নয়া বিপাকে অনিল আম্বানী: প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা ঋণখেলাপির অভিযোগে ৩ চিনা ব্যাঙ্ক মামলা করল রিলায়েন্স কমিউনিকেশনসের বিরুদ্ধে

ফের বিপাকে অনিল আম্বানী। ৬৮ কোটি ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৪ হাজার ৮৫১ কোটি টাকার ঋণখেলাপির অভিযোগে এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তি মুকেশ আম্বানীর ভাই অনিলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করল তিনটি চিনা ব্যাঙ্ক।
ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক অফ চায়না (আইসিবিসি), চায়না ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক এবং এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাঙ্ক অফ চায়না এই তিনটি ব্যাঙ্কের তরফে আর কম কর্ণধার অনিল আম্বানীর বিরুদ্ধে লন্ডন কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ২০১২ সালে সংশ্লিষ্ট চিনের তিনটি ব্যাঙ্ক থেকে ৯২৫.২ মিলিয়ন ডলার ঋণ নেয় অনিল আম্বানীর রিলায়েন্স কমিউনিকেশনস। আইসিবিসি ব্যাঙ্কের আইনজীবীর অভিযোগ, পার্সোনাল গ্যারান্টার হন অনিল আম্বানী নিজেই। কিছুদিন ধরে ঋণ পরিশোধ চললেও, ২০১৭ সালের পর থেকে আর ঋণ শোধের পথে পা দেননি আম্বানী।
যদিও অনিল আম্বানীর দাবি, তিনি নন-বাইন্ডিং পার্সোনাল কমফোর্ট লেটার পাঠালেও, কখনওই নিজের ব্যক্তিগত সম্পত্তিকে যুক্ত  করেননি। আইসিবিসি ব্যাঙ্কের তরফে আদালতে দায়ের করা হলফনামায় বলা হয়েছে, ব্যাঙ্কের প্রাক্তন চেয়ারম্যান জিয়াং জিয়ানপিংয়ের সঙ্গে দেখা করতে ২০১১ সালে বেজিং যান অনিল আম্বানী। ঋণের ব্যাপারে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়। সেখানে লোনের বিনিময়ে আম্বানী বা তাঁর এক সহকারী হাসিত শুক্লা পার্সোনাল গ্যারান্টার হন। ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক লন্ডন আদালতের এই মামলায় চিনের আরও দুই ব্যাঙ্ককে এই মামলায় সাক্ষী হিসেবে হাজির করেছে। বৃহস্পতিবার আদালতে মামলাকারী পক্ষের আর্জি, আম্বানীকে শীঘ্রই সুদ সমেত ঋণ ফেরত দিতে নির্দেশ দিন বিচারপতি ডেভিড ওয়াকসম্যান। অনিল আম্বানী তাঁর সম্পত্তির কোনও হিসেব দেননি বলেও আদালতে অভিযোগ চিনা ব্যাঙ্কের।
একদিকে যখন দাদা মুকেশ আম্বানী নিজের সম্পত্তি বাড়িয়েই চলছেন, ভাই অনিলের একাধিক ব্যবসা তখন ধুঁকছে। সেপ্টেম্বরে প্রকাশিত ব্লুমবার্গের একটি রিপোর্ট বলছে, জুলাই মাসের মধ্যে অনিলের চারটি বড় শিল্প সংস্থাই ১৩.২ বিলিয়ন ডলার ঋণে ডুবে রয়েছে। কয়েক মাস আগে সুইডিশ বহুজাতিক সংস্থা এরিকসন মামলায় অনিলের হয়ে তাঁর দাদা মুকেশ আম্বানী প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে তাঁর জেলযাত্রা আটকেছিলেন। এদিকে কিছুদিন আগে অনিলের আর কম সংস্থাকে দেউলিয়া ঘোষণা করেছে আর ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল (এনসিএলটি)। জুন মাসেই বিলিওনিয়ার লিস্ট থেকে ছিটকে গিয়েছেন অনিল আম্বানী। চিনা ব্যাঙ্কের মামলায় আরও অস্বস্তি বাড়ল আর কম কর্ণধার অনিল আম্বানীর।

 

Comments are closed.