশরা যখন ভারত ছেড়ে চলে গেল, তখন লর্ড মাউন্টব্যাটেনকে যোধপুরের মহারাজা একটা .২২ ক্যালিবারের পিস্তল উপহার দিয়েছিলেন। এই বন্দুককে ইংল্যন্ডে বলা হত ‘পেন গান’। আসলে তখনকার দিনে এই সব ছিল রেওয়াজ। বন্দুক উপহার ছিল যেমন ঐতিহ্য, তেমনই আভিজাত্যও বটে। বাংলার জমিদার, রাজ রাজাদের মধ্যেও এইসব আভিজাত্য দেখা যেত।
আর এই সব আভিজাত্যপনা বজায় রাখার জন্য উনবিংশ শতক থেকে বাংলায় গড়ে উঠতে লাগল একের পর এক বন্দুকের দোকান। আসলে বাংলা, বিহার, ওড়িশার জমিদারদের মধ্যে বন্দুকের চাহিদা হঠাৎ বাড়তে থাকল। ১৮৪০ সালে ‘ডি এন বিশ্বাস অ্যান্ড কোং, বন্দুক ও কার্তুজ বিক্রেতা’, ‘গ্রেট ইস্টার্ন ফায়ার আর্মস, গান মের্কাস’ এবং তারও পাঁচ বছর আগে ১৮৩৫ সালে গড়ে উঠেছিল ‘নরসিংহচন্দ্র দাঁ অ্যান্ড কোং, গান অ্যান্ড রাইফেল মেকার্স’, যার বর্তমান ঠিকানা ৬৪ এ হেমন্ত বসু সরণি। বাঁকুড়ার কোতুলপুরের বাসিন্দা ছিলেন নরসিংহচন্দ্র দাঁ। প্রথমে তিনি ওল্ড চিনে বাজার স্ট্রিটে খুলেছিলেন এই বন্দুকের দোকান। পরে অবশ্য হেমন্ত বসু সরণিতে তা স্থানান্তরিত হয়।
‘আসলে ঠিক ১৮৩৫ সালেই যে দোকান প্রতিষ্ঠা হয়েছিল, সে নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে, কিন্তু যা নথিপত্র পাওয়া গেছে সেগুলি কোনটিই ১৮৩৫ সালের আগের নয়। তাই ধরে নেওয়া যেতে পারে ওই সালেই দোকান গড়ে উঠেছিল,’ জানালেন সুদীপ দাঁ। প্রায় দুশ বছর ছুঁই-ছুঁই বন্দুকের ব্যবসায়ী দাঁ পরিবারের তিন ভাইয়ের মধ্যে সুদীপবাবুই বড়। বললেন, ‘আমরা প্রথমে বারুদের গুঁড়ো বিক্রি করতাম আর বন্দুক বিক্রি অনেক পরে শুরু হয়েছিল। বারুদের গুঁড়োর সাথে ছিটে (লেড শট) আর ক্যাপও বিক্রি করতাম’। এই পরিবারের অন্য দুই ভাই হলেন আভির দাঁ আর সুব্রত দাঁ। পারিবারিক এই বন্দুকের ব্যবসা বংশ পরস্পরায় চালিয়ে যাচ্ছেন তিন ভাই। আসলে এনারা এই ব্যবসাতে ষষ্ঠ প্রজন্ম। নরসিংহ দাঁ’র ছিল তিন ছেলে। বন্দুকের চাহিদা বাড়তে থাকলে তিন ছেলের মধ্যে এক ছেলে আশুতোষ দাঁ ধর্মতলা মোড়ে আরও একটি বন্দুকের দোকান খুলেছিলেন, যার নাম, এ টি দাঁ অ্যান্ড কোম্পানি।
