প্রতিদিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশেই বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। সংক্রমণ এড়াতে বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে অফিস কর্মীদের। এই মারণ ভাইরাসের আশঙ্কায় অন্তত ৫৬ টি দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রায় ৫০ কোটি পড়ুয়ার স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে একটি রিপোর্টে জানাল ইউনেস্কো।
সোমবার ইউনাইটেড নেশনস এডুকেশনাল, সায়েন্টিফিক অ্যান্ড কালচারাল অর্গানাইজেশন (ইউনেস্কো) একটি রিপোর্ট পেশ করে জানায়, করোনাভাইরাস আতঙ্কে ৫৬ টি দেশ ছাড়াও আরও ১৭ টি জায়গায় বন্ধ হওয়ার মুখে পড়াশোনা। ইউনেস্কোর অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর জেনারেল ফর এডুকেশন স্টেফানিয়া গিয়ান্নিনি বলেন, এই মুহূর্তে এক অভাবনীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে আমরা। একটার পর একটা দেশে পঠনপাঠন বন্ধ রাখা হচ্ছে শুধু একটা মারণ ভাইরাসের ভয়ে। তাই আমাদের একত্রে এই সমস্যা মোকাবিলা করা দরকার। সেই সঙ্গে শিক্ষাদান যাতে ব্যাহত না হয় তার একটা সুষ্ঠু ব্যবস্থাও করা প্রয়োজন।
গত সপ্তাহে প্রকাশিত ইউনেস্কোর আর একটি রিপোর্ট বলছে, বিশ্বের প্রতি পাঁচজন শিক্ষার্থীর মধ্যে একজন করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল যাওয়া বন্ধ রেখেছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এই পরিসংখ্যানটা প্রতি চারজনে একজন। ইউনেস্কো যখন এই রিপোর্ট প্রকাশ করে, তখন বিশ্বের মাত্র ১৫ টি দেশ পুরোপুরি এবং ১৪ টি দেশ আংশিকভাবে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। যা ৩৬ কোটি ৩০ লক্ষ পড়ুয়ার পড়াশোনাকে প্রভাবিত করেছে। এক সপ্তাহের মধ্যে সেই প্রভাবিত দেশের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৫৬ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি।
এই মুহূর্তে ১৪০ টি দেশ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এবং বিশ্বব্যাপী ১ লক্ষ ৫৩ হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া গিয়েছে। আর ৫০ কোটির বেশি পড়ুয়ার স্কুল যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র রিপোর্ট অনুযায়ী, কোভিড-১৯ এর আক্রমণে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ জন।
করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশগুলির সরকার প্রতিষেধকবিহীন এই রোগের জন্য সচেতনতার উপর জোর দিচ্ছে। তাই এতগুলো দেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
ভ্রমণেও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বিভিন্ন দেশ। বড় জমায়েত একেবারেই এড়িয়ে চলতে বলা হচ্ছে। তাবড় তাবড় বহুজাতিক সংস্থা কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছে। অতিমারি করোনাভাইরাসে বিধ্বস্ত বিশ্বঅর্থনীতি থেকে মানুষের দৈনন্দিন কাজকর্ম। ভয়, আশঙ্কা ও উদ্বেগের মধ্যে কাজ করতে হচ্ছে মানুষকে।
Comments are closed.