সিঙ্গুরে রবীন্দ্রনাথকে হারাতে নির্দল হয়ে দাঁড়ানোর তোড়জোড় বিক্ষুব্ধদের

সিঙ্গুরের বিজেপি প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। কয়েকদিন আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর সিঙ্গুরের মাস্টারমশাইকে টিকিট দিল বিজেপি। যা বিজেপির ইতিহাসেও নজিরবিহীন বললেও কম বলা হয়।

রবিবার বিজেপির পক্ষ থেকে প্রার্থী তালিকা ঘোষণার পরেই সিঙ্গুরে বিজেপি কর্মীদের একাংশের মধ্যে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিজেপির পার্টি অফিসে আগুন দেওয়া হয়। চলে ভাংচুর। রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বিজেপি নেতা কর্মীরা। নির্দল হিসেবে দাঁড়ানোর তোড়জোড় করছেন তাঁরা।

দলের কোনও পুরনো নেতাকে প্রার্থী হিসেবে চেয়েছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মী-সমর্থকরা। লোকসভা নির্বাচনে সিঙ্গুরে ভালো ফল করেছিল বিজেপি। বিক্ষোভরত কর্মীরা জানান, নীতিগত ভাবে বরাবর বিজেপির বিরুদ্ধ রাজনীতি করে গেছেন সিঙ্গুরের মাস্টারমশাই। এক সময় বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলতেন রবীন্দ্রনাথ। যোগদানের পর দল তাঁকেই কীভাবে প্রার্থী করল! প্রশ্ন বিজেপির একাংশের। অন্যদিকে বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, রবীন্দ্রনাথের বয়স নিয়ে দ্বিমত তৈরী হয়েছিল। দলের একাংশ তাঁকে প্রার্থী করা নিয়ে বিরোধিতা করেছিলেন। কিন্তু ৮৯ বছরের রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের বিজেপিতে যোগদানের একমাত্র শর্তই ছিল তাঁকে সিঙ্গুরের প্রার্থী করতে হবে।

[আরও পড়ুন- ‘সৌভাগ্যবশত বেঁচে গেছি, কেউ কেউ ভেবেছিল বেরোতে পারব না’, ঝালদায় হুইল চেয়ারে বসেই সভায় মমতা]

সিঙ্গুর আন্দোলনের অন্যতম মুখ ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। ২০১১ সালে মমতা ব্যানার্জি মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম মন্ত্রী হন রবীন্দ্রনাথ। তার এক দশক বাদে দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হতে থাকে প্রবীণ বিধায়কের। মমতা ব্যানার্জি দ্বিতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হলে সেই মন্ত্রীসভায় স্থান পাননি রবীন্দ্রনাথ। এরপর ২১ এর নির্বাচনে সিঙ্গুর থেকে হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নাকে প্রার্থী করে তৃণমূল। প্রার্থী ঘোষণার সময় মমতা ব্যানার্জি নিজেই জানিয়েছিলেন, বয়সের কারণে এবার সিঙ্গুরের মাস্টারমশাইকে প্রার্থী করা হয়নি।

এরপরই পদ্ম শিবিরে যোগ দেন সিঙ্গুর আন্দোলনের নেতা অন্যতম নেতা ৮৯ বছরের রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। তৃণমূল সূত্রে খবর, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য তাঁর ছেলে তুষার ভট্টাচার্যকে প্রার্থী করা হোক বলেও প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই প্রস্তাবেও সায় দেয়নি তৃণমূল। এরপরেই বিজেপিতে যোগ দেন বাবা-ছেলে।

এবার সিঙ্গুরে বেচারাম মান্নার সঙ্গে লড়াই রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের। সিঙ্গুর জমি আন্দোলনের সময় এই দু’জনকে গুরু-শিষ্য হিসেবেই চিনত সিঙ্গুরবাসী। কিন্তু এখন মাস্টারমশাই বিজেপি শিবিরে। এবং গেরুয়া শিবিরে মাস্টারমশাইকে নিয়েই হাজারো অসন্তোষ।

Comments are closed.