দু’বারের সিপিএম সাংসদ, দু’বারের কংগ্রেস বিধায়ক কেরলের বিতর্কিত আবদুল্লাকুট্টি কি এবার বিজেপিতে? জল্পনা রাজ্যজুড়ে

তিনি সিপিএমের হয়ে রাজনৈতিক জীবন শুরু করে কংগ্রেসে গিয়েছেন। আবার কংগ্রেসে গিয়ে ভূয়সী প্রশংসা শুরু করেছেন বিজেপির। এবার কি তবে বিজেপিতে চললেন কেরলের দাপুটে প্রাক্তন সিপিএম, বর্তমানে কংগ্রেস নেতা আবদুল্লাকুট্টি? ফেসবুকে মোদী বন্দনায় পর এখন কেরলে তুঙ্গে জল্পনা।
১৯৯৯ সাল। কেরলের কান্নুর লোকসভা আসনে তারকা পতন হল। কেরল কংগ্রেসের কিংবদন্তী নেতা মুল্লাপাল্লি রামচন্দ্রণ পর্যুদস্ত হলেন তরুণ বামপন্থী নেতা এ পি আবদুল্লাকুট্টির কাছে। কেরলজুড়ে আবদুল্লাকুট্টিকে ডাকা হতে লাগল ‘অদ্ভুতমকুট্টি’ নামে। ১৯৮৪ থেকে রামচন্দ্রণ ছিলেন ভোটের ময়দানে কার্যত অপরাজেয়। ২০০৪ সালে ফের একই আসন থেকে জিতলেন আবদুল্লাকুট্টি। লোকসভা ভোটে রামচন্দ্রণের পরপর দু’বার হারার প্রভাব পড়ে কংগ্রেসের সংগঠনে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছোয়, রামচন্দ্রণকে কান্নুর থেকে সরে যেতে হয় ভাডাকারা কেন্দ্রে। সেখান থেকেই তারপর ভোটে জেতেন তিনি।
রাজ্যে কংগ্রেসের এই ছন্নছাড়া অবস্থায় বোমা ফাটান সিপিএমের দু’বারের সাংসদ আবদুল্লাকুট্টি। দীর্ঘ বিতর্কের পর সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করে। কংগ্রেসে যোগ দেন আবদুল্লাকুট্টি। সেটা ২০০৯ সাল। গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নের মডেলের ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন আবদুল্লাকুট্টি এবং নিজের পার্টিকে এর থেকে শিক্ষা নিতে বলেছিলেন। এরপরই সিপিএম তাঁকে বহিষ্কার করে। কেরলের প্রবাদপ্রতিম কংগ্রেস নেতা কে সুধাকরণের নেতৃত্বে কংগ্রেসের হয়ে কাজ শুরু করেন আবদুল্লাকুট্টি। কান্নুর বিধানসভা থেকে কংগ্রেসের টিকিটে উপনির্বাচন জেতেন তিনি। তারপর ২০১১ সালেও ফের কংগ্রেসের বিধায়ক হন আবদুল্লাকুট্টি।
আবদুল্লাকুট্টির নাম জড়িয়েছে সোলার স্ক্যামে, তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে শ্লীলতাহানিরও। ইতিমধ্যে ভোটেও হেরেছেন। যদিও কেরলে আবদুল্লাকুট্টির জাদু শেষ কিনা তা নিয়ে আলোচনা গতি পাওয়ার আগেই ফিরলেন তিনি। সম্প্রতি ২০১৯ ভোটের আগে আবার শিরোনামে আসেন আবদুল্লাকুট্টি। ফের মোদীর প্রশস্তি করতে যায় তাঁকে। ফেসবুক পোস্টে আবদুল্লাকুট্টি যেভাবে মোদী মহিমা বর্ণনা করেছেন, তা দেখে ২০০৯ সালের কথা মনে আসছে কেরলের রাজনৈতিক মহলের। কিন্তু সত্যিই কি কংগ্রেস থেকে এবার বিজেপিতে পা বাড়াবেন আবদুল্লাকুট্টি? এক দশক বাদে কেরলে ফের কি ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি? আবদুল্লাকুট্টির মোদী বন্দনা নিয়ে সবচেয়ে মুখর কেরলে কংগ্রেসের বর্তমান প্রদেশ সভাপতি মুল্লাপল্লি রামচন্দ্রণ। সিপিএমে থাকার সময় এই রামচন্দ্রণকে ভোটে হারিয়েই ধূমকেতুসম উত্থান আবদুল্লাকুট্টির। রামচন্দ্রণের কটাক্ষ, আবদুল্লাকুট্টির আসল জায়গা বিজেপি। তাই যতবার তাঁর মুখে মোদীর প্রশংসা শুনেছি, দেখেছি দল বদলে গিয়েছে। নীতির বালাই নেই।

Comments are closed.