চিন থেকে ব্যবসা গুটিয়ে ভারতে উৎপাদন শুরু করতে চলেছে মোবাইল প্রস্তুতকারী সংস্থা লাভা ইন্টারন্যাশনাল। ভারতে ব্যবসার জন্য আগামী পাঁচ বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে তারা।
জানা গিয়েছে, এই মোবাইল ফোন সংস্থা মোবাইল ডেভেলপিং এবং ম্যানুফ্যাকচারিং আরও বাড়াতে ভারতে বিপুল বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছে। লাভা ইন্টারন্যাশনালের প্রধান হরি ওম রাই জানান, মোবাইল ডিজাইনিং-এর জন্য চিনে তাঁদের ৬০০ থেকে ৬৫০ কর্মচারী কাজ করছেন। সেই বিভাগটি আপাতত ভারতে আসছে। এতদিন চিন থেকে তৈরি মোবাইল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রফতানি করা হত। এবার ভারত থেকে এগুলি যাবে বহু দেশে, জানান লাভা ইন্টারন্যাশনালের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর হরি ওম পুরি।
তাঁর কথায়, ‘আমার স্বপ্ন, ভারত থেকে চিনে মোবাইল রফতানি করা। যদিও এখন ভারত থেকে চার্জার চিনে রপ্তানি করা হয়। আমরা পুরোপুরি ভারত থেকেই আমাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করব। আমরা চাই, আগামী পাঁচ বছরে ভারতে ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে।’
গত এপ্রিল মাসে মোদী সরকার ৪৮ হাজার কোটি টাকার ইনসেন্টিভ সহ তিনটি আলাদা প্রকল্পের কথা ঘোষণা করে। যার লক্ষ্য, ইলেকট্রনিক দ্রব্যের উৎপাদন বাড়ানোর মাধ্যমে ২০২৫ সালের মধ্যে ২০ লক্ষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান করা। সরকারের এই বিজ্ঞপ্তিতে প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেন্টিভ স্কিম (PLI) এর কথা উল্লেখ করা হয়ছে। যার আওতায় ইলেকট্রনিক্স উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি বছরে ৪ থেকে ৬ শতাংশ ইনসেন্টিভ পাবে ইনক্রিমেন্টাল সেলের উপর। আর এ দেশে মোবাইল ফোনের উৎপাদন গত চার বছরে অন্তত আটগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে প্রায় ১৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকার উৎপাদন থেকে ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে পৌঁছেছে ২ লক্ষ কোটি টাকায়। তবে দেশের চাহিদার প্রায় পুরোটাই ডোমেস্টিক প্রোডাকশনের মাধ্যমে মেটাতে হয়।
এদিকে শুধু লাভা নয়, চিনে অবস্থিত আমেরিকার একাধিক সংস্থাকে ভারতে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। ইতিমধ্যেই এক হাজারেরও বেশি ম্যানুফ্যাকচারিং সংস্থার সঙ্গে আলোচনা সেরে ফেলেছে ভারত। কেন্দ্রের নজর রয়েছে মেডিকেল ইকুইপমেন্ট প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলির ওপর। পাশাপাশি, ফুড প্রসেসিং ইউনিট, টেক্সটাইল, লেদার ও অটো পার্টস নির্মাণকারী সংস্থাগুলিকে ভারতে আনতে আগ্রহী মোদী সরকার। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চিন আমেরিকার দ্বন্দ্ব এক্ষেত্রে ভারতকে বাড়তি সুবিধা দিতে পারে বলেও মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
Comments are closed.