পেগাসাস কাণ্ডে কেন্দ্রের উপর আরও চাপ বাড়াল তৃণমূল। আড়িপাতা বিতর্কে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠনে সম্মতি রাজ্য মন্ত্রিসভার। কমিশনের প্রধান হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মদন লকুর এবং কলকাতা হাই কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের নাম জানান মুখ্যমন্ত্রী। সোমবারই বিকেলে দিল্লি সফরে বেরোচ্ছেন মমতা ব্যানার্জি। তার ঠিক আগে দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে পেগাসাস কাণ্ডে তদন্ত কমিশন গড়ার সিদ্ধান্তের তাৎপর্য ভিন্ন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের মধ্যে প্রথম পশ্চিমবঙ্গ কমিশন গঠন করল। কেন্দ্রীয় সরকারকে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, আশা করি আমাদের পদক্ষেপ বাকিদের জাগিয়ে তুলবে।
সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মদন লকুর, কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের নেতৃত্ব তদন্ত কমিশন আড়িপাতা কাণ্ডের তদন্ত করবে। এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
সাংবাদিক বৈঠকে মমতা ব্যানার্জি আরও জানান, রাজ্যের একাধিক রাজনীতিক, সাংবাদিকদের ফোনে আড়িপাতা হয়েছে। রাজ্যের মানুষের স্বার্থেই এই ঘটনার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। প্রসঙ্গত সর্বভারতীয় নিউজ পোর্টাল The Wire এর প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জির ফোনেও পেগাসাস দিয়ে স্নুপ করার চেষ্টা হয়েছিল। বাদ যাননি প্রশান্ত কিশোরও। তারপরই মমতা ব্যানার্জি দাবি করেন, তাঁর ফোনও হ্যাক করা হয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের মতে পেগাসাস ইস্যুতে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করে মোদী-শাহের উপর তদন্ত করার চাপ বাড়াতে কোনও রাস্তা বাদ রাখছেন না তৃণমূল নেত্রী। এই ইস্যুতে খোলাখুলি তৃণমূলের পাশে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসকেও।
এই পরিস্থিতিতে দিল্লি যাওয়ার ঠিক আগে বিশেষ ক্যাবিনেট বৈঠকে পেগাসাস কাণ্ডের বিচারবিভাগীয় তদন্তের ঘোষণার তাৎপর্য বিপুল। এদিন ঘোষণার মঞ্চ থেকে মমতা ব্যানার্জিকে বারবার বলতে হয়, আমি ভেবেছিলাম সংশ্লিষ্ট বিভাগ থেকে তদন্তের নির্দেশ আসবে। কিন্তু সবাই চুপ। তাই দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে বাংলা ফোন ট্যাপিং কাণ্ডের বিচারবিভাগীয় তদন্ত করাবে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, জাস্টিস মদন লকুর এবং জাস্টিস জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য, দু’জনেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মানুষ। আমাদের অনুরোধ, যত দ্রুত সম্ভব আপনারা তদন্তের কাজ শুরু করে দিন।
Comments are closed.