রাজনীতি থেকে জীবন বড়। প্রবল জলোচ্ছ্বাসে যখন ভেঙ্গে পড়ছে একের পর এক নদী বাঁধ, নোনা জল ঢুকে নষ্ট হচ্ছে বিঘার পর বিঘা জমির ফসল, তখন ফোন গেল প্রবীণের মোবাইলে। ফোনের এক প্রান্তে রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক অন্য প্রান্তে প্রাক্তন বিধায়ক কান্তি গাঙ্গুলি। পূর্বসুরীর কাছে বর্তমান পরামর্শ নেন কী করে বাঁধ বাঁচানো যাবে। ক্ষুদ্র রাজনীতির বেড়া ডিঙ্গিয়ে দুই নেতার কথোপকথনে খুশি সুন্দরবনবাসী।
এখনও টাটকা আমফান স্মৃতি ৷ গত বছর আমফানে নদীবাঁধ ভেঙে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল বহু মানুষের ঘর। সেইসময়ও তাঁরা পাশে পেয়েছিলেন বাম নেতা কান্তি গাঙ্গুলিকে ৷ আর এবার যশ আসার আগেও সুন্দরবনবাসীর পাশে সুন্দরবন উন্নয়ন দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী।
রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক বলেন, সুন্দরবন দফতরের মন্ত্রী হিসেবে কান্তি গাঙ্গুলির অনেক অভিজ্ঞতা। তাই নদীবাঁধ মেরামতিতে ওঁর পরামর্শ নিলাম। এই সময় রাজনীতি না করে মানুষের পাশে দাঁড়ানো বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
কান্তিবাবু মুখ্যমন্ত্রীকে আলাদা করে সমস্যা জানাবেন বলে জানিয়েছেন অলোক জলদাতা। এই বিষয়ে প্রাক্তন মন্ত্ৰী জানিয়েছেন, আমিও পরামর্শ দিতে চেয়েছিলাম। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সুন্দরবনের মানুষের পাশে আছেন তিনি জানান।
বুধবার সকাল থেকে নদী বাঁধ ভেঙে পড়ার খবর আসতেই বিভিন্ন এলাকায় গিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক ডাক্তার অলোক জলদাতা। কথা বলেছেন দুর্গতদের সঙ্গে।
নগেন্দ্রপুরের দমকল খেয়াঘাট, নন্দকুমার পঞ্চায়েতের নারায়ণপুর ছাতুয়া এলাকায় ঘোরেন বিধায়ক। এরপর মণি নদীর বাঁধ ভেঙে পড়ে জল গ্রামে ঢুকে পড়ার খবর পেয়েই সেখানে যান তিনি। হাতে ছাতা নিয়ে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে ঘুরে দেখেন এলাকা।
অন্যদিকে কান্তি গাঙ্গুলির বাড়ি উত্তর কুমড়ো পাড়া নদী বাঁধ ভেঙে প্লাবিত। নদীর পাড়ে গলায় গামছা জড়িয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে দেখে যায় প্রবীণ কান্তি গাঙ্গুলিকে। দুর্যোগের সময় স্ত্রীর নামাঙ্কিত স্কুলে প্রতিদিন ২০০ থেকে ৩০০ জনের খাবারের ব্যবস্থা করেছেন বলে জানা গিয়েছে। দু’বেলা মানুষকে মাছ আর ডিমের ঝোল, ভাত খাওয়াচ্ছেন তিনি। কান্তি গাঙ্গুলির উদ্যোগের প্রসংশা করেছেন রায়দিঘির তৃণমূল বিধায়ক অলোক জলদাতা।
Comments are closed.