৭৫ বছরে পা দিয়েছে দেশের স্বাধীনতা। কয়েক মাস আগেও সারা দেশজুড়ে মহাসমারোহে স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়েছে। কিন্তু এই উৎসবের আড়ম্বরের মধ্যেই চাপা পড়ে গিয়েছে পান্ডিয়ারাজ বা তাঁর মতো বহু প্রকৃত স্বাধীনতা সংগ্রামীর কথা। তিনি সি এম পান্ডিয়ারাজ। বয়েস ৯৫ বছর। এখনও তামিলনাড়ুর রামানাথপুরমে একটি এক চিলতে ভাড়ার বাড়িতেই থাকেন নেতাজীর আজাদ হিন্দ বাহিনীর এই প্রাক্তন সদস্য।
সেটা ১৯৪৩ সাল। স্বাধীনতার আন্দোলনে উত্তাল গোটা দেশ। আজাদ হিন্দ বাহিনীর নেতৃত্বের ব্যাটন হাতে তুলে নিয়েছেন নেতাজী। ব্রিটিশ বিরোধী লড়াইয়ে প্রবাসী ভারতীয়দেরও যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। যুবক পান্ডিয়ারাজ সে সময়ে তাঁর মায়ের সঙ্গে মালয়েশিয়াতে থাকেন। নেতাজীর আহ্ববানে তিনিও আজাদ হিন্দ বাহিনীতে যোগ দেন। জানান, আজাদ হিন্দ ফৌজের গরিলা বাহিনীর সদস্য ছিলেন তিনি।
সে সময় আইএনএ-কে সাহায্য করছিল জাপান সরকার। পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে থাকা অনেক ভারতীয়ও পান্ডিয়ারাজের মতো নেতাজীর আহ্ববানে সারা দিয়ে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। সেই উত্তাল সময়ে নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে অজস্র প্রবাসী ভারতীয় স্বাধীনতার জন্য ব্রিটিশের বিরুদ্ধে অস্ত্র তুলে নিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই পান্ডিয়ারাজের মতো তামিলনাড়ুরও বাসিন্দা ছিলেন। একটি সাক্ষাৎকারে পান্ডিয়ারাজ জানান, বাহিনীর পরিকল্পনা যখন ব্যর্থ হয়, সিঙ্গাপুর রেডিও থেকে নেতাজী বার্তা পাঠিয়ে সমস্ত সৈনিককে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে বলছিলেন। কিন্তু ততদিন তাঁর মতো অনেকেই ব্রিটিশ বাহিনীর কাছে গ্রেফতার হয়েছেন। তাঁকে ৬ মাস কারাবন্দিও থাকতে হয়।
পান্ডিয়ারাজের অভিযোগ, সরকারের কাছে তাঁর সমস্ত তথ্য রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ ১৮ বছর আবেদন করলেও সরকার তাতে কর্নপাত করেনি। আজাদ হিন্দ বাহিনীর জীবিত সদস্যদের মধ্যে সি এম পান্ডিয়ারাজ অন্যতম। স্বাধীনতার জন্যে লড়াই করা বর্ষীয়ান মানুষটি এখনও একটি স্থায়ী আশ্রয়ের অপেক্ষায় রয়েছেন।
Comments are closed.