দেশে একদিনে নতুন করোনা সংক্রমণ ভেঙে দিয়েছে আগের সমস্ত রেকর্ড। একইসঙ্গে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও ছাপিয়ে গিয়েছে পূর্বের রেকর্ড। ভারতে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। কী অবস্থা বাংলার?
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানাচ্ছে ২ সেপ্টেম্বর, বুধবার বাংলায় নতুন করোনা সংক্রমিত ২৯৭৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় টেস্ট হয়েছে ৪৪,১২০ টি। রাজ্যের সুস্থতার হার ৮৩.৫৩ শতাংশ। এই পরিসংখ্যানই আপাত স্বস্তির কারণ স্বাস্থ্য কর্তাদের। কেন?
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রতিদিন নমুনা পরীক্ষা লক্ষ্যণীয় মাত্রায় বাড়লেও সংক্রমিতে সংখ্যা সেই হারে বাড়ছে না। এ প্রসঙ্গে একটি পরিসংখ্যান দিচ্ছেন তাঁরা। কিছুদিন আগে যখন রাজ্যে দিনে ৩০ থেকে ৩২ হাজার পরীক্ষা হচ্ছিল, তখনই দৈনিক সংক্রমণ ৩ হাজার পেরিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন ৪৪ হাজারের বেশি পরীক্ষাতেও সংক্রমণ ৩ হাজারের নীচে। ফলে নমুনা পরীক্ষার হার ব্যাপক বাড়লেও সেই তুলনায় সংক্রমিত বাড়ছে না, বরং কমছে। পাশাপাশি সুস্থতার হার প্রায় ৮৫ শতাংশ।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত সর্বশেষ তালিকায় দেখা যাচ্ছে, এখনও পর্যন্ত সংক্রমণ শৃঙ্খল ভাঙতে মোটের উপর সফল হয়েছে কলকাতা। যেখানে করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা একটা সময় বাকি রাজ্যের মোট সংক্রমিতের সংখ্যার চেয়েও বেশি ছিল। জুলাই মাসেই কলকাতায় দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা আটশোর ঘরে পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু অগাস্টের শেষে তা গড়ে পাঁচশোর ঘরে। বুধবার কলকাতায় ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত হয়েছেন ৩৯৩ জন। জুলাইয়ের পর এ দিনই প্রথম চারশোর নীচে নামল কলকাতায় সংক্রমিতের সংখ্যা। জুনের শুরুতেও কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা সর্বাধিক ছিল এই কলকাতাতেই। ২ সেপ্টেম্বরের হিসেব বলছে, কলকাতায় এখন মাত্র ৭ টি কনটেইনমেন্ট জোন। রাজ্যে মোট কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা ২৮৫৩। যা চিন্তায় রাখছে স্বাস্থ্য দফতরকে। কারণ সর্বশেষ রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা সর্বাধিক নদিয়া জেলায়। সেখানে রয়েছে ৪৯৬ টি ব্রডবেসড কনটেইনমেন্ট জোন। তারপরেই উত্তর দিনাজপুর। সেখানে কনটেইনমেন্ট জোনের সংখ্যা ৪৫৩। এছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, কোচবিহার, পুরুলিয়ায় রয়েছে ৩০০ টিরও বেশি কনটেইনমেন্ট জোন।
সব মিলিয়ে মহানগর আপাত স্বস্তি দিলেও জেলায় সংক্রমণের রেখচিত্রের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা নবান্নের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Comments are closed.