‘মৃত্যুদণ্ডে অপরাধ কমে?’ ফাঁসির বিরোধিতা অপর্ণা সেনের! হায়দরাবাদে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা নিয়ে ট্যুইট অভিনেতার
হায়দরাবাদে ধর্ষণ এবং বীভৎস খুনের ঘটনার পর অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে সওয়াল উঠছে দেশজুড়ে। সাধারণ মানুষ তো বটেই সংসদের অভ্যন্তরেও ফাঁসির দাবি উঠেছে। এক ধাপ এগিয়ে অপরাধীদের জনসমক্ষে পিটিয়ে মারার পক্ষে সওয়াল করেছেন রাজ্যসভা সাংসদ তথা অভিনেতা জয়া বচ্চন।
কিন্তু মৃত্যুদণ্ডে কি অপরাধ কমে? জয়া বচ্চন যখন সংসদে দাঁড়িয়ে অপরাধীদের জনসমক্ষে পিটিয়ে মারার সওয়াল করছেন, ঠিক তখনই এই প্রশ্ন তুললেন আরেক অভিনেতা তথা চিত্র পরিচালক অপর্ণা সেন।
ধনঞ্জয় থেকে নির্ভয়া হয়ে আজকের হায়দরাবাদ কাণ্ড। ফাঁসির সাজা দেওয়ার পরও কি নারীঘটিত অপরাধ সামান্য হলেও কমেছে? প্রথম বিশ্বের সমাজ বলে, মৃত্যুদণ্ড দিয়ে অপরাধ কমে না। উল্টে বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করেছেন সমাজবিজ্ঞানীদের একাংশ। মূলত এই পর্যালোচনার উপর নির্ভর করে বিশ্বের কিছু এগিয়ে থাকা দেশে মৃত্যুদণ্ড নিষিদ্ধ হয়েছে। এদেশের বামপন্থী থেকে শুরু করে মানবাধিকার কর্মী কিংবা সমাজবিজ্ঞানীরা মৃত্যুদণ্ডের ধারাবাহিক বিরোধিতা করে এসেছেন। তাঁদের মতে মৃত্যুদণ্ডে অপরাধ তো কমেই না, উল্টে হিংসার জবাব হিংসা দিয়ে দেওয়ার অরাষ্ট্রসুলভ মনোভাব জাহির হয়।
সোমবার রাত পৌনে দশটা নাগাদ একটি ট্যুইট করেন অপর্ণা সেন। তাতে তিনি লেখেন, ডক্টর রেড্ডিকে ধর্ষণ ও খুনের অপরাধীদের সম্ভবত ফাঁসিতে ঝোলানো হবে। স্বাভাবিকভাবে গোটা দেশ ওদের রক্তের জন্য তৃষ্ণার্ত। এটা সবচেয়ে নৃশংস এবং বীভৎস অপরাধের ঘটনা। কিন্তু তারপর কী? তারপর থেকে আর কোনও ধর্ষণের ঘটনা ঘটবে না? ধর্ষণের ঘটনা কমে যাবে?
গোটা দেশের সাধারণ মানুষ যখন হায়দরাবাদ কাণ্ডের অপরাধীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবি তুলছে, তখন অপর্ণা কেন মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করছেন? রাষ্ট্রও কি বদলার মনোভাবের হাওয়ায় গা ভাসাতে পারে, কার্যত মৃত্যুদণ্ডের বিরোধিতা করে এই গুরুপ্তপূর্ণ প্রশ্নই তুলে দিয়েছেন অপর্ণা সেন। ঘুরিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ধর্ষণ ও খুনের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলেও, নারীঘটিত অপরাধ কি শূন্য হয়ে গিয়েছে?
হায়দরাবাদ কাণ্ডের পর অপর্ণা সেনের ট্যুইট সেই পুরনো বিতর্কই ফের উসকে দিল।
Comments are closed.