টেক ওয়ান
২০০৪ সাল। দেশে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উঠে এল বামেরা। সংসদে সেবার বামফ্রন্টের ৬১ জন সদস্য।
২০০৪ সাল। দেশে অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে উঠে এল বামেরা। সংসদে সেবার বামফ্রন্টের ৬১ জন সদস্য।
টেক টু
২০১৪ সাল। সারা দেশে মোদী ঝড়। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিজেপির। সংসদে বামেরা কমে ১৫।
২০১৪ সাল। সারা দেশে মোদী ঝড়। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা বিজেপির। সংসদে বামেরা কমে ১৫।
মাঝখানে কেটেছে এক দশক। ১০ বছর সময়ের মধ্যে ভারতে রক্তক্ষরণ আরও বেড়েছে মূল ধারার বামপন্থী দলগুলোর। আর ওদিকে দিল্লিতে, প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে গিয়ে বসেছেন নরেন্দ্র মোদী। ২০১৪ কেটে এটা ২০১৯, সাধারণ নির্বাচন চলছে দেশে। খাতায়-কলমে কিংবা মাঠে-ময়দানে, বামেদের অবস্থা তথৈবচ। অথচ ভারতের ভেঙে পড়া বামপন্থী আন্দোলনে আশার ফুলকি দেখতে পাচ্ছে কমিউনিস্ট দেশ চিন।
গত ১৬ ই মে, বৃহস্পতিবার সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদপত্রে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, ভারতে আপাত বিধ্বস্ত বামপন্থী আন্দোলন ফের মাথা তুলে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন জায়গায়, নতুন নতুন সমীকরণকে কেন্দ্র করে। আর আপোস না করে, সেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বামপন্থী মনোভাবাপন্ন কৃষক কিংবা পড়ুয়ারা।
চিনের এই সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ভারতে মূলত তিনটি রাজ্যে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের দাপট ছিল। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে আগেই বামফ্রন্ট সরকারের পতন হয়েছে। সম্প্রতি ত্রিপুরাতেও সিপিএমকে হারিয়ে প্রথমবারের জন্য ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। বামেদের হাতে রয়েছে কেবলমাত্র কেরল। তবে পশ্চিমবঙ্গে পার্টির অবস্থা ক্রমশ খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, আসন সংখ্যার দিক থেকে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম রাজ্য হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের দিকে সরাসরি নিশানা করেছে বিজেপি এবং রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূল প্রভাব ধরে রাখতে মরিয়া। এখানেই প্রতিবেদনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে, মোদীর আমলে দেশজুড়ে হওয়া গণ আন্দোলনগুলোর দিকে। আর সেখানেই আশার আলো দেখতে পাচ্ছে চিনের সংবাদপত্র।
নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসা এবং দেশজুড়ে বামপন্থীদের দুর্বল হয়ে পড়াকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে নারাজ সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। তাদের দাবি, মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দানা বেধেছে একের পর এক কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী আন্দোলন। যার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নেতৃত্ব দিয়েছেন বামপন্থী কৃষক কিংবা ছাত্র সমাজ। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে Communism in India: dead or just waiting for young saviours? শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান কিংবা রাজধানী দিল্লিতে কীভাবে একের পর এক কৃষক আন্দোলন আছড়ে পড়েছে। সেই মিছিলে কত সংখ্যায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ প্রভৃতি। পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে, দেশজুড়ে কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। হায়দরাবাদ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি