কে হবে বিশ্বের সুপার পাওয়ার, কার থাকবে বিশ্ব নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা, কে শাসন করবে বিশ্ব অর্থনীতি এই নিয়ে মহাশক্তিধর দুই রাষ্ট্র চিন ও আমেরিকার দ্বন্দ্ব সুপ্রাচীন। আন্তর্জাতিক রাজনীতি হোক বা অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ কায়েমের চেষ্টা বা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কেউ কাউকে এক চুলও ছেড়ে কথা বলে না এই দুই মহা শক্তিধর রাষ্ট্র। এবার তাদের বিবাদের নতুন বিষয় সামনে এসেছে। তা হল করোনা ভাইরাস। কোথা থেকে কী ভাবে উৎপত্তি হল এই মারণ ভাইরাসের? তা নিয়ে নজিরবিহীন তরজায় মেতেছে দুই দেশ। করোনা নিয়ে তাদের তির পরস্পরের বিরুদ্ধে।
আমেরিকার অভিযোগ চিনের উহান প্রদেশেই এই ভাইরাসের উৎপত্তি হয়েছে। এর পিছনে চিনের কোনও গোপন লক্ষ্য ছিল, উল্টে তারাই ফেঁসে গিয়েছে। উহান থেকে এই ভাইরাস কীভাবে গোটা বিশ্বে ছড়াল তা নিতেও প্রশ্ন তুলেছে ট্রাম্প প্রশাসন। অন্যদিকে চিনের দাবি, আমেরিকাই এই ভাইরাসের জন্মদাতা। এবং এই মহামারির জন্য তারাই দায়ি।
ট্রাম্প প্রশাসনের তরফ থেকে যখন দাবি করা হচ্ছে শি জিনপিং সরকারের দায়িত্বহীনতার জন্যই উহানে ব্যাপক হারে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়েছে।
তখন একটি ভিডিও প্রকাশ করে পাল্টা ওয়াশিংটনকে তোপ দেগেছে বেজিং। চিনা বিদেশমন্ত্রক বলেছে, আগে নিজের ঘর সামলাক আমেরিকা। সারা বিশ্ব যখন করোনা আতঙ্কে ভুগছে তখন প্রমাণ ছাড়া এভাবে কাউকে দোষারোপ করা যায় না। শুক্রবার, চিনা বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র লিজিয়ান ঝাও বলেছেন, “আমেরিকাই এই ভাইরাসের জন্ম দিয়েছে। মার্কিন সেনা উহানে করোনা ভাইরাস নিয়ে এসেছে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ আমেরিকায় আগেই ছড়িয়েছিল। কিন্তু হোয়াইট হাউস তা চাপা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়েছে।” নিজের দাবির পক্ষে যে ভিডিও পোস্টও করেছেন ঝাও সেখানে দেখা যাচ্ছে, জনৈক মার্কিন স্বাস্থ্য আধিকারিক বলছেন, দেশে ৩.৪ কোটি মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জা আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। চিনের দাবি এত মৃত্যুর কথা বেমালুম চেপে গিয়েছে আমেরিকা। চিনের প্রশ্ন, কী করে মার্কিন মুলুকে এত মৃত্যু হল? মৃতরা করোনা আক্রান্ত ছিল কিনা ভিডিওটি শেয়ার করে তাও জানতে চেয়েছে বেজিং।
চিনের দাবি, করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশ্বজুড়ে যখন চিনের প্রশংসা করা হচ্ছে, তখন মার্কিন প্রশাসন নিজেদের ব্যর্থতা ঝেড়ে ফেলতে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপাতে চাইছে। মার্কিন প্রশাসনের উচিত সময় নষ্ট না করে করোনা মোকাবিলায় সক্রিয় হওয়া। অন্যকে দোষারোপ না করে এই সঙ্কটের সময় আমেরিকার উচিত সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, মনে করছে বেজিং।
Comments are closed.