পাকিস্তানে এইচআইভি আক্রান্ত ৪০০ শিশু, সংক্রামিত ইঞ্জেকশন বারবার ব্যবহার সিন্ধের এইডস আক্রান্ত হাতুড়ের
সংক্রামিত ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ ব্যবহারের ফলে ছড়িয়ে পড়েছে এইচআইভি ভাইরাস, আক্রান্ত ৪০০ র বেশি শিশু। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধ প্রদেশে।
জানা গিয়েছে, কয়েক সপ্তাহ ধরে সিন্ধ প্রদেশের লারকানায় একের পর এক শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। ডাক্তারি পরীক্ষায় তাদের প্রত্যেকের রক্তেই পাওয়া গিয়েছে এইচআইভি ভাইরাস। কয়েক সপ্তাহে প্রায় মহামারীর আকার ধারণ করেছে ওই এলাকায়। এই সংক্রমণের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর কাতারে কাতারে মানুষ তাঁদের শিশু সন্তান নিয়ে ছুটে আসছেন এইচআইভি পরীক্ষা করাবেন বলে, চোখেমুখে তাঁদের গভীর উদ্বেগ। অস্থায়ী স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও ভিড় করছেন হাজার হাজার মানুষ। পরীক্ষার পর প্রায় ৪০০র বেশি শিশুর শরীরে এইচআইভি ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে এ পর্যন্ত।
কিন্তু কেমন করে শিশুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ল এই মারাত্মক ভাইরাস? সিন্ধ প্রদেশের লারকানায় কোনও স্বীকৃত ডাক্তার নেই। রয়েছেন একজন হাতুড়ে ডাক্তার। মাথা ধরা থেকে বমি কিংবা জটিল কোনও রোগ, লারকানার অন্তত ১৬ হাজার মানুষের ভরসা একমাত্র হাতুড়ে ডাক্তার মুজফফর ঘাঙ্গরো। তিনি নিজেও এইডস আক্রান্ত। অভিযোগ, এই হাতুড়ে ডাক্তার হাজার হাজার মানুষের জন্য একটি ইঞ্জেকশনই বারবার ব্যবহার করেছেন, সেখান থেকেই ছড়িয়েছে এইচআইভি। মুজফফর ঘাঙ্গরোকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃত হাতুড়ে ডাক্তার ইচ্ছাকৃতভাবে এই কাজ করেছেন কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পাক স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফ থেকেও এই ঘটনার কথা স্বীকার করে জানানো হয়েছে, অন্তত ৫০০ জন মানুষ এইচআইভি সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। যার মধ্যে অধিকাংশই শিশু। ভারতের মতো পাকিস্তানেও গ্রামে কাজ করার মতো ডাক্তার পেতে সমস্যা হয়। কেউই সাধ করে প্রত্যন্ত গ্রামে চাকরি করতে যেতে চান না। পাকিস্তানের সরকারি রিপোর্ট বলছে, বর্তমানে প্রায় ৬ লক্ষ হাতুড়ে ডাক্তার রয়েছেন, এর মধ্যে সিন্ধ প্রদেশেই আছেন ২ লক্ষ ৭০ হাজার। এঁদের অধিকাংশই খরচ বাঁচাতে একই সিরিঞ্জ দিয়ে অনেক রোগীকে ইঞ্জেকশন দিয়ে থাকেন বলে মন্তব্য করেছেন সিন্ধের এইডস কন্ট্রোল প্রোগ্রামের ম্যানেজার সিকান্দার মেমন।
Comments are closed.