মানুষ তো নয়ই, পশুরাও গোমাংস খেতে পারবে না। এমনই দাবি নিয়ে গুয়াহাটি চিড়িয়াখানার সামনে হুলুস্থুল কাণ্ড বাঁধালেন বিজেপি নেতা সত্যরঞ্জন বোরা। তাঁর দাবি, চিড়িয়াখানার বাঘ, সিংহ কাউকেই গোমাংস দেওয়া যাবে না। এজন্য সোমবার গুয়াহাটির চিড়িয়াখানার দরজা আটকে দাঁড়িয়ে থাকেন ওই বিজেপি নেতা ও তাঁর সমর্থকেরা।
সোমবার গুয়াহাটি চিড়িয়াখানার মাংসাশী আবাসিকদের জন্য তখন গাড়ি বোঝাই গোমাংস ঢুকছিল। সেই গাড়ি আটকে সটান দাঁড়িয়ে পড়েন বিজেপি নেতা সত্যরঞ্জন। কিছুতেই তাঁদের সরাতে না পেরে পুলিশের দ্বারস্থ হয় গুয়াহাটি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। তারপর পুলিশ গিয়ে হস্তক্ষেপ করলে চিড়িয়াখানায় গোমাংস নিষিদ্ধ করার দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন সত্যরঞ্জন বোরা ও তাঁর অনুগামীরা। তাঁর কথায়, ‘হিন্দু সমাজে আমরা গরু সংরক্ষণের দিকে গুরুত্ব দিই। কিন্তু চিড়িয়াখানায় গোমাংসই মাংসাশী প্রাণীদের খাওয়ানো হয়। কিন্তু কেন গরু? অন্য কোনও পশুর মাংস কেন দেওয়া হবে না?’ এই প্রশ্ন তুলে নিজেই এক প্রস্তাব পেশ করেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, গুয়াহাটি চিড়িয়াখানায় সম্বর হরিণের সংখ্যা খুব বেড়ে গেছে। বংশবৃদ্ধি আটকানোর জন্য পুরুষ হরিণদের আলাদা করে রাখা হচ্ছে। বোরার দাবি, সম্বর হরিণ ছেড়ে দেওয়া হোক বাঘের খাঁচায়।
পত্রপাঠ প্রস্তাব খারিজ করেছেন ডিভিশনাল ফরেস্ট অফিসার তেজস মারিস্বামী। তিনি জানিয়েছেন, আইন অনুযায়ী চিড়িয়াখানার আবাসিক পশুদের মাংস অন্য মাংসাশী প্রাণীকে খাওয়ানো যায় না। তাছাড়া সম্বর হরিণ বন্যপ্রাণী। বন্যপ্রাণীকে হত্যা করা যায় না। এটা বেআইনি।
ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনসার্ভেশন অফ নেচার এই সম্বর হরিণকে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী বলে ঘোষণা করেছে। ১৯৭২ সালে বন্যপ্রাণ (সুরক্ষা) আইনে এই প্রাণীকে সুরক্ষা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে অসমের বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লা বৈদ্য জানিয়েছেন, মাংসাশী প্রাণীদের পুষ্টির জন্য গোমাংস আবশ্যিক। কেন্দ্রের নির্দেশিকাতেই তা বলা রয়েছে। অনেক চিড়িয়াখানায় মোষের মাংস দেওয়া হয়। অসমে তা পাওয়া যায় না বলেই গোমাংস দেওয়া হয়। যদিও এখনও বাঘের খাঁচায় জ্যান্ত সম্বর ছাড়ার পক্ষেই সওয়াল করছেন বিজেপি নেতা ও তাঁর অনুগামীরা।
Comments are closed.