ভারভারা রাওসহ মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেফতারি নিয়ে পুলিশের সাংবাদিক বৈঠকের সমালোচনায় বম্বে হাইকোর্ট, নিন্দায় শিবসেনাও

ভিমা-কোড়েগাঁও এর ঘটনায় মাওবাদীদের সঙ্গে যোগ রয়েছে এবং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে গত মঙ্গলবার বিশিষ্ট কবি ভারবারা রাওসহ পাঁচ মানবাধিকার কর্মীকে গ্রেফতারির ঘটনায় দেশজোড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল মহারাষ্ট্র পুলিশকে। এবার এই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করার জন্য মহারাষ্ট্র পুলিশের কড়া সমালোচনা করল বম্বে হাইকোর্ট। সোমবার বম্বে হাইকোর্ট পুলিশের সমালোচনা করে বলেছে, বিচারাধীন একটি মামলা নিয়ে কী করে সাংবাদিক বৈঠক করতে পারে তারা? উল্লেখ্য, এই গ্রেফতারির প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়েছে, যার পরবর্তী শুনানি ৬ সেপ্টেম্বর। এই মামলার প্রেক্ষিতে শীর্ষ আদালন ইতিমধ্যেই মহারাষ্ট্র পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে, ধৃতদের জেলে রাখা যাবে না, তাঁদের গৃহবন্দি রাখতে হবে।
ভারভারা রাওসহ মানবাধিকার কর্মীদের গ্রেফতারির ঘটনায় সমালোচনা বাড়ছে দেখে, গত শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করেন মহারাষ্ট্র পুলিশের এডিজি। সেখানে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করার পাশাপাশি কী কী প্রমাণের ভিত্তিতে এই সমাজকর্মীদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাও জানান তিনি। প্রকাশ্যে একটি চিঠিও পড়ে শোনান। যেখানে এক মাওবাদী নেতার সঙ্গে পূর্বে গ্রেফতার আরও এক সমাজকর্মীর চিঠি চালাচালি হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন। এই সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে প্রশ্ন তুলেই বম্বে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন ভিমা-কোরেগাঁও এর ঘটনায় আক্রান্ত জনৈক সতীশ গায়কোওয়াড় নামে এক ব্যক্তি। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন বম্বে হাইকোর্ট সমালোচনা করেছে পুলিশের।
এদিকে সোমবার দলীয় মুখপত্রে মহারাষ্ট্র পুলিশের সমালোচনা করেছে শিবসেনাও। ধৃতরা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর কায়দায় নরেন্দ্র মোদীকে হত্যা এবং সরকার ফেলার চক্রান্ত করেছিলেন বলে দাবি করেছে পুলিশ। যার প্রেক্ষিতে শিবসেনার মুখপত্র ‘সামনা’য় লেখা হয়েছে, এই গ্রেফতারির পেছনে পুলিশ যা যুক্তি দিচ্ছে তা হাস্যকর। রাজীব গান্ধীর সঙ্গে নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার চক্রান্তের যে তুলনা টানা হচ্ছে তা নিয়ে শিবসেনার কটাক্ষ, ‘রাজীব গান্ধী ও ইন্দিরা গান্ধী নির্ভীক প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। প্রাণ সংশয় আছে জেনেও তাঁরা এগিয়ে গিয়েছিলেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর সেই সাহস দেখানোর ক্ষমতা নেই। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা বেষ্টনী এখন এতই কড়া যে, তাঁর মাথার উপর দিয়ে পাখিও উড়তে পারে না।’ শিবসেনার মতে, সরকার ফেলতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াই যথেষ্ট, তার জন্য খুনের প্রয়োজন পড়ে না। শিবসেনার মতে, এরকম বোকা বোকা মন্তব্য না করে পুলিশের উচিত চুপ থাকা, আর মহারাষ্ট্র সরকারের উচিত রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশকে ব্যবহার না করে তাঁদের মুখে লাগাম পরানোর ব্যবস্থা করা।

Comments are closed.