লকডাউনে বেকারত্ব বৃদ্ধির ফলে পারিশ্রমিক কমছে শ্রমিকের, শহর ও গ্রামের শ্রমিকের আয়ের ফারাক হ্রাস পেয়েছে, রিপোর্ট CMIE এর
করোনার জেরে কর্মসংস্থান হারিয়েছে লক্ষ লক্ষ মানুষ। পরিযায়ী শ্রমিকরা কাজ হারিয়ে নিজেদের গ্রামে ফরে যাচ্ছেন, তীব্র হচ্ছে বেকারত্ব। এর মধ্যে সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (CMIE) এর সাম্প্রতিক রিপোর্টে প্রকাশ, উচ্চ শ্রম সরবরাহের ফলে পারিশ্রমিক কমছে ভারতের শহরগুলিতে। এর ফলে শহর ও গ্রামীণ ভারতের মধ্যে পারিশ্রমিকের ফারাক কমে আসবে দ্রুত। মঙ্গলবার প্রকাশিত, সিএমআইই-এর রিপোর্ট জানাচ্ছে, কোভিড পরিস্থিতিতে ২৮ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে বেকারত্ব হার আরও বেড়েছে। কমছে শ্রমের দাম। সিএমআইই- এর সাপ্তাহিক রিপোর্ট জানাচ্ছে, শ্রম অংশগ্রহণের হার আগের সপ্তাহের ৪২ শতাংশ থেকে ২৯ জুন শেষ হওয়া সর্বশেষ সপ্তাহে ৪১.৪ শতাংশে এসে ঠেকেছে। আর কর্মসংস্থাবের হার ৩৮.৪ শতাংশ থেকে জুনের শেষ সপ্তাহে নেমে এসেছে ৩৭.৮ শতাংশে।
সিএমআইই সমীক্ষকদের কথায়, পারিশ্রমিক বা মজুরি নির্ধারিত হয় চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যের উপর। বর্তমান সময়ে শ্রমের সরবরাহ চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি। তাই স্বাভাবিকভাবেই কাজের বাজারে পারিশ্রমিক কমে যাচ্ছে। সমীক্ষকদের মত, দীর্ঘদিন কাজকর্ম বন্ধ থাকার পর শহুরে কর্মীরা কাজের সন্ধানে হন্যে হচ্ছেন। রুজি রোজগারহীন হয়ে বাড়িতে বসে থাকা তাঁদের পক্ষে এবার অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাছাড়া শহুরে ভারতে জীবনযাত্রার ব্যয় এবং দারিদ্র্যের হার গ্রামীণ ভারতের চেয়ে অনেক বেশি। এর ফলেই অভিবাসী শ্রমিকদের বাড়বাড়ন্ত শহরগুলিতে। কিন্তু বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটের সময়ে কাজের চাহিদা বাড়লেও সে তুলনায় কাজ কম। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়েই কম পারিশ্রমিকে কাজ করতে রাজি হচ্ছেন অনেকে। সাধারণত গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরে পারিশ্রমিকের হার ৫০ শতাংশ বেশি হলেও এখন সেই ব্যবধান দ্রুত সংকুচিত হচ্ছে বলে সিএমআইই-এর রিপোর্টে প্রকাশ।
সিএমআইই আরও জানাচ্ছে, সামগ্রিক তথ্য বিচার করে দেখা যাচ্ছে, আগের সপ্তাহের তুলনায় সর্বশেষ সপ্তাহে শ্রমিক পরিস্থিতির অবস্থার সামান্য অবনতি সত্ত্বেও, তা এপ্রিল এবং মে মাসের তুলনায় কিছুটা উন্নতির ইঙ্গিত দিয়েছে। গত ৩০ দিনে গ্রামীণ ভারতে বেকারত্বের গড় দাঁড়িয়েছে ১০.৬ শতাংশে এবং শহুরে বেকারত্বের হার ১২.৪ শতাংশ। সবমিলিয়ে ২৯ জুনের শেষে ভারতের বেকারত্বের হার এসে দাঁড়িয়েছে ১১.১ শতাংশে। পাশাপাশি, গ্রামাঞ্চলগুলিতে কেন্দ্রের ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প শুরু হওয়ায় এবং খারিফ শস্য চাষের ফলে সেখানে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির মুখ দেখছে বলে জানাচ্ছে সিএমআইই।
Comments are closed.