মিডিয়ায় ছাঁটাই, বেতন কমানোর বিরুদ্ধে মামলায় কেন্দ্র, রাজ্য সহ ১০ সংবাদমাধ্যমকে নোটিস বম্বে হাইকোর্টের

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বিভিন্ন মিডিয়া হাউজে সাংবাদিক ও অসাংবাদিক কর্মীদের ছাঁটাই, বেতন কমানো এবং বিনা বেতনে ছুটিতে পাঠানোর মতো ঘটনার প্রেক্ষিতে কেন্দ্র, রাজ্য সরকার এবং ১০ টি সংবাদমাধ্যমকে নোটিস পাঠাল বম্বে হাইকোর্ট। মহারাষ্ট্র ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস (MUWJ) এবং নাগপুর ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস (NUWJ) এর দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার আদালত ৩ পক্ষকে নোটিস পাঠায়। ৪ সপ্তাহের মধ্যে নোটিসের জবাব দিতে হবে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে।

ভারত সরকার এবং মহারাষ্ট্র সরকার ছাড়াও বম্বে হাইকোর্ট নোটিস পাঠিয়েছে ইন্ডিয়ান নিউজপেপার সোসাইটি, বিদর্ভ ডেইলি নিউজপেপার্স, লোকমত মিডিয়া, টাইমস অফ ইন্ডিয়া/মহারাষ্ট্র টাইমস, দৈনিক ভাস্কর, সকাল মিডিয়া, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, তরুণ ভারত, নব ভারত মিডিয়া গ্রুপ, দেশোন্নতি গ্রুপ এবং পূণ্য নগরী গ্রুপকে।

মহারাষ্ট্রের প্রধান দুই সাংবাদিক সংগঠন জনস্বার্থ মামলায় অভিযোগ করেছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন লকডাউন পর্বে যেন কাউকে ছাঁটাই করা না হয়, বেতন কমানো না হয়। মার্চে কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক এই সংক্রান্ত অ্যাডভাইজারিও জারি করেছিল। কিন্তু সমস্ত নির্দেশিকা উপেক্ষা করে সাংবাদিকদের লাগাতার ছাঁটাই করা হচ্ছে, জোর করে বেতন কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ইস্তফা দিতে জবরদস্তি করা হচ্ছে, এমনকী কাজের শর্তেও বদল করা হচ্ছে। অর্থাৎ স্থায়ী কর্মীও রাতারাতি হয়ে যাচ্ছেন কন্ট্রাকচুয়াল। পিআইএলে আরও বলা হয়েছে, ম্যানেজমেন্ট সাংবাদিকদের হুমকি দিচ্ছে চাকরি খেয়ে নেওয়ার, দুর্গম জায়গায় বদলি করে দেওয়ার।

জনস্বার্থ মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে কীভাবে কয়েকটি সংবাদমাধ্যম সাংবাদিক ও অসাংবাদিক কর্মীদের ছাঁটাই করেছে, কিছু ক্ষেত্রে বেতন কমিয়ে দিয়েছে। তারপরই বম্বে হাইকোর্ট ১০ টি সংবাদমাধ্যমকে নোটিস পাঠানোর নির্দেশ দেয়। মামলাকারী সাংবাদিকদের দুটি সংগঠনের দাবি, সংবাদপত্রের মালিক কিংবা সংবাদমাধ্যমের কর্ণধারদের এই অমানবিক এবং বেআইনি কাজ ভারতের সংবিধানের ১৪, ১৯, ২১ নম্বর ধারার পরিপন্থী।

আবেদনকারী মহারাষ্ট্র ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস (MUWJ) এবং নাগপুর ইউনিয়ন অফ ওয়ার্কিং জার্নালিস্টস (NUWJ) এর বক্তব্য, করোনাভাইরাস অতিমারির মধ্যেও সাংবাদিকরা নিজের বা নিজের পরিজনদের জীবনের পরোয়া না করে কোভিড ওয়ারিয়র্সদের খবর তুলে আনছেন। গোটা দেশ যখন লকডাউনে ঘরবন্দি তখনও তাঁরা অফিসে কিংবা পথে পূর্ণ সময় কাজ করে চলেছেন। এই অবস্থায় ক্ষুদ্র স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সাংবাদিক এবং অসাংবাদিক কর্মীদের উপর জুলুম বন্ধ হওয়া উচিত বলেই মনে করে মহারাষ্ট্রের দুই প্রধান সাংবাদিকদের সংগঠন।

Comments are closed.