উত্তম কুমারের মৃত্যুর পর টলিউড জগতে যখন অন্ধকারের ছায়া নেমে এসেছিল ঠিক তখনই দেবদূতের মত এই ইন্ডাস্ট্রিতে আবির্ভাব ঘটে অঞ্জন চৌধুরীর। টলিউড ইন্ডাস্ট্রির ইতিহাস চিরকৃতজ্ঞ থাকবে তার স্রষ্টার কাছে। অঞ্জন চৌধুরীর স্ত্রী হলেন জয়শ্রী চৌধুরী (Jayashree Chowdhury)। ২১ শে অগস্ট অর্থাৎ গত রবিবার প্রয়াত হলেন জয়শ্রী। অঞ্জন চৌধুরীর স্ত্রী যে চলে গেলেন এই কথা টলিউডের কলাকুশলীরা কেউই জানতে পারলেন না। অঞ্জন চৌধুরী (Anjan Chowdhury)-র সাথে এতটা বৈমাত্রেয় আচরণ কি সত্যিই হতাশাজনক নয়?
সোশ্যাল মিডিয়ায় জয়শ্রী দেবীর মৃত্যুর খবর জানান তাঁর পুত্র সন্দীপ চৌধুরী (Sandip Chowdhury)। মৃত্যু কালে জয়শ্রীর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। বহুদিন ধরে তিনি ডায়াবেটিসের সমস্যায় ভুগছিলেন। ডাইবেটিসের সমস্যার পর তার শরীরে নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সমস্যা দেখা দেয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মৃত্যুর খবর জানান জয়শ্রী দেবীর পুত্র সন্দীপ চৌধুরী (Sandip Chowdhury)।
অঞ্জন বাবুর বাস্তবিক জীবন সিনেমার থেকে কোনো অংশে কম নয়। টলিউডের পরিচালক হওয়ার জন্য তখন অঞ্জন বাবু চালিয়ে যাচ্ছেন আমরণ সংগ্রাম। তখন এই চালচুলো হীন ছেলেটার সাথে বিয়ে দিতে জয়শ্রী দেবীর মা-বাবা রাজি ছিলেন না। কিন্তু অঞ্জন বাবু ছাড়ার পাত্র নয়। তিনি জয়শ্রী দেবীর বাবা-মার অমতে জয়শ্রী দেবীকে নিয়ে পালিয়ে গিয়ে রেজিস্ট্রি ম্যারেজ করেন। জয়শ্রী দেবীর পরিবার এই বিয়েটা কে মেনে নেয়নি। কিন্তু অঞ্জন চৌধুরীর মায়ের নির্দেশে অঞ্জন চৌধুরী আবারো কালীঘাটে গিয়ে জয়শ্রী দেবীর মাথায় সিঁদুর দান করেন। তারপর চৌধুরী বাড়ির বউ হিসেবে স্বীকৃতি পান জয়শ্রী দেবী।
অঞ্জন চৌধুরীর সফলতার নেপথ্যে ছিলেন জয়শ্রী দেবী। স্বামীকে প্রযোজনা সংস্থা খোলার জন্য বিক্রি করে দিয়েছিলেন নিজের শেষ সম্বল গয়নাটুকু। চুমকি চৌধুরী জানিয়েছেন যে তার মা একসময় খুব ভালো গান গাইতেন, নিয়েছিলেন নাচের তালিম। এর পাশাপাশি জয়শ্রী দেবী ঘর সাজাতেও খুব ভালবাসতেন। কিন্তু নিজের সংসারের জন্য এক কথায় সবকিছু ত্যাগ করেছিলেন। মেয়ে চুমকি চৌধুরী এবং রিনাকে তিনি নিজের হাতে নাচ শিখিয়েছিলেন। অভিনয়ে কিছু ভুল দেখলে তাদেরকে ধরিয়ে দিতেন জয়শ্রী।
২০০৭ সালে প্রয়াত হন অঞ্জন চৌধুরী। তারপর সন্তানদেরকে আঁকড়ে ধরেছিলেন জয়শ্রী। ২১ শে আগস্ট রবিবারের সন্ধ্যা কেড়ে নিলেন জয়শ্রী দেবীর জীবনকে।
Comments are closed.