করোনা পরিস্থিতিতে বিশ্ব গাড়ি বাজারে খরা, মে মাসে ব্রিটেনে গাড়ি বিক্রির হার গত বছরের চেয়ে প্রায় ৯০ শতাংশের নীচে চলে গিয়েছে। গাড়ি বাজারে দুর্বিষহ অবস্থা ভারতেও।
করোনার জেরে ১৯৪৪ সালের এপ্রিল মাসের পর গত এপ্রিলে ব্রিটেনে গাড়ি বিক্রির হার সর্বনিম্ন হয়ে গিয়েছিল। মে মাসে সেখান থেকে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবু গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসে ৯০ শতাংশের নীচে নেমে গিয়েছে গাড়ি বিক্রি।
বৃহস্পতিবার ব্রিটেনের সোসাইটি অফ মোটর ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড ট্রেডার্স (SMMT) সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছে, গত মাসে প্রায় ২০ হাজার নতুন গাড়ির অর্ডার দিয়েছেন ক্রেতারা। যেখানে এপ্রিল মাসে এই সংখ্যাটা ছিল মাত্র ৪ হাজার ৩২১। সে জায়গায় গাড়ি বাজার কিছুটা উন্নত হয়েছে বৈকি। কিন্তু ২০১৯ সালের মে মাসের সঙ্গে তুলনা করলে এই বছরের গাড়ি বিক্রির সংখ্যা নেহাতই সামান্য। এসএমএমটি জানাচ্ছে, গত বছরের মে মাসে ব্রিটেনে গাড়ি বিক্রির সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৮৩ হাজার ৭২৪। এজন্য করোনা পরিস্থিতিতে জারি হওয়া লকডাউনকেই দায়ী করছে তারা। টানা দোকান-বাজার বন্ধ থাকার পর সোমবার থেকে ইংল্যান্ডে গাড়ির শো-রুমগুলি খুলেছে। তবে তার আগে এপ্রিল মাসজুড়ে অর্ডার পেয়ে সরাসরি ক্রেতার বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হত। এদিকে করোনা সংক্রমণ এড়াতে লকডাউন জারির ফলে অন্যান্য দেশের মতো ব্রিটেনেরও প্রচুর অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। আপাতত লকডাউন কিছুটা শিথিল হওয়ায় নতুন করে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু হচ্ছে।
এদিকে ভারতের গাড়ি ব্যবসার হাল-ও তথৈবচ। সোমবার মারুতি সুজুকি জানিয়েছে, গত মাসে দেশে গাড়ি বিক্রি কমেছে ৮৮.৯৩ শতাংশ। মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা, হুন্ডাই মোটর এবং হন্ডা কারসের ক্ষেত্রে তা যথাক্রমে ৭৯ শতাংশ, ৮৪ শতাংশ এবং ৯৭ শতাংশ কমেছে। হন্ডার ভারতীয় শাখার তরফে রাজেশ গোয়েল জানান, করোনা পরিস্থিতির জেরে গাড়ি বাজারে এক অভূতপূর্ব সঙ্কট তৈরি হয়েছে। আর মে মাসে ৭১০ টি গাড়ি বিক্রি করা ব্রিটিশ গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা এমজি মোটরসের কর্তা রাকেশ সিদানার বক্তব্য, লকডাউনে কিছু শোরুম বন্ধ ছিল। যন্ত্রাংশের জোগানে ধাক্কা লেগেছে এবং গাড়িঋণে বিভিন্ন শর্ত যুক্ত হওয়ায় বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে।
এরমধ্যে শুধু মাহিন্দ্রার ট্র্যাক্টর বিক্রি ২ শতাংশ বেড়েছে। বর্ষার মরসুম আসছে, তারপর লকডাউন শিথিল হওয়ায় কৃষি প্রধান ভারতে ট্র্যাক্টরের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু বেহাল দশা কাটেনি বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রির। মে মাসে অশোক লেল্যান্ডের বিক্রি কমেছে প্রায় ৯০ শতাংশ। সব গাড়ি নির্মাণ সংস্থাই চলছে লোকসানে।
Comments are closed.