অসুস্থ স্বামী কর্মহীন তাই তাঁকে খোরপোশ দিতে হবে চাকুরীরতা স্ত্রীকে। নিম্ন আদলতের একটি রায়কে বহাল রেখে এমনটাই নির্দেশ দিল বম্বে হাইকোর্ট। বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে সাধারণত স্ত্রী’দেরই খোরপোশ দেওয়ার ঘটনা দেখা যায়, তাই বম্বে হাইকোর্টের এই রায় নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
একটি বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় মহারাষ্ট্রের নান্দেড়ের নিম্ন আদালত পেশায় প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষিকা স্ত্রীকে প্রতিমাসে ৩ হাজার টাকা করে স্বামীকে দেওয়ার নির্দেশ দেয়। কিন্তু স্ত্রী নির্দেশ না মানায় ২০১৯ সালে ফের আদলতের দ্বারস্থ হন স্বামী। সেখানে ক্ষুব্ধ আদালত মহিলার স্কুলের প্রধান শিক্ষিকাকে নির্দেশ দেয় প্রতি মাসে যেন তাঁর বেতন থেকে ৫ হাজার টাকা কেটে আদালতে জমা দেওয়া হয়। এবং ২০১৭ সাল থেকে খোরপোশ বাবদ বকেয়া টাকাও স্বামীকে মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দেয় আদালত। স্কুল শিক্ষিকা নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বম্বে হাইকোর্টে মামলা করেন। এদিন বম্বে হাইকোর্টও নিম্ন আদলতের রায় বহাল রেখে শিক্ষিকাকে বলেন স্বামীকে প্রতিমাসে খোরপোশ দেবেন তিনি।
১৯৯২ সালে ওই দম্পতির বিয়ে হয়। ২০১৫ সালে তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। তারপর খোরপোশের দাবি জানিয়ে আদলতের দ্বারস্থ হন স্বামী। আদালতে স্বামীর যুক্তি ছিল, ১৯৯২ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। তখন থেকে স্ত্রীর স্বপ্ন পূরণের জন্য যা যা করার করেছেন। স্ত্রী’কে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষত করা থেকে বাড়ির কাজ সব নিজে করেছেন। এমনকি স্ত্রীর স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে নিজের জন্য ভাবারও সময় পাননি। এখন তিনি অসুস্থ, তাঁর কোনও উপার্জন নেই। এদিকে স্ত্রী নানান ভাবে তাঁকে হেনস্থা করেছে, অন্যায়ভাবে বিচ্ছেদ নিয়েছেন। ফলে আইনঅনুযায়ী খোরপোশের আবেদন করেন ওই ব্যক্তি।
যদিও স্ত্রীর যুক্তি ছিল তাঁর প্রাক্তন স্বামীর রোজগার নেই এটা মিথ্যে। ওনার একটি মুদিখানা দোকান রয়েছে। উল্লেখ্য দুপক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি ডাংরে জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী স্বামী, স্ত্রীর উভয়কেই খোরপোশ দেওয়ার বিধান রয়েছে। ওই আইন অনুযায়ী স্ত্রী স্বামীকে খোরপোশ দেবেন।
Comments are closed.