সাদামাটা জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়েছি। আমার এখন একটি মাত্র গাড়ি। গয়না বিক্রি করে আইনি প্রক্রিয়ার খরচ যোগাচ্ছি। শুক্রবার ব্রিটেনের কোর্টে চলা মামলার শুনানিতে ভারত থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে হাজিরা দিয়েছিলেন অনিল আম্বানী। সেখানেই বিচারককে এমন কথা জানিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম ধনী মুকেশ আম্বানীর ভাই অনিল।
এ বছর ২২ মে অনিল আম্বানীকে ব্রিটেনের হাইকোর্ট ৩ টি চিনা ব্যাঙ্ককে প্রাপ্য ৫,২৮১ কোটি টাকা এবং আইনি প্রক্রিয়ার খরচ হিসেবে ৭ কোটি টাকা ১২ জুনের মধ্যে জমা করতে নির্দেশ দেয়। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও টাকা মেটাননি মুকেশ আম্বানীর ভাই। ১৫ জুন আবার আদালতের দ্বারস্থ হয় চিনা ব্যাঙ্ক এবং আবেদন করে অনিল আম্বানীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের। সেই আবেদনের শুনানিতেই নিজের হাঁড়ির হালের কথা জানিয়েছেন একদা ভারতের সবচেয়ে ফ্ল্যামবয়েন্ট বিজনেস টাইকুন।
শুক্রবার আদালতকে ধার দেনায় জর্জরিত অনিল আম্বানী জানিয়েছেন, গয়না বিক্রি করে আইনি খরচ যোগাচ্ছেন। নিজের বলতে কিছুই নেই। হিসেব দিয়েছেন, এ বছর জানুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে নিজের সঞ্চিত সমস্ত গয়না বেচে ৯.৯ কোটি টাকা পেয়েছেন। এখন সেটাই শেষ সম্বল।
চিনা ব্যাঙ্কের কৌশুলী অনিল আম্বানীকে প্রশ্ন করেন, তাহলে আপনার যে রোলস রয়েসের মতো লাক্সারি গাড়ির কালেকশনের কথা শোনা যায়। অনিল আম্বানী উত্তর দেন, সেসব মিডিয়ার তৈরি করা গল্প। আমার এখন একটিই মাত্র গাড়ি। রোলস রয়েজ কখনওই আমার ছিল না। তারপর কৌশুলী প্রশ্ন করেন, আপনি স্ত্রীকে একটি বহুমূল্য ইয়ট উপহার দিয়েছেন। টাকা এল কোথা থেকে? অনিলের জবাব ছিল, একটি কর্পোরেট ইয়টটি কিনেছে। আমি সি সিকনেসের রোগী, ইয়টটি প্রথমবার যখন আসে তখনই একবার দেখেছিলাম। এর বেশি কিছু জানি না। প্রাইভেট হেলিকপ্টার থাকার কথাও অস্বীকার করেছেন অনিল আম্বানী। নিজের খারাপ অর্থনৈতিক অবস্থার কথা বোঝাতে গিয়ে তিনি আদালতকে বলেছেন, মায়ের কাছ থেকে তিনি ধার হিসেবে ৫০০ কোটি টাকা নিয়েছেন এবং নিজের ছেলে অনমোল তাঁর কাছে ৩১০ কোটি টাকা এখনও পায়।
সব মিলিয়ে ৩ চিনা ব্যাঙ্কের মামলায় আরও বিপাকে আম্বানী বাড়ির ছোট ছেলে। একদা কোটিপতির এখন নুন আনতে পান্তা ফুরনোর দশা, এমনই আদালতে জানিয়েছেন। দাদা মুকেশ এবং বউদি নীতা আগেও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। এবারও কি দাদার শরণেই যাবেন অনিল অম্বানী? বড়ো প্রশ্ন এখন সেটাই।
Comments are closed.