Coronavirus in India: কোন কোন খাদ্য থেকে ছড়ায় এই মারণ রোগ, কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

করোনাভাইরাস সংক্রমণের আশঙ্কায় বিধ্বস্ত দেশের পোল্ট্রি শিল্প, ডিম থেকে মুরগি মাংস থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে ক্রেতারা। চাপে পড়ে কোথাও মাত্র ৫০ টাকা কেজিতে বিকোচ্ছে মুরগির মাংস, কোথাও আবার মাংস কিনলে ফ্রি দেওয়া হচ্ছে পেঁয়াজ। কোথাও আবার  কিন্তু চিকিৎসক ও বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন? ডিম, মুরগির মাংস কিংবা পাঁঠার মাংস থেকে করোনা সংক্রমণ হতে পারে?
চিনের উয়াহান প্রদেশকে করোনাভাইরাসের প্রাণকেন্দ্র বলা হচ্ছে। সেখানকার সি-ফুড বা বাদুড়ের মাংস থেকে করোনা সংক্রমণের কথা উঠে আসায় ভারতেও মাংস, ডিম ইত্যাদি আমিষ খাবার থেকে নিরাপদ দূরত্ব তৈরি করছে মানুষ। যদিও সি-ফুড, মাংস থেকে করোনা ছড়াচ্ছে, সেই তত্ত্ব এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।

 

কী বলছে কেন্দ্রীয় সরকার?
ভারতে মুরগি, পাঁঠার মাংস থেকে করোনা ছড়ানোর খবরের কোনও ভিত্তি নেই বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। শুক্রবার খোদ কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে, ডিম, মুরগির মাংস, মাটন ও সি-ফুড থেকে করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছে, এমন কোনও গুজবে কান দেবেন না। কেন্দ্রীয় পশুপালন, ডেয়ারি ও মৎস্য দফতরের মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ বলেন, ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন ফর এনিমেল হেলথ (ওআইই) থেকে দেশের খাদ্য সুরক্ষা নিয়ামক এফএসএসএআই, সবাই জানিয়েছে কোনও প্রাণী থেকে মানব দেহে করোনাভাইরাস ছড়াচ্ছে এমন কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মেলেনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আরও বলেন, শুধু গুজুবের উপর নির্ভর করে পোল্ট্রি শিল্পের উপর নির্ভরশীল কৃষক, ব্যবসায়ীরা বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছেন। মানুষের কাছে আমার আবেদন এসব গুজবের ফাঁদে পড়বেন না।
কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে গত ফেব্রুয়ারি মাসে যখন প্রথমবার ভারতে করোনা আতঙ্ক ছড়িয়েছিল, নির্দেশিকায় পরিষ্কার বলা হয়েছে পোল্ট্রি জাত খাবার সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং করোনাভাইরাসে প্রভাবের কোনও খবর নেই। ব্রয়লার মুরগিতে করোনা ছড়াচ্ছে, একে স্রেফ গুজব বলে উড়িয়ে দেয় পশুপালন, ডেয়ারি ও মৎস্য মন্ত্রক। পশুপালন দফতরের কমিশনার প্রবীন মালিক পোল্ট্রি ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ার পরামর্শকারী বিজয় সার্দানার এক প্রশ্নের উত্তরে জানান, বিশ্বের কোথাও পোল্ট্রি থেকে করোনাভাইরাস ছড়ানোর কোনও খবর পাওয়া যায়নি। যদিও ভারতে স্রেফ গুজবেই কার্যত ধস নেমেছে পোল্ট্রি শিল্পে। করোনা আতঙ্কে পাইকারি বাজারে মুরগির দাম প্রায় ৭০ শতাংশ নেমে যাওয়ায় পোল্ট্রি সেক্টরে একদিনে আনুমানিক ২ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।

কী বলছেন চিকিৎসক ও গবেষকরা?
বিশ্বের তাবড় তাবড় চিকিৎসক বিজ্ঞানীরাও সেই একই কথা বলছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, আমিষাশীরা নির্ভয় ও নির্দ্বিধায় ডিম, মাছ, মাংস খেতে পারেন। শুধু একটা বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে মাংস যেন সুসিদ্ধ করে রান্না করা হয়। এমনকী গৃহপালিত পশু থেকেও করোনা ছড়ানোর খবরের কোনও বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।
চিকিৎসক বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা ছড়াচ্ছে মানুষের ‘ফিজিক্যাল কনটাক্ট’ থেকে। এর সঙ্গে রেড মিট কিংবা পোল্ট্রির কোনও সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়নি। পাশাপাশি, করোনাভাইরাস রুখতে রসুন, মারিজুয়ানা ইত্যাদি ব্যবহারের কথাও আর একটা গুজব বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা। ‘গাঁজাই করোনাভাইরাসের উপশমকারী, বিস্মিত গবেষকরা’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে যাওয়া এমন হাজারো ভুয়ো পোস্ট মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস নিয়ে অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করছেন গবেষকরা। তাঁদের কথায়, করোনাভাইরাস হল একটি ভাইরাল অসুখ, ব্যাকটেরিয়াল নয়। তাই করোনাভাইরাসের প্রতিষেধক হিসেবে রসুন অথবা মারিজুয়ানায় থাকা অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়ালের কোনও সম্পর্ক নেই।

Comments are closed.