চিনে করোনাভাইরাস সংক্রমণে মৃত্যুর হার ০.৬৬ শতাংশ। তবে ২০০৯ সালের সোয়াইন ফ্লুয়ের চেয়েও করোনার প্রভাব বিশ্বব্যাপী অনেক বেশি হতে পারে বলে জানাল ল্যান্সেটের নয়া গবেষণা।
এপ্রিলের মাসের ১ তারিখ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৮ লক্ষ ৫৩ হাজার, মৃত্যু হয়েছে ৪১ হাজার ৮৮৭ জনের। এর মধ্যে চিনে মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৩১০ এবং আক্রান্ত হয়েছেন ৮২ হাজার ২৯৫ জন মানুষ।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ল্যান্সেটের রিপোর্ট বলছে, একজন করোনা আক্রান্ত রোগীকে গড়ে ২৫ দিন হাসপাতালে রাখা হচ্ছে। কিন্তু এই সময়কালে রোগ লক্ষণ থেকে মৃত্যুর সময়, গড়ে ১৮ দিন! এই গবেষণায় প্রকাশ, করোনায় প্রথম আক্রান্ত দেশ চিনের সব মিলিয়ে সংক্রমণে মৃত্যুর হার ০.৬৬ শতাংশ।
ল্যান্সেটের গবেষণা বলছে, মেনল্যান্ড চিনের ২৪ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু ও ১৬৫ জন যাঁরা করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন, সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, করোনার রোগ লক্ষণ প্রকাশ থেকে মৃত্যুর সময়সীমা হল ১৭.৮ দিন এবং রোগ লক্ষণ দেখা যাওয়ার পর হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাড়া পাওয়ার গড় সময় লাগছে ২৪.৭ দিন।
প্রসঙ্গত, লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের এক গবেষণা আগেই জানিয়েছে, ‘crude fatality ratio’ বা বড় মৃত্যুর হার হল ৩.৬৭ শতাংশ। যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থারও (WHO) মূল বিচার। তবে এই crude rate সংক্রমণে সংক্রমণে মৃত্যু হারের যে গতি তা ভেবে করা হয়নি। এটা আসলে মোট আক্রান্তের সংখ্যার সঙ্গে তুলনা করে কত মৃত্যু হয়েছে তার একটা গড় হিসেব। ল্যান্সেটের গবেষণায় মোট সংক্রমণে মৃত্যু হারের ক্ষেত্রে মাথায় রাখা হয়েছে যে, মোট যত সংখ্যক মানুষ এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারেন, তাঁদের মধ্যে রোগ লক্ষণ প্রথমে দেখা নাও যেতে পারে। এঁরা সরকারি হিসেবের মধ্যে থাকে না বলে দাবি ল্যান্সেটের গবেষণার। তাদের রিপোর্ট বলছে, করোনাভাইরাস ভয়ংকর প্রভাব নির্ভর করে রোগীর বয়স এবং মোট মৃত্যু হারের উপর (করোনা পজিটিভ কেসে মোট কত জনের মৃত্যু হয়েছে)। এই গড় ১.৩৮ শতাংশ হতে পারে বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। ৬০ বছর বয়সী আক্রান্তদের ক্ষেত্রে এই মৃত্যু হার ৬.৪ শতাংশ, ৮০ বছরের উপরে মৃত্যু হার ১৩.৪ শতাংশ। ৬০ এর নীচে করোনা আক্রান্তের মৃত্যুর হার ০.৩২ শতাংশ।
চিনের জনসংখ্যা ও অন্যান্য কিছু বিষয় নির্ণয় করে করোনা আক্রান্ত এই দেশের চূড়ান্ত মৃত্যু হার ১.৩৮ শতাংশ বলে দাবি ল্যান্সেটের রিপোর্টে।
Comments are closed.