কিন্তু হঠাৎ বারুদের গুঁড়ো কেন? উত্তরে সুদীপবাবু বললেন, ‘আসলে সেই সময় গাদা বন্দুকের বেশি চল ছিল, যা নিয়ে জমিদাররা শিকারে যেতেন, আর সেই সঙ্গে আত্মরক্ষারও কাজে লাগত এই বন্দুক। এই গাদা বন্দুকে প্রয়োজন হত বারুদের গুঁড়ো। এরপরে আস্তে আস্তে বন্দুক বিক্রির লাইসেন্স পাওয়া গেল। প্রথম দিকে বিক্রি হত এক’নলা, দো’নলা মাজল লোডিং গান। এই বন্দুকে পুরতে হত বারুদের গুঁড়ো, ছিটে, ভুষি, আর তারপর ট্রিগার টানলেই ছুটে যেত গুলি। এরপর বাজারে এল আরও উন্নত ধরনের বন্দুক, যার নাম ব্রিচ লোডিং গান। এটা অবশ্য সিপাহী বিদ্রোহের সময়কার ঘটনা। এরপর ধীরে ধীরে রাইফেল, পিস্তল আসতে থাকে আমাদের দোকানে, সে অবশ্য অনেক পরের ঘটনা। ইংরেজ আমলে কলকাতায় বন্দুক আসতো মূলত ইংল্যন্ড, জার্মানি, ইতালি, চেকোশ্লোভাকিয়া থেকে। আর আমাদের দোকানেও সেই সব বিদেশি বন্দুক সময় পাওয়া যেত। সে সময়কার বিখ্যাত সব বিদেশি বন্দুক প্রস্তুতকারী সংস্থার মধ্যে ছিল হল্যান্ড অ্যান্ড হল্যান্ড, জেমস পারে, উইলিয়াম ইভান্স, আর ব্রিটিশদের তৈরি বন্দুক নাকি ছিল সবচেয়ে উন্নত।’ বললেন, ‘গুলিও এক কালে আসত সুদূর ইংল্যন্ড থেকে।’
‘চাহিদা বাড়তে থাকায় দোকানের সংখ্যাও বাড়লো। ধানবাদ, রাঁচি, কটক, হাজারিবাগ, আসানসোলে আমাদের শাখা গড়ে ওঠে। আমার দাদু ধনকৃষ্ণ দাঁ বিভিন্ন জায়গায় দোকানের শাখা স্থাপন করেছিলেন,’ জানালেন সুব্রতবাবু। কিছু দোকান বন্ধ হলেও বেশিরভাগ দোকান এখনও চলছে এবং দাঁ পরিবারের লোকজন সেগুলো চালাচ্ছেন। কলকাতায় ছিল তাদের হেড অফিস। কিন্তু ক্রেতা কারা ছিলেন? ‘ক্রেতা ছিলেন মূলত বিভিন্ন জমিদার। ওড়িশার একাধিক জমিদার পরিবার আমাদের থেকে বন্দুক কিনত। শুধু কি ওড়িশা? সেই সঙ্গে বর্ধমান, নদিয়া, দুর্গাপুর থেকেও লোক আসত বন্দুক কিনতে। কলকাতাতে তখন একমাত্র অথেনটিক জিনিস পাওয়া যেত, আর আমরাও সেই ট্র্যাডিশন মেইনটেন করেছি। কাস্টমাররা স্যাটিসফাইও হতেন, তাই তো বারবার ছুটে আসতেন আমাদের দোকানে। এসব অবশ্য বাবা-ঠাকুরদার কাছে শোনা,’ বললেন সুদীপবাবু। তাঁর মতে, নিজেদের সুরক্ষা আর কিছুটা আভিজাত্য, এই দুটিই ছিল সেই সময় বন্দুক কেনার মুল কারণ। স্বাধীনতার পর থেকে বন্দুক উৎপাদনের মাত্রা বাড়তে থাকল ইছাপুর গান ফ্যাক্টরি এবং মুঙ্গেরের বিভিন্ন কারখানায়। সিভিলিয়ানদের জন্য তৈরি হতে লাগল রিভালভার, পিস্তল ইত্যাদি।
আচ্ছা, বন্দুক নিয়ে আলোচনা হবে, আর বাঙালি গোয়েন্দাদের নিয়ে কথা উঠবে না, এ তো হতে পারে না। বন্দুকের খুঁটিনাটি জানতে এই দোকানে উপস্থিত হয়েছিলেন ‘ফেলুদা’ সব্যসাচী চক্রবর্তী। আর ব্যোমকেশের চরিত্রে অভিনয়ের আগে আবির চ্যাটার্জিও এসেছেন বন্দুক সম্পর্কে জানতে। সত্যজিৎ রায় তো বহুবার এসেছেন এই দোকানে। শতরঞ্জ কি খিলাড়ি সিনেমায় ব্যবহৃত সেই বিখ্যাত তলোয়ারটিকে মনে করতে পারছেন? সেই তলোয়ার