রেমডেসিভির নিয়ে সম্মুখ সমরে মহারাষ্ট্রের ঠাকরে সরকার এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফড়নবিস। তাঁর বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে রেমডেসিভির সংগ্রহের গুরুতর অভিযোগ এনেছে মহারাষ্ট্র সরকার।
গোলমালের সূত্রপাত শনিবার রাতে। মুম্বই পুলিশ সূত্রে খবর, নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে তদন্ত চালিয়ে তাঁরা জানতে পেরেছেন, এই সংস্থা ৬০ হাজার রেমডেসিভির ইনজেকশন মজুত করে রেখেছে। মুম্বইয়ের বান্দ্রা কুরলা থানা দমনের ওই ওষুধ সংস্থার অন্যতম ডিরেক্টারকে ডেকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তাতেই আপত্তি বিজেপির। তাদের দাবি, মানুষের হাতে ওষুধ পৌঁছে দিতেই এই পদক্ষেপ। এতে বেআইনি কিছু নেই। কেন্দ্র এবং রাজ্যের সরকারি দফতরের সিলমোহরও দেখাচ্ছেন তারা।
সূত্রের খবর, ব্রুক ফার্মা প্রাইভেট লিমিটেডের ওই ডিরেক্টরকে কেন পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে তা নিয়ে আপত্তি তুলে দলবল নিয়ে থানায় পৌঁছে যান প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। পুলিশকে কাজে বাধা দেন।
ফড়নবিসের অভিযোগ, ঠাকরে সরকার পুলিশকে কাজে লাগিয়ে ব্রুক ফার্মার ডিরেক্টারকে হেনস্থা করছে। তাঁর দাবি, রেমডেসিভিরের আকালে রাজ্য বিজেপি নিজের যোগাযোগ কাজে লাগিয়ে ওষুধ সংগ্রহ করে মানুষকে সুরাহা দেবে। সেই জন্যই দমনের ওষুধ কারখানার সঙ্গে চুক্তি। এজন্য প্রয়োজনীয় অনুমতিও নেওয়া আছে বলে দাবি মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর।
করোনা সংক্রমিত গুরুতর রোগীদের জন্য এখন ব্যবহার করা হচ্ছে রেমডেসিভির ইনজেকশন। একদিকে যখন দেশহুড়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা, অন্যদিকে আকাল রেমডেসিভির ও অক্সিজেনের। এর মধ্যেই রেমডেসিভির নিয়ে রাজ্যে রাজ্যে গুরুতর অভিযোগ উঠছে বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে। কদিন আগেই গুজরাতের বিজেপি সভাপতি পার্টি অফিস থেকে রেমডেসিভির বিলি করে শিরোনামে এসেছিলেন। এবার মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী থানায় গিয়ে গোলমালে জড়ালেন।
এখন প্রশ্ন হল, যে রেমডেসিভির খোলা বাজারে অনুমতি ছাড়া বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র, তখন বিজেপির তাবড় নেতারা জড়িয়ে পড়ছেন রেমডেসিভির কাণ্ডে। সরকারের যে কাজ করার কথা সেই কাজ বিজেপি করছে কী ভাবে?
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে এখনও এনিয়ে মুখ না খুললেও মন্ত্রিসভার সদস্য তথা এনসিপির রাজ্য সভাপতি জয়ন্ত পাটিল জানিয়েছেন, পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ফড়নবিসের বিরুদ্ধে করা উচিত। তাঁর অভিযোগ, এভাবেই কেন্দ্র রাজ্যগুলোকে ওষুধ না পাঠিয়ে বিজেপির সমান্তরাল ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে।
মুম্বই পুলিশ জানাচ্ছে, ব্রুক ফার্মার ডিরেক্টারের বিরুদ্ধে কোনও মামলা করেনি পুলিশ। এমনকি ৬০ হাজার রেমডেসিভির ইনজেকশনও বাজেয়াপ্ত করা হয়নি। সূত্রের খবর, মুম্বই পুলিশ যখন রেমডেসিভিরের সন্ধান পায় তখনও সরকারি ছাড়পত্র এসে পৌছয়নি। তাই অতিমারির কথা মাথায় রেখে ডিরেক্টারকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল।
Comments are closed.