কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার চাইছে গোমূত্র এবং গোবর নিয়ে পরীক্ষা করুন বিজ্ঞানী,গবেষকরা। সরকার মনে করছে,গরুর গোবর এবং গোমূত্র বৈজ্ঞানিকভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সেখান থেকে উচ্চমানের শ্যাম্পু, দাঁতের মাজন, মশা মারা ধুপ সহ একাধিক দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, ভোগ্যপণ্য প্রস্তুত করা সম্ভব। এমনকী গোবর অথবা গোমূত্র দিয়ে ক্যান্সার নিরোধক কোনও ওষুধ প্রস্তুত করা যায় কি না সে বিষয়টিও পরীক্ষার মাধ্যমে সামনে আনতে চাইছে কেন্দ্রের সরকার। সম্প্রতি এই সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে কেন্দ্রের বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে। সেখানে বলা হয়েছে, গোমূত্র এবং গোবর নিয়ে সরকার আলাদাভাবে একটি গবেষণামূলক প্রকল্প হাতে নিয়ে তার মাধ্যমে সেগুলি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে সায়েন্টিফিক ইউটিলাইজেশন থ্রু রিসার্চ অগমেন্টেশন প্রাইম প্রোডাক্টস ফ্রম ইন্ডিজেনাস কাউ বা সূত্রা-পিআইসি ইন্ডিয়া। সূত্রের খবর, এর জন্য ইতিমধ্যে ৯৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করলেও এই পরিকল্পনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একাধিক মন্ত্রক। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি মন্ত্রকের পাশাপাশি এই গবেষণা প্রকল্পে যুক্ত থাকছে বায়োটেকনোলজি বিভাগ, ডিপার্টমেন্ট অব সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ, কাউন্সিল অফ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ, কেন্দ্রীয় আয়ুর্বেদিক এবং যোগা মন্ত্রালয়, আয়ুষ মন্ত্রক, কেন্দ্রের অপ্রচলিত শক্তি মন্ত্রক, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচার রিসার্চ এবং ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ। শুক্রবার এই বিষয়ে যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে সেখানে এই সংক্রান্ত প্রস্তাব আহ্বান করা হয়েছে বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের কাছ থেকে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে তৃণমূল স্তরে কাজ করা কোনও সংগঠনও তাদের প্রস্তাব দিতে পারে সরকারকে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এই প্রকল্পে গোমূত্র বা গোবরের কেমিক্যাল গঠন, সেগুলির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা ইত্যাদি যাবতীয় বিষয় নিয়ে গবেষণা করা হবে। সরকার মনে করছে, এর ফলে ক্যান্সারের ওষুধ থেকে ব্যক্তিগত পরিচর্যার বিভিন্ন ভোগ্যপণ্য যেমন তেল, শ্যাম্পু, হেয়ার কন্ডিশনার, প্রভৃতি প্রস্তুত করা সম্ভব কি না, জানা যাবে। এই সমস্ত বিষয়ে নিয়ে সিদ্ধান্তে আসার জন্য ২০১৭ সালে কেন্দ্রীয় সরকার নয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছিল। কীভাবে গোবর ও গোমূত্র নিয়ে কাজ করা যায়, তা নিয়ে বৈজ্ঞানিক গবেষণার ভিত্তিতে একটি রিপোর্ট তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল ওই কমিটিকে। যদিও সেই কমিটির কোনও রিপোর্ট এখনও দিনের আলো দেখেনি।
Comments are closed.