আসলে এই দাঁ পরিবারের, যা এই দোকানেই সাজিয়ে রাখা থাকতো। এখান থেকেই সিনেমার জন্য নিয়ে গিয়ে সযত্নে সেটিকে ফেরত দিয়ে গিয়েছিলেন সত্যজিৎবাবু। তাছাড়াও ভিক্টর ব্যানার্জি, সোমনাথ চ্যাটার্জি, প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় অনেকেই এসেছেন এখানে বন্দুক কিনতে। এরা বন্দুক বিক্রির পাশাপাশি দোকানে লকারও করে রেখেছেন। আপনি চাইলে আপনার বন্দুকটি বাড়িতে না রেখে এদের দোকানেও রাখতে পারেন।
এসব শুনে ভাবছেন একটা দুটো বন্দুক কিনবেন? তাহলে একটু দামটা জেনে নিন। সিভিলিয়ানদের জন্য যে সমস্ত বন্দুক বিক্রি হয়, তার মধ্যে অন্যতম .৩২ বোর রিভলভার ও পিস্তল এবং .২২ বোর পিস্তল, ট্যাক্স নিয়ে যেগুলির দাম পড়বে ৫৫ থেকে ৯৫ হাজারের মধ্যে। দামের পার্থক্য বন্দুকের কোয়ালিটির জন্য। তাছাড়াও পাম্প অ্যাকশন গান রয়েছে, যেটা অবশ্য আপনার জন্য নয়। চাইলে পুরনো বন্দুকও কিনতে পারেন। সেক্ষেত্রে অবশ্য ১২ হাজার টাকার মধ্যে পেয়ে যাবেন এক’নলা , দো’নলা মাজল লোডিং গান। আর লাইসেন্স পেতে গেলে আপনাকে প্রথমে আবেদন করতে হবে পুলিশের কাছে। এরপর আপনার পুলিশ ভেরিফিকেশন হবে। অনেক জটিল প্রক্রিয়ার পর আপনি পেতে পারেন লাইসেন্স। আর আপনার লাইসেন্সে মেনশন করা থাকবে কোন বন্দুক আপনি কিনতে পারবেন। প্রতি বছর আপনাকে লাইসেন্স রিনিউও করতে হবে, আর নির্বাচনের সময় আপনার বন্দুকটি জমা রাখতে হবে থানায়। তবে লাইসেন্স পাওয়া খুব একটা সহজ নয়, তাছাড়া ২০১৬ সালে ভারত সরকারের সিভিলিয়ান আর্মস অ্যাক্টে অনেক পরিবর্তনও আনা হয়েছে।
নতুন প্রজন্ম বন্দুকের শখ থেকে অনেকটাই মুখ ফিরিয়েছে। একে তো লাইসেন্স পাওয়া সমস্যা, তাছাড়া আসল ব্যাপারটা হল, এখন সেই জমিদারি নেই, নবাবিও নেই। তাই পুরনো জমিদারদের মতো তাদের আভিজাত্যের বিষয়টাও নেই আর। সেই কারণেই হয়ত এই সমস্ত দোকানে এখন স্রেফ তাঁরাই যান, যাঁদের কাছে শুটিং একটা নেশা। এঁরাই একমাত্র এখনও এই ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। কে বা জানে এই প্রজন্মের পর হয়ত বন্দুক রাখার নেশাটাই হারিয়ে যাবে বাঙালি জীবন থেকে। আর তখন ব্যক্তিগত সংগ্রহে বন্দুক রাখা একটা পুরনো দিনের ঐতিহ্য হিসেবেই বেঁচে থাকবে ইতিহাসের পাতায় কিংবা কোনও ধুলো পরা দলিল-দস্তাবেজে।
(এমন পরিবারও কিছু আছেন, যাঁরা বংশ পরম্পরায় বাঁচিয়ে রেখেছেন বন্দুকের শখ। এমনই এক পরিবারের কাহিনী আগামী সপ্তাহে)
ছবিঃ সপ্তর্ষি চৌধুরী
Comments are closed.