থেকে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্র বিক্ষোভ চলেছে লাগাতার। কখনও কেন্দ্রীয় নীতি আবার কখনও পুলিশি অত্যাচার, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বারবার গর্জে উঠেছে ভারতের ছাত্র সমাজ। এই প্রেক্ষিতে চিনের সংবাদপত্রটি কথা বলেছে, দেশের তরুণ ছাত্র নেতা শেহলা রশিদের সঙ্গে। জেএনইউ-এর প্রাক্তনী শেহলা কানহাইয়া কুমার, জিগনেশ মেবানির নাম করে জানিয়েছেন, দেশের বাম আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছেন এই দুজন। শেহলার দাবি, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বামপন্থা হয়ে উঠেছে আরও বেশি মানুষের, আরও বেশি করে মূলধারার। ভারতের বামপন্থীরা এদেশের জাতপাতকে বুঝতে পারেননি, এই সমালোচনা শিরোধার্য করেই একদা সিপিআইএমএল-লিবারেশনের ছাত্র সংগঠনের নেত্রী শেহলা জানাচ্ছেন, আজকের বামপন্থা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে দলিতের অধিকারের সপক্ষে। ভারতের জাত ব্যবস্থাকে আজকের বামপন্থা আত্মস্থ করেছে বলেও দাবি শেহলার। আর এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ জিগনেশ মেবানি নিজে, জানিয়ে দেন শেহলা রশিদ। কার্যত শেহলার মন্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি করছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর মতে, এ হল নীল আকাশে লাল তারা (লাল বামপন্থা এবং নীল আম্বেডকরবাদী এবং দলিতদের লড়াইয়ের প্রতীক)।
সিপিএমের কৃষক সংগঠন সারা ভারত কৃষক সভার যুগ্ম সম্পাদক তথা জেএনইউয়ের প্রাক্তন ছাত্র সংসদ সভাপতি বিজু কৃষ্ণণ চিনের সংবাদপত্রের সাংবাদিককে বলছেন, লাগাতার কৃষক আন্দোলন এবং ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এই মুহূর্তে সিপিএম-সহ বামপন্থীরা রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্রে ভালো জায়গায় আছে। এই রাজ্যগুলোতে বামপন্থীদের পায়ের তলার জমি ক্রমশ শক্ত হচ্ছে বলে ইঙ্গিত প্রতিবেদনে।
নতুন নতুন জায়গায় বামপন্থীদের লাগাতার আন্দোলন এবং ভারতবর্ষের জাতি ব্যবস্থাকে আত্মস্থ করার মধ্যে দিয়ে বামপন্থীরা দেশের রাজনীতিতে ফের প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাবেন কিনা তা ভিন্ন প্রশ্ন, কিন্তু দেশের বামপন্থী গণআন্দোলনে তারুণ্যের সঙ্গে কৃষক সমাজের সার্বিক অংশগ্রহণ, চিনের সংবাদপত্র একে আশার ফুলকি হিসেবেই দেখছে।
গত ১৬ ই মে, বৃহস্পতিবার সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদপত্রে এই সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে লেখা হয়েছে, ভারতে আপাত বিধ্বস্ত বামপন্থী আন্দোলন ফের মাথা তুলে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন জায়গায়, নতুন নতুন সমীকরণকে কেন্দ্র করে। আর আপোস না করে, সেই লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন বামপন্থী মনোভাবাপন্ন কৃষক কিংবা পড়ুয়ারা।
চিনের এই সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, ভারতে মূলত তিনটি রাজ্যে সিপিএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্টের দাপট ছিল। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে আগেই বামফ্রন্ট সরকারের পতন হয়েছে। সম্প্রতি ত্রিপুরাতেও সিপিএমকে হারিয়ে প্রথমবারের জন্য ক্ষমতা দখল করেছে বিজেপি। বামেদের হাতে রয়েছে কেবলমাত্র কেরল। তবে পশ্চিমবঙ্গে পার্টির অবস্থা ক্রমশ খারাপ থেকে খারাপতর হচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, আসন সংখ্যার দিক থেকে ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম রাজ্য হওয়ায় পশ্চিমবঙ্গের দিকে সরাসরি নিশানা করেছে বিজেপি এবং রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূল প্রভাব ধরে রাখতে মরিয়া। এখানেই প্রতিবেদনে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণভাবে ইঙ্গিত করা হয়েছে, মোদীর আমলে দেশজুড়ে হওয়া গণ আন্দোলনগুলোর দিকে। আর সেখানেই আশার আলো দেখতে পাচ্ছে চিনের সংবাদপত্র।
নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসা এবং দেশজুড়ে বামপন্থীদের দুর্বল হয়ে পড়াকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখতে নারাজ সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট। তাদের দাবি, মোদী ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দানা বেধেছে একের পর এক কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী আন্দোলন। যার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নেতৃত্ব দিয়েছেন বামপন্থী কৃষক কিংবা ছাত্র সমাজ। সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টে Communism in India: dead or just waiting for young saviours? শীর্ষক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান কিংবা রাজধানী দিল্লিতে কীভাবে একের পর এক কৃষক আন্দোলন আছড়ে পড়েছে। সেই মিছিলে কত সংখ্যায় সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ প্রভৃতি। পাশাপাশি উল্লেখ করা হয়েছে, দেশজুড়ে কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। হায়দরাবাদ সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি থেকে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়, ছাত্র বিক্ষোভ চলেছে লাগাতার। কখনও কেন্দ্রীয় নীতি আবার কখনও পুলিশি অত্যাচার, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে বারবার গর্জে উঠেছে ভারতের ছাত্র সমাজ। এই প্রেক্ষিতে চিনের সংবাদপত্রটি কথা বলেছে, দেশের তরুণ ছাত্র নেতা শেহলা রশিদের সঙ্গে। জেএনইউ-এর প্রাক্তনী শেহলা কানহাইয়া কুমার, জিগনেশ মেবানির নাম করে জানিয়েছেন, দেশের বাম আন্দোলনের মুখ হয়ে উঠেছেন এই দুজন। শেহলার দাবি, দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে বামপন্থা হয়ে উঠেছে আরও বেশি মানুষের, আরও বেশি করে মূলধারার। ভারতের বামপন্থীরা এদেশের জাতপাতকে বুঝতে পারেননি, এই সমালোচনা শিরোধার্য করেই একদা সিপিআইএমএল-লিবারেশনের ছাত্র সংগঠনের নেত্রী শেহলা জানাচ্ছেন, আজকের বামপন্থা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে দলিতের অধিকারের সপক্ষে। ভারতের জাত ব্যবস্থাকে আজকের বামপন্থা আত্মস্থ করেছে বলেও দাবি শেহলার। আর এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ জিগনেশ মেবানি নিজে, জানিয়ে দেন শেহলা রশিদ। কার্যত শেহলার মন্তব্যেরই পুনরাবৃত্তি করছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। তাঁর মতে, এ হল নীল আকাশে লাল তারা (লাল বামপন্থা এবং নীল আম্বেডকরবাদী এবং দলিতদের লড়াইয়ের প্রতীক)।
সিপিএমের কৃষক সংগঠন সারা ভারত কৃষক সভার যুগ্ম সম্পাদক তথা জেএনইউয়ের প্রাক্তন ছাত্র সংসদ সভাপতি বিজু কৃষ্ণণ চিনের সংবাদপত্রের সাংবাদিককে বলছেন, লাগাতার কৃষক আন্দোলন এবং ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে এই মুহূর্তে সিপিএম-সহ বামপন্থীরা রাজস্থান, হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্রে ভালো জায়গায় আছে। এই রাজ্যগুলোতে বামপন্থীদের পায়ের তলার জমি ক্রমশ শক্ত হচ্ছে বলে ইঙ্গিত প্রতিবেদনে।
নতুন নতুন জায়গায় বামপন্থীদের লাগাতার আন্দোলন এবং ভারতবর্ষের জাতি ব্যবস্থাকে আত্মস্থ করার মধ্যে দিয়ে বামপন্থীরা দেশের রাজনীতিতে ফের প্রাসঙ্গিকতা ফিরে পাবেন কিনা তা ভিন্ন প্রশ্ন, কিন্তু দেশের বামপন্থী গণআন্দোলনে তারুণ্যের সঙ্গে কৃষক সমাজের সার্বিক অংশগ্রহণ, চিনের সংবাদপত্র একে আশার ফুলকি হিসেবেই দেখছে।
Related Posts
Comments are closed.