বুখারির খুনের পিছনে কি লস্কর বা হিজবুল, প্রশ্ন কাশ্মীরে।

রাইজিং কাশ্মীরের সম্পাদক সুজাত বুখারিকে হত্যার ঘটনায় শুক্রবার এক সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ। গ্রেফতার হওয়া ওই ব্যক্তির নাম জুবের কুয়ার্দি। তাকে জিজ্ঞসাবাদ করা হচ্ছে। কাশ্মীরের আই জি স্বয়ম প্রকাশ পানি জানান, বুখারির হত্যাকাণ্ডের তদন্তে একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, বুখারি হত্যার পিছনে পাক জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর ই তৈবা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের নাম উঠে আসছে। জম্মু ও কাশ্মীর ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রাথমিক তদন্তে এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে বলে সূত্রের দাবি। আপাতত সমস্ত দিক খতিয়ে দেখছে পুলিশ। কোনও সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী রাইজিং কাশ্মীরের সম্পাদকের একাধিক সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, পালসার বাইকের মাঝখানে যে বসেছিল তার সঙ্গে মিল রয়েছে লস্কর ই তৈবা জঙ্গি নাভিদ জাটের। কিছুদিন আগেই সে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে শ্রীনগরের এক হাসপাতাল  থেকে পালিয়ে যায়। যদিও জম্মু কাশ্মীর পুলিশ সূত্রে খবর, এসব একেবারেই প্রাথমিক অনুমান।
তবে এই প্রবীণ সাংবাদিককে কেন  হত্যার ছক কষা হল? উপত্যকার প্রবীণ সাংবাদিক এবং রাজনীতিবিদদের বক্তব্য, সুজাত বুখারি ছিলেন বিজেপি-পিডিপি জোট সরকারের মন্ত্রী বাশরত বুখারির ভাই। সেই সম্পর্কের সূত্রে রাইজিং কাশ্মীরের সদ্য নিহত সম্পাদকের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির সম্পর্ক ছিল বেশ ভাল। শুধু তাই নয়, পাক সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও বারবার শান্তির কথা বলেছেন বুখারি। পাকিস্তানের সঙ্গে ট্র্যাক টু আলোচনার অন্যতম মুখ ছিলেন বুখারি। এমন একজনকে ইদের ঠিক আগে নিশানা করতে পারলে মুফতি সরকার এবং শান্তি প্রক্রিয়াতে যথেষ্ট ধাক্কা দেওয়া যাবে।
শুক্রবার এই সাংবাদিকের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় তাঁর বড় হয়ে ওঠার শহর বারামুল্লাতে। প্রবল বৃষ্টি উপেক্ষা করে কয়েক হাজার মানুষ পা মেলান শেষকৃত্যের অনুষ্ঠানে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ এই হত্যাকে কাপুরুষোচিত বলে উল্লেখ করেছেন। জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী মেহেবুবা মুফতি নিহত সাংবাদিকের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী শোকবার্তায় জানান, সুজাত বুখারি একজন সাহসী ও নির্ভীক সাংবাদিক ছিলেন। কাশ্মীরে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছিলেন।
তবে বুখারির খুনের জন্য নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে পাকিস্তান। সে দেশের বিদেশ মন্ত্রকের এক মুখপাত্র জানান, কাশ্মীরে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে রাষ্ট্রসংঘের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই বুখারির খুন অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই খুনের যথার্থ তদন্ত হওয়া উচিৎ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.