বিজেপির সঙ্গে সরকার গড়ে উপ মুখ্যমন্ত্রী হয়েই ২০ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি মামলা থেকে ছাড় পেলেন অজিত পওয়ার

ক্ষমতায় বসেই বহু কোটি টাকার দুর্নীতি মামলা থেকে ছাড় পেলেন মহারাষ্ট্রের নয়া উপ মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার। দু’দিন আগেই কাকা শরদ পওয়ার ও দলকে বোকা বানিয়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সাত সকালে রাজ্যের নয়া উপ মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন তিনি। আর সোমবার তারই পুরস্কার পেলেন এনসিপি নেতা অজিত পওয়ার।
সোমবার মহারাষ্ট্রের অ্যান্টি কোরাপশন ব্রাঞ্চ বা এবিসি অজিতের উপর ঝুলে থাকা সেচ দুর্নীতি সংক্রান্ত ৯ টি মামলার তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই তদন্তকারী সংস্থাটির ডিজি পরমবীর সিংহ এক সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, তদন্তে এই ৯টি মামলার কোনওটিতেই অজিত পাওয়ারের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই তদন্ত শর্তসাপেক্ষে বন্ধ করা হয়েছে। তবে রাজ্য সরকার বা কোর্ট চাইলে ফের তদন্ত শুরু হতে পারে।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালে এই সেচ দুর্নীতিতে নাম থাকার জন্য উপ মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন অজিত পাওয়ার। প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকার এই দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে।
যদিও দীর্ঘ তদন্তের পর হঠাৎই তদন্তকারী সংস্থাটির এখন দাবি, দায়ের হওয়া সেচ সংক্রান্ত তিন হাজার অভিযোগের মাত্র ন’টিতে নাম জড়িয়েছিল অজিত পওয়ারের। কিন্তু, সেগুলিতেও উপযুক্ত প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
২০১৪ সালে বিজেপির দেবেন্দ্র ফড়ণবিসের নেতৃত্বে মহারাষ্ট্রে সরকার গঠিত হওয়ার আগে মহারাষ্টে কংগ্রেস ও এনসিপির জোট সরকার ছিল। ২০০৯ সালে ওই সরকারে রাজ্যের জল সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলাতেন অজিত পওয়ার। কংগ্রেস ও এনসিপির শাসনকালে মন্ত্রী থাকার সময় তাঁর দপ্তরের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। ২০০৯ সালে বিভিন্ন সেচ প্রকল্পে তিনি বেআইনিভাবে এবং প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়া প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচের নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ ওঠে। ২০১২ সালে গোটা বিষয়টি সামনে আসে। এর জেরে মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেন অজিত। পরে অবশ্য ফের মন্ত্রিসভায় ফিরে আসেন।
২০১৪ সালে মুখমন্ত্রীর চেয়ারে বসেই অজিত পওয়ারের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। খুব তাড়াতাড়ি মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে মুম্বইয়ের আর্থার রোড জেলে দেখা যাবে বলেও হুমকি দেন। যদিও গত পাঁচ বছরে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি অজিত পওয়ারের বিরুদ্ধে।
শনিবারই অজিত বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে সরকার গড়েছেন মহারাষ্ট্রে। পেয়েছেন উপ মুখ্যমন্ত্রীর পদ। আর তার পরই এই ঘটনা ঘটল। বিরোধিদের কটাক্ষ, এটা অজিতকে বিজেপির পুরস্কার। কংগ্রেস নেতা রণদীপ সুরজেওয়ালার ট্যুইট, এতদিন গণতন্ত্রের কনট্র‍্যাক্ট কিলিং হয়েছে, এবার মহারাষ্ট্রে জনাদেশের ও গর্বের কন্ট্র‍্যাক্ট কিলিং হল।

 

Comments are closed.