অবশেষে বিচার, ২০০২ গুজরাত দাঙ্গায় গণধর্ষিতাকে ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে রাজ্যকে নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দীর্ঘ ১৬ বছর পর বিচার পেলেন গুজরাত দাঙ্গার এক গণধর্ষিতা। ২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গায় গণধর্ষণের শিকার হতে হয়েছিল বছর ২১ এর বিলকিস বানোকে। তাঁর তিন বছরের কন্যা সন্তানকে হত্যা করা হয়। দীর্ঘ বিচার প্রণালীর পর, মঙ্গলবার গুজরাত সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, বিলকিস বানোকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০ লক্ষ টাকা, সরকারি চাকরি ও একটি বাড়ি করে দিতে হবে।
২০০২ সালে গোধরা কাণ্ডের পর গুজরাতজুড়ে দাঙ্গা শুরু হয়। ২০০২ সালের ৩ রা মার্চ আহমেদাবাদের রাধিকাপুরের কাছে উন্মত্ত জনতার হাতে প্রহৃত হতে হয়েছিল বিলকিস বানো ও তাঁর পরিবারকে। তাঁর পরিবারের বেশ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়, যাঁদের মধ্যে ছিল বিলকিসের তিন বছরের ছোট্ট মেয়ে সালিহা। বিলকিস বানো গণধর্ষণে মারা গিয়েছে মনে করে, তাঁকে ফেলে যায় ধর্ষকরা।
২০০৮ সালে এই ঘটনায় অভিযুক্ত ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয় বম্বে হাইকোর্ট। যদিও, তদন্তে গাফিলতি ও ভুলপথে চালনায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার ও চিকিৎসক সহ ৭ জনকে বেকসুর খালাস করে দেওয়া হয়। ক্ষতিপূরণ সহ ওই পুলিশ অফিসারদের শাস্তির দাবিতে এরপর সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন বিলকিস বানো। গত মার্চ মাসে সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানিতে বিলকিস বানোকে মাত্র ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করে গুজরাত সরকার। যদিও তা নিতে অসম্মতি প্রকাশ করেন বানো।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ, বিচারপতি দীপক গুপ্তা ও বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ গুজরাত সরকারকে ভর্ৎসনা করে বিলকিস বানোকে ৫০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও সরকারি চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই দাঙ্গার ঘটনার পর থেকে নিজস্ব কোনও থাকার জায়গা নেই নির্যাতিতা বিলকিসের। এই তথ্য জানার পর, বিলকিস বানোর জন্য একটি বাড়ির বন্দোবস্ত করতে গুজরাত সরকার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্যও সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Comments are closed.