এমএ পাশ করার পরেও জোটেনি চাকরি। পরিবারের দায়িত্ব ঘাড়ের ওপর। তাই টিউশন পড়ানোর পাশাপাশি চায়ের দোকান খুলে বসেছেন বর্ধমানের মন্তেশ্বরের পাতুন গ্রামের বাসিন্দা বছর ২৮ এর হেমন্ত মল্লিক।
বাংলায় অনার্স করার পর বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর করেছেন হেমন্ত। এমএ-তে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিলেন তিনি। এর মাঝে ২০১৩-১৫ সালে বড়শুলের কলানবগ্রামের সতীশচন্দ্র কলেজ থেকে আইটিআই করেন। করেছেন কম্পিউটারের বেসিক কোর্স। তাই বাড়িতে গিয়ে শিক্ষকতার কাজ করেন। বছর তিনেক আগে বিয়ে হয়। বাড়ে সংসারের খরচ। এরমধ্যে এসে পড়ে করোনা। কমতে থাকে টিউশন। তাই চায়ের দোকান খুলতে বাধ্য হন, বলে জানান হেমন্ত।
মন্তেশ্বর থানার পাতুন গ্রামের বাসিন্দা পেশায় জনমজুর শীতল মল্লিক এবং রেনুকাদেবীর দুই ছেলের মধ্যে বড় হেমন্ত। দুই ভাই বিবাহিত। ছোট থেকেই কষ্ট করে বড় হয়েছেন। হেমন্তের বাবা শীতল মল্লিক জানিয়েছেন, জমিজমা নেই। দিনমজুরি করে কষ্ট করে দুই ছেলেকে উচ্চশিক্ষিত করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বড় ছেলেকে চায়ের দোকান চালাতে দেখে খারাপ লাগলেও এটা মনে হয় কোনও কাজ ছোট নয়। সংসার তো চালাতে হবে।
আক্ষেপের সুরে হেমন্ত জানিয়েছেন, পিএইচডি করা ছাত্রছাত্রীরাও অনেকে চাকরি পাননা। আমার মত এমএ পাশ অনেক বসে আছেন। সারাদিনে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা বাড়িতে গিয়ে টিউশন পড়িয়ে আসি। এর মাঝে চায়ের দোকান সামলাই। সকাল ৫ টার সময় বেরিয়ে রাত ১০ টার সময় বাড়ি ফিরি। এই বিষয়ে মন্তেশ্বরের বিডিও গোবিন্দ দাস আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, হেমন্তের কথা শুনেছি। চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে বা ব্যবসা বড় করতে চাইলে উনি যদি ঋণের আবেদন করেন, তবে সেই ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।
Comments are closed.