নন্দীগ্রামে মমতার থাকার জন্য বাড়ি ঠিক করল TMC, কী বলছেন বাড়ির মালিক?

১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে ভোট

একুশের ভোটের সবচেয়ে বড় ঘোষণা করে মমতা ব্যানার্জি জানিয়েছেন নন্দীগ্রামে প্রার্থী হবেন বলে। এবার ভোট এগিয়ে আসতেই নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেত্রীর থাকার ব্যবস্থা করতে তোড়জোড় শুরু করল দল।
যে মমতা ব্যানার্জি নিজের বাড়িতে থেকেই এতদিন যাবতীয় ভোট যুদ্ধে নেমেছেন, সেখানে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তৃতীয়বারের দৌড় শুরু করছেন কালীঘাট থেকে ১৬০ কিলোমিটার দূরে নন্দীগ্রামে। জানা যাচ্ছে, সুব্রত বক্সী, দোলা সেন মোট ৪ টি বাড়ি বেছে নিয়েছেন। তার মধ্যে ২ টি বাড়ি রাখা হবে। যদিও কোন বাড়িতে নেত্রী থাকবেন তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিরাপত্তা আধিকারিকের উপর।

১ এপ্রিল নন্দীগ্রামে ভোট। তৃণমূলের প্রার্থী মমতা ব্যানার্জি নিজে। বিজেপির হয়ে দাঁড়াতে পারেন শুভেন্দু অধিকারী। প্রার্থী থাকবেন বাম-কংগ্রেস-আইএসএফ জোটেরও। তাই যদি হয় তাহলে নন্দীগ্রাম হয়ে উঠতে চলেছে একুশের ভোটের সবচেয়ে বড়ো আকর্ষণের জায়গা।

তৃণমূল সূত্রের খবর, আগামী ১১ মার্চ নন্দীগ্রামে মনোনয়ন জমা দেবেন মমতা ব্যানার্জি। যদিও কার্যত ১৮ জানুয়ারি তেখালির জনসভার পর থেকেই তৃণমূলের তাবড় ভোট ম্যানেজাররা ঘাঁটি গেঁড়ে পড়ে আছেন নন্দীগ্রামে। ১১ তারিখের পর মুখ্যমন্ত্রীর জন্য একটি ঠিকানা রাখতে হবে। সেজন্য সুব্রত বক্সী, দোলা সেনেরা বারবার নন্দীগ্রামে গিয়ে বেছে নিয়েছেন মোট ৪ টি বাড়ি।
জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম শহর, রেয়াপাড়া, বটতলা এবং দীনবন্ধুপুরে চারটি বাড়ি বাছা হয়েছে। সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আরও ৫০ থেকে ১০০ জনের থাকার ব্যবস্থা তৈরি রাখছে তৃণমূল।
নন্দীগ্রাম শহরের মধ্যে একটি দোতলা বাড়ি বাছা হয়েছে মমতা ব্যানার্জির থাকার জন্য। এই বাড়িতে মোট ৪ টি ফ্ল্যাট আছে। প্রতিটি ৬০০ থেকে ১ হাজার স্কোয়ার ফুটের মধ্যে।
ইংরেজি দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই বাড়ির মালিক শেখ রজব মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন জেনে উচ্ছ্বসিত। বলছেন, আমার স্ত্রী নিজেই ঘরদোর পরিষ্কার করেছেন। দিদি থাকবেন বলে কথা! সব নিজের হাতে করছি।
ভাড়া নেবেন না?
পেশায় স্কুল শিক্ষক শেখ রজবের মুখে অবিশ্বাসের হাসি, ৪ হাজার টাকা নেব বলে বিজ্ঞাপন দিয়েছিলাম। কিন্তু দিদি থাকবেন বললে কি আমি টাকা নিতে পারি? নেতাদের বলেছি যা মনে হয় দেবেন।
নন্দীগ্রাম কলেজ মাঠে নেত্রীর হেলিকপ্টার নামবে। প্রস্তাবিত হেলিপ্যাড থেকে শেখ রজবের বাড়ি মেরেকেটে ৩ কিলোমিটার। বাড়িতে দোতলায় ছোট একটি ফ্ল্যাট। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে সেখানে থাকবেন মমতা নিজে। নিচের তলায় তাঁর অফিস। অন্য বাড়িগুলোর দুটোতে থাকতে পারেন মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তাকর্মীরা। অন্য বাড়িটিকে কলকাতা থেকে আসা নেতাদের থাকার জন্য ব্যবহার করা হবে নাকি নির্বাচনী কাজের অফিস হবে, তা ঠিক হয়নি।
এটাই শুধু না, বটতলা এলাকার একটি কমিউনিটি হলও মনে ধরেছে তৃণমূল নেতৃত্বের। সেটিও ভাড়া নিয়ে রেখেছেন স্থানীয় নেতৃত্ব। সেখানে থাকার ব্যবস্থা দোতলায়। গত ২ মাস ধরে এই কমিউনিটি হল ভাড়া নিয়ে রেখেছে তৃণমূল।
এত প্রস্তুতি নিয়ে রাখলেও এখনও নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না তৃণমূল নেতারা। কারণ নেত্রী কোথায় থাকবেন সেটা নির্ভর করে তাঁর নিরাপত্তা কর্মীদের উপর। ১১ তারিখ মমতা নন্দীগ্রামে মনোনয়ন দিতে এলে নিরাপত্তা কর্মীরা বাড়িগুলো খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দেবেন। তার উপর ভিত্তি করে সবুজ সংকেত দেবে সরকার।

Comments are